জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির মাধবডাঙায় দু’শতাধিক মৎস্যজীবী পরিবার রয়েছে। অধিকাংশ মাছ চাষি কদমতলা এলাকায় থাকেন। দুই-তিন পুরুষ ধরে তাঁরা মাছ চাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাঁদের অভিযোগ, সরকারি কোনও সুযোগ সুবিধা তাঁরা পান না। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান থেকে মাছের চারা নিয়ে এসে নিজেদের পুকুরে, জাতীয় সড়কের ধারের নয়ানজুলিতে কিংবা অন্যের পুকুরে মাছ চাষ করেন। সেই মাছ পরবর্তীতে কোচবিহার, শিলিগুড়ি, ডুয়ার্স সহ পাহাড়ের পাইকারা এসে নিয়ে যায়। ময়নাগুড়ির কদমতলার বিভিন্ন পুকুরে রুই, কাতলা, বাটা, সিলভার কার্প, চিতল, ফলি মাছ চাষ করা হয়। মাছ চাষিদের দাবি, সরকারি সাহায্য পেলে তাঁরা ব্যবসায় উন্নতি করতে পারতেন।
কদমতলার মাছ চাষি গণেশচন্দ্র রায়, হরেন রায়, ভলেন রায় বলেন, আমরা দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে মাছের চারা নিয়ে আসি। এলাকার বিভিন্ন পুকুরে সেগুলি চাষ করে বড় করি। কিন্তু মাছের চারা কেনা থেকে মাছের খাদ্য কিংবা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ আমরা কিছুই পাই না। হ্যাঁচারি করে দেওয়া, ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া দাবি আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে গ্রামের মানুষের থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে আমরা মাছ চাষ করছি।
বর্ষায় সময়ে মাছের চারা ভেসে গেলে চাষিরা ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন। দপ্তর থেকে মাছ চাষিদের ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। তবে এসবের জন্য তাঁদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দপ্তরে নিয়ে আসতে হবে। ময়নাগুড়ির কদমতলায় প্রচুর মানুষের প্রধান জীবিকাই মাছ চাষ। তাঁরা পুকুরে, ডোবায় রুই, কাতলা, মৃগেল, বাটা, সিলভার কার্প, ফলি সহ বিভিন্ন ধরনের মাছ চাষ করেন। বর্ষায় সময়ে পুকুর, ডোবায় জল বাড়লে মাছ ভেসে যায়। তখন তাঁরা বিপাকে পড়েন। সম্প্রতি ময়নাগুড়িতে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ করে ফোর লেনের কাজ শুরু হয়েছে। এতে রাস্তার ধারের নয়ানজুলিগুলি বন্ধ করা হচ্ছে। তাই তাঁরা এখন সমস্যায় পড়ছেন। এক বছরের জন্য পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করলে প্রচুর খরচ পড়ে। সেজন্য তাঁরা নয়ানজুলি ছাড়াও গ্রামের সরকারি জমিতে থাকা ডোবাগুলিতে চারা মাছ ছেড়ে চাষ করেন। কিন্তু বৃষ্টিতে সেগুলি ভরে গেলে আর কিছুই করার থাকে না।
- Sushmita Kundu