ধান কাটার পর জমি ফেলে না রেখে চাষিরা মুসুরের চাষ করতে পারেন। কৃষিবিদদের মতে, অল্প খাটুনিতে ও অল্প খরচে এই চাষ করা যায়। তবে তাড়াতাড়ি বুনতে পারলে ফলন ভালো হয়। ঠাণ্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়া এই চাষের পক্ষে উপযুক্ত। দোঁয়াশ ও বেলে-দোঁয়াশ মাটিতে মুসুরের ফলন ভালো হয়। এই চাষের মাটি তৈরির জন্য জমিতে ৫-৬ বার লাঙল দিতে হবে এবং দেখতে হবে মাটি যেন ঝুরঝুরে হয়। জমিতে কম্পোস্ট ও রাসায়নিক সার দিতে হবে। রাসায়নিক সার দিতে হবে প্রতি একরে; নাইট্রোজেন ৮ কিলোগ্রাম, ফসফেট ১৬ কিলোগ্রাম, পটাশ ৮ কিলোগ্রাম এবং প্রতি একরে ৬-৮ কিলোগ্রাম ডলোমাইট। দু’রকমভাবে এই বীজ বোনা যায়। ছড়িয়ে বুনলে বীজ লাগবে ১২-১৫ কিলোগ্রাম এবং লাইন দিয়ে বুনলে ৮-১০ কিলোগ্রাম। তবে বীজ বোনার আগে শোধন করে নিলে রোগ পোকার আক্রমণ কম হয়।
প্রথমে মুসুর বীজকে ৮-১০ ঘন্টা জলে ভিজিয়ে তারপর ছেঁকে নিয়ে প্রতি কিলোগ্রামে ৩ গ্রাম হিসাবে থাইরাম মেশাতে হবে। তারপর বীজের সঙ্গে রাইজোবিয়াম মিশিয়ে দিতে হবে। বীজ লাইন দিয়ে বুনলে লাইন পূর্ব পশ্চিমে করতে হবে। তবে এক লাইন থেকে অন্য লাইনের দূরত্ব ৩০ সেমি রাখতে হবে। এক গাছ থেকে আরেক গাছ ১০ সেমি এবং গভীরতা যেন ২.৫৪ সেমি হয়। উচ্চফলনশীল রজন, আশা, বি-৭৭ সহ বিভিন্ন প্রজাতির বীজের চাষ করা যায়। এইসব বীজ বুনলে প্রতি একরে ৬-৮ কুইন্টাল পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, বীজ বোনার তিন সপ্তাহ পর ১৫০-২০০ লিটার জলে ০.১% ডাই সোডিয়াম অক্টাবোয়েট টেট্রাইহাইড্রেট এবং ০.০৫% অ্যামোনিয়াম মলিবডেম সলিউশন মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। ৬ সপ্তাহ পরে একইভাবে ২৫০-৩০০ লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
সৌজন্যে – বর্তমান পত্রিকা
- Sushmita Kundu