ভারতের কৃষিক্ষেত্র এখন ব্যবসার একটি বিশেষ দিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে। কৃষির সাথে যুক্ত থাকা অনেক ছোট ছোট বিষয়সমূহ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অধিক মুনাফার মুখ দেখাচ্ছে, আর এই জন্য অনেক কোম্পানি এই কৃষি ক্ষেত্রে তাদের মূলধন বিনিয়োগ করে চলেছে আর এই কারণেই কৃষিক্ষেত্র ব্যবসার একটি নতুন সম্ভাবনাময় বাজার অধিকার করতে পেরেছে। বিগত কয়েক বৎসরের মধ্যে লামন গ্রাস এমনি একটি কৃষিপণ্য হয়ে উঠেছে যা কিনা কৃষি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে লাভের পরিমাণ গুরুত্বপূর্ণভাবে বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে।
লেমন গ্রাস এমনি একটি কৃষিজ ফসল যাকে দেখতে অনেকটা সাধারণ জংলি ঘাসের মতো লাগে, কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেক কম লোকই জানে যে লেমন গ্রাস মানব শরীরের পক্ষে কতখানি উপকারী, এবং এর বাজার মূল্য অন্যান্য হার্বস এর তুলনায় অনেকটাই বেশি এবং সেই সাথে এর চাহিদাও ব্যাপক। লেমন গ্রাসের সবথেকে বেশি ব্যবহার হয় চা হিসেবে আর ব্যবহারকারী নিজের পছন্দমতো একে ব্যবহার করতে পারে।
দুধচায়ের বিকল্প হিসেবে লেমন গ্রাস
লেমন গ্রাসের ব্যবহার প্রচুর, কিন্তু এর সবথেকে বেশি ব্যবহার হয় চায়ের বিকল্প পানীয় হিসেবে। রোজ সকালে ও বিকেলে যে কেউ এটি চায়ের বিকল্প পানীয় হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। আমাদের দেশে দুধ চা খাওয়ার রেওয়াজ কোথা থেকে শুরু হয়েছে সেটা জানা নেই তবে এই দুধচায়ে আমাদের পেটের যে বিশেষ কোনো সুবিধা হয় না এটা হলফ করে বলা যায়, বরং সুবিধার থেকে অসুবিধাই বেশি হয়ে থাকে, কারণ দুধচা খেলে গ্যাসের সমস্যা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। যাদের অম্লশূলের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা এই লেমন গ্রাসের তৈরী চা খুব আরাম করে খেতে পারে।
লেমন গ্রাসে কি উপযোগিতা পাওয়া যায়
লেমন গ্রাস একটি উত্তম জড়িবুটি। এই ঘাসকে বপন করা যতটাই সহজ তেমনি এই ঘাসের বৃদ্ধির হার অনেকটাই বেশি। লেমন গ্রাসের একটি বিশেষত্ব হলো যে এই ঘাসএর যেমন ঔষধি গুণ রয়েছে তেমন কেউ যদি কম পুঁজিতে চাষ করে বড়লোক হতে চায় সেক্ষেত্রে লেমন গ্রাস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম, অর্থাৎ কেউ চায়ের মতো করে পান করে, কেউ ঔষধ হিসাবে সেবন করে, কেউ মশলার মতো করে ব্যবহার করে থাকে, এবং বলে রাখা ভালো এই ঘাসের ব্যবসায়িক চাহিদা অনেক বেশি।
কেমনভাবে বানাবেন লেমন ঘাসের চা?
লেমন ঘাসের চায়ের সাহায্যে যে কোনো মানুষ তাঁর সর্দির সমস্যা, জ্বরের সময় মুখের স্বাদ ফেরাতে, বা গলার খুসখুসে সমস্যা থেকে সাময়িক ছুটকারা পাবার জন্য লেমন ঘাসের তৈরি চায়ের সেবন করতে পারেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কি করে বানাবেন এই চা?
- একটা কেটলিতে দু গ্লাস জল ঢালবেন এবং গরম করবেন।
- এই গরম জলে লেমন ঘাসের পাতা চটকে ফেলতে হবে।
- এখন এর মধ্যে আদা, লেবু, ও ১০ থেকে ১২ টি চায়ের পাতা ফেলে দিতে হবে।
- এছাড়াও আপনার যদি মনে হয় আপনি পুদিনার ডাল ভিজিয়ে দিতে পারেন। এর ফলে এই চা আরো উন্নত গুণমানের ও অধিক সুস্বাদু হতে বাধ্য।
কীভাবে করবেন লেমন গ্রাসের চাষের শুরুয়াদ :
চাষিদের কাছে লেমন গ্রাসের চাষবাদ খুব ভালো স্টার্ট আপ হতে পারে, কারণ এই ঘাসের উৎপাদনে খুব বেশি টাকাপয়সার প্রয়োজন হয় না, এবং অন্যান্য ফসলের মতো এত পরিমাণ যত্নেরও কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। লেমন গ্রাসে কীটনাশকের প্রয়োজনীয়তা নেই কারণ এই ঘাস এমনিতেই পতঙ্গ প্রতিরোধী মহৌষধি, তাই উৎপাদন বাড়ানোর জন্য এতে বিশেষ রাসায়নিক সার ব্যবহারের কোনো আবশ্যকতা নেই। যে কোনো ব্যক্তি নিজেদের ঘরেই এই ঘাসের উৎপাদন বাড়াতে পারেন, হয়তো এই ঘাস চাষ দিয়েই শুরু হতে পারে আপনার কৃষি জীবন।
Video courtesy - MyHealthyLifeTV
- প্রদীপ পাল (pradip@krishijagran.com)