বেগুন চাষের আগে জানতে হবে সার প্রয়োগ পদ্ধতি,নাহলে বাড়তে পারে ক্ষতির আশঙ্কা

বেগুন সবজি হিসেবে সুস্বাদু। এর পুষ্টিগুণও মন্দ নয়। প্রায় সারা বছরই চাষ করা যায় এই সবজি। দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আর্থিক স্বচ্ছলতা আনা সম্ভব।

KJ Staff
KJ Staff
বেগুন। নিজেস্ব চিত্র।

বেগুন সবজি হিসেবে সুস্বাদু। এর পুষ্টিগুণও মন্দ নয়। প্রায় সারা বছরই চাষ করা যায় এই সবজি। দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আর্থিক স্বচ্ছলতা আনা সম্ভব। বেগুন পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের একটি অন্যতম মুখ্য সবজি যার চাহিদা সারাবছরই বাজারে রয়েছে। অনেক কৃষকই বেগুন চাষ করে ভালো অর্থ উপার্জন করছেন। তবে, অনেক কৃষকের বেগুন চাষে সমস্যাও দেখা দিচ্ছে|

বীজতলা তৈরি ও পরিচর্যা

  • একক বীজতলা বা হাগোর সাধারণতঃ এক মিটার চওড়া ও তিন মিটার লম্বা হবে। জমির অবস্থা ভেদে দৈর্ঘ্য বাড়ানো কমানো যেতে পারে। প্রয়োজনে বড় জমিকে ভাগ করে এভাবে একাধিক বীজতলা তৈরি করা যেতে পারে।

  • মাটি, বালি ও পঁচা গোবর সার বা কম্পোস্ট মিশিয়ে বীজতলার মাটি তৈরি করতে হয়। মাটি উর্বর হলে রাসায়নিক সার না দেয়াই ভালো। উর্বরতা কম হলে প্রতি হাপোরে ১০০ গ্রাম টিএসপি সার মিশাতে হবে বীজ র অন্তত এক সপ্তাহ আগে।

  • বীজতলায় সারি করে বা ছিটিয়ে বীজ বপন করা যায়, তবে সারিতে বপন করা উত্তম। সারিতে বপনের জন্য প্রথমে নির্দিয় দূরত্বে (৪ সেমি) কাঠি দিয়ে ক্ষুদ্র নালা তৈরি করে তাতে বীজ ফেলে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

  • চারা গজানোর পর থেকে ১০-১২ দিন পর্যন্ত হালকা ছায়া দ্বারা অতিরিক্ত সূর্যতাপ থেকে চারা রক্ষা করা প্রয়োজন)।

  • জল সেচ একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিচর্যা তবে বীজতলার মাটি দীর্ঘ সময় বেশী ভেজা থাকলে অঙ্কুরিত চারার রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

  • জমিতে চারা লাগানোর পূর্বে মূল বীজতলা থেকে তুলে দ্বিতীয় বীজতলায় সবজি চারা রোপণের পদ্ধতি অনেক দেশেই চালু আছে। এ পদ্ধতিকে সবজি চারার দ্বিতীয় স্থানান্তরকরণ পদ্ধতি বলে।

  • দেখা গেছে ১০-১২ দিনের চারা দ্বিতীয় বীজতলায় স্থানান্তরিত করা হলে চারার শিকড় বিস্তৃত ও শক্ত হয়, চারা অধিক সবল ও তেজী হয়।

  • চারা গজানোর ১০-১২ দিন পর বীজতলায় প্রয়োজন মত দূরত্ব ও পরিমাণে চারা রেখে অতিরিক্ত চারাগুলি যত্ন সহকারে উঠিয়ে দ্বিতীয় বীজতলায় সারি করে রোপণ করলে মূল্যবান বীজের সাশ্রয় হবে।

  • লাগানোর পর হালকা জল দিতে হবে এবং সৃষ্টির জল ও প্রখর রোদ থেকে রক্ষার জন্য পলিথিন বা চাটাই দ্বারা ঢেকে দিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ ধানের ক্ষতিকারক পোকা সম্পর্কে জেনে নিন ফসল ভালো থাকবে

সার প্রয়োগ পদ্ধতি

  • গোবর বা কম্পোস্ট সারের পরিমাণ জমির উর্বরতার উপর নির্ভর করে। চারা লাগানোর আগে জমিতে সবুজ সার চাষ করতে পারলে বা গোবর/ কম্পোস্ট নিলে ভাল হয়। শেষ চাঘের সময় সবটুকু গোবর বা কম্পোস্ট ও টিএসপি সার এবং ৫০ কেজি এমপি সার জমিতে সমানভাবে ছিটিয়ে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।

  • সম্পূর্ণ ইউরিয়া ও বাকী এমপি সার ৫টি সমান কিস্তিতে যথাক্রমে চারা লাগানো ১৫ দিন পর, ফুল ধরা আরম্ভ হলে, ফল ধরা আরম্ভ হলে, ফল আহরণের সময় ২ বার সমভাবে প্রয়োগ করতে হবে।

  • জমিতে বোরনের অভাব থাকলে বোরাক্স/ বোরিক এসিড ১০ কেজি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে জমিতে সমভাবে ছিটিয়ে আলগা ভাবে কুপিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হয়।

আরও পড়ুনঃ অধিক ফলন পেতে রোপণ পদ্ধতিতে আমন ধানের চাষ করুন,শিখে নিন পদ্ধতি

আগাছা ব্যবস্থাপনা

জমিকে প্রয়োজনীয় নিড়ানী দিয়ে আগছামুক্ত রাখতে হবে।

সেচ

চারা রোপণের ৩-৪ দিন পর পর্যন্ত হালকা সেচ ও পরবর্তীতে প্রতি কিস্ত্রি সার প্রয়োগের পর জমিতে সেচ দিতে হয়। গ্রীষ্ম ও শীত মৌসুমে চাষের জন্য খন ঘন সেচের প্রয়োজন হয়। বর্ষা মৌসুমে তেমন একটা সেচের প্রয়োজন হয় না। বেগুন গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। বেডের দুপাশের নালা দিয়ে জমিতে সেচ দেয়া সুবিধাজনক। নালায় সেচের পানি বেশীক্ষণ ধরে রাখা যাবে না, গাছের গোড়া পর্যন্ত মাটি ভিজে গেলে নালার পানি ছেড়ে দিতে হবে। খরিপ মৌসুমে জমিতে পানি যাতে না জমে সেজন্য পানি নিষ্কাশনের জন্য জমির চারপাশে নালা রাখতে হবে। সেচ অথবা বৃষ্টির অতিরিক্ত পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য নালা পরিমিত চওড়া (৩০-৪০ সেমি) এবং এক দিকে মৃদু ঢালু হওয়া বাঞ্চনীয়।

Published On: 05 February 2024, 05:52 PM English Summary: eggplant-cultivation-fertilizer-application-method

Like this article?

Hey! I am KJ Staff . Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters