পর্যাপ্ত গাছের অভাবে বৃষ্টি কম হয় আর সেই কারণে জলের অভাব হলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের দেশের কৃষকরা। রুক্ষ এলাকায় অপর্যাপ্ত মৌসুমি বৃষ্টিপাত ও হঠাৎ মুশলধারে বৃষ্টিপাতে হঢ়কা বাণে ভূমিক্ষয় হয় আর এর দরুণ প্রচন্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষক। তাই রুক্ষ জমির জলধারণ ক্ষমতা বাড়াতে, টপ সয়েল বা মাটির উপরিভাগকে সুরক্ষিত করার কিছু পদ্ধতি আলোচনায় রইলো।
- মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখার পদ্ধতি - রুক্ষ জমিতে কৃষকরা যখন বৃষ্টি নির্ভর চাষ আবাদ করেন তখন তাদের বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটাকে সংরক্ষণ করা উচিত। এর জন্য জমির আর্দ্রতা ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়াতে হবে। অল্প জল ব্যবহার করে উৎপাদন বৃদ্ধি করার দক্ষতা অর্জন করতে হলে মিশ্র চাষের ব্যবস্থা, গাছ লাগানো ও তাকে বাড়তে দেওয়া, পশুপালন সব কিছু এক সাথে করতে হবে যাতে একটি বিভাগের ‘বাই প্রোডাক্ট’ অন্য বিভাগে ব্যবহার করা যায়। কৃষিকাজের উদ্বৃত্ত অংশ যেমন পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যাবে তেমনই পশুরপালনের উদ্বৃত্ত পদার্থগুলি কম্পোস্ট সার তৈরিতে ব্যবহার করা যাবে বা সরাসরি সার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এই ভাবে উৎপাদন খরচ কমানোর সাথে সাথে জল সম্পদের সংরক্ষণও সম্ভব হবে।
- সঠিক পরিকল্পনা – রুক্ষ জমিতে প্রথমিকভাবে কৃষক খরা প্রতিরোধী দেশীয় জাতগুলি লাগাতে পারেন যাতে কম জল লাগে। সাথে জমির একটা অংশে ছোট ছোট পুকুর বানিয়ে রাখলে বৃষ্টির জল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা যায়। পুকুরের জল বেড়ে গেলে সেখানে রুই, কাতলা, মৃগেল ইত্যাদি কাটাপোনা মাছ চাষ করা যাবে। পুকুরের জল চাষের কাজে ব্যবহার করা যাবে।
- অ্যাজোলা চাষ – এই সমস্ত ছোট পুকুরে অ্যাজোলা চাষ করা যেতে পারে যা গরু, পোলট্রি এমনকি মাছেরও উৎকৃষ্ট পুষ্টিকর আহার যা গরুর দুধ উৎপাদন ও পোলট্রির ডিম উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। অ্যাজোলা পুকুরের জলের বাস্পীভবন কমিয়ে জলকে ধরে রাখতে সাহায্য করে।
- জমিতে গোবর সার মেশানো হলে ৩-৫ বছর পর সেই জমির উৎপাদনশীলতা অনেকগুণ বেড়ে যাবে। জমির চারিধারে বড় বড় গাছ থাকলে সেই সমস্ত গাছের পাতা জমিতে বিছিয়ে রাখলে তা প্রাকৃতিক মাল্চিং এর কাজ করে জমির জল ধরে রাখতে সাহায্য করবে ও বন্ধুপোকাদের ও কেঁচোর সংখ্যা বাড়িয়ে জমিকে অনেক বেশী ফলনশীল করবে। ধৈর্য্যের সাথে ৩-৫ বছর সঠিক নির্দেশনার সাথে এই ভাবে জমির দেখাশোনা করলে জমির উৎপাদনশীলতা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
- রুনা নাথ (runa@krishijagran.com)
English Summary: How to be more productive of your dry land
Published on: 31 January 2019, 12:10 IST