মটরের চাষ করতে হলে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। মটরের চাষ করে চাষিরা ভালো আর্থিক উপার্জন করতে পারেন। চাষের জন্য পলি, দো-আঁশ মাটি বেশি উপযোগী। যদিও সব মাটিতেই মটরের চাষ কম বেশি ভালোই হয়। ভালো জাত হলে ধূসর (বি-২২), জি.এফ-৬৮, শংকর ডি. ডি. আর-২৩, রচনা প্রভৃতি জাতগুলি ভালো ফলন দেয়। বীজ শোধন করতে হবে প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে ম্যাঙ্কোজেব ৭৫ শতাংশ ৩ গ্রাম বা থাইরাম ৭৫ শতাংশ ২ গ্রাম বা ক্যাপটান ৭৫ শতাংশ ২ গ্রাম হারে ভালোভাবে মেশালেই বীজ শোধন হয়ে যাবে। বীজ শোধনের কমপক্ষে ৭ দিন আগে বীজের সঙ্গে রাইজোবিয়াম কালচার মেশাতে হবে। বীজ বপন করতে হবে কার্তিক থেকে অগ্রহায়ন মাসের মধ্যে। বিঘে প্রতি ১০ কেজি ফসফেট ও ১৬ কেজি পটাশ প্রয়োগ করতে হবে বীজ লাগানোর সময়। কোনও চাপান সার লাগবে না। এ জন্য বীজ ছিটিয়ে বুনলে ১০ বীজ লাগে আর সারিতে বুনলে ২০ সেমি ও ১০ সেমি দূরত্ব রাখতে হয়। সারিতে বুনলে বিঘেতে ৭ কেজির মতো বীজ লাগে। বিঘে প্রতি ৫.৭৫ কেজি ইউরিয়া ৩২.২৫ কেজি সিঙ্গল সুপার ফসফেট ও ৯ কেজি মিউরেট অব পটাশ প্রয়োগ করতে হবে। কোনও চাপান সার লাগবে না। অম্ল মাটিতে চুন জাতীয় উর্বরক প্রয়োগ করতে হবে। গাছে সুসংহত খাদ্য সরবরাহের জন্য বীজ বোনার ৩ সপ্তাহের মাথায় জিঙ্ক, ৪ সপ্তাহের মাথায় বোরণ এবং ৫ সপ্তাহের মাথায় মলিবভেনাম স্প্রে করতে হবে। এজন্য প্রতি লিটার জলে ০.৫ গ্রাম চিলেটেড জিঙ্ক, ১.৫ গ্রাম ডাউসোডিয়াম অক্টাবোরেট, ০.৫ গ্রাম অ্যামোনিয়াম মলিবডেট মেশানো হয়।প্রতিবারে বিঘে প্রতি ৪০ লিটার অণু খাদ্য মেশানো জল প্রয়োগ করা দরকার। আবার বীজ বোনার ৩০-৪০ দিনের মাথায় প্রতি লিটার জলে ২০ গ্রাম ইউরিয়া বা ডি.এ.পি গুলে স্প্রে করলে ফলন বৃদ্ধি পাবে। একটি সেচের সুযোগ থাকলে শুঁটি ধরার সময় সেচ প্রয়োগ উপকারী। দুটি সেচের সুযোগ থাকলে প্রাথমিক বাড়ন্ত অবস্থায় আর একটি শুঁটি ধরার সময় দেওয়া দরকার।
রোগ পোকার নিয়ন্ত্রণ: পাতার সাদা গুঁড়ো রোগপাতা সাদা পাউডারে ভরে যায়। আঙুল ছোঁয়ালে লেগে যায়।প্রতি লিটার জলে ৩ গ্রাম সালফার বা ১ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম গুলে স্প্রে করতে হবে। মরচে রোগ পাতার নিচে গাঢ় বাদামি মরচে দাগ ধরে। প্রতি লিটার জলে ০.৭৫ মিলি প্রোপিকোণাজোল বা ২.৫ গ্রাম মেটাল্যাক্সিল। ম্যানকোজেব গুলে পাতায় প্রয়োগ করতে হবে। লেদা পোকা পাতা ও শুঁটি খেয়ে ফেলে। প্রতি লিটার জলে ২ মিলি কার্বোসাফলান বা ১ মিলি ট্রায়াজোফস গুলে স্প্রে করুন। জাব পোকা নরম অংশ থেকে রস চুষে খায়। প্রতি লিটার জলে ১ মিলি ফ্রিপ্রোনিল বা ২ মিলি মিথাইল ডিমেটন গুলে স্প্রে করতে হবে।
ফলন পাওয়া যাবে: ৯০-১২০ দিনের মধ্যে ফলন পাওয়া যাবে। বিঘে প্রতি ২০০-২৫০ কেজি ফলন পাওয়া যাবে। ভালো বীজ পেতে স্থানীয় কৃষি দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়াও কৃষি অনুমোদিত ডিলারদের থেকেও ভালো বীজ পাওয়া যাবে।
তথ্যসূত্র - বর্তমান পত্রিকা
- অভিষেক চক্রবর্তী(abhishek@krishijagran.com)