বেগুন সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের সবজির মধ্যে অন্যতম প্রধান। কিন্তু বাজারে নিটোল চকচকে বেগুনের পিছনে ভয়ঙ্কর তথ্যটি হল যে সেই বেগুন তার প্রধান কীটশত্রু ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা (Fruit & Shoot Borer) থেকে বাঁচতে কৃষিবিষের প্রাচুর্য্যে প্রায় হাবুডুবু।
এই পোকার Monofagous প্রকৃতির জন্য পোকার দিব্যি Pesticide resistance তৈরি হয়ে উঠেছে। গাদা টাকা খরচে বড় কোম্পানী গুলির R & D –এর গবেষণায় নতুন ওষুধ আর আরো বেশী দামে নতুন কৃষিবিষ আর কিছুদিন পরে যে কে সেই। তা হলে উপায়? খুব সাধারণ প্রযুক্তির মধ্যেই এর উত্তর লুকিয়ে আছে। যদি পূর্ণাঙ্গ পোকাকে ফেরোমোন, ফাঁদে আকৃষ্ট করে মেরে দেওয়া যায় তাহলে নিষেকের আগেই পোকার বংশবৃদ্ধি রোধের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ব্যবধানে অল্প স্প্রে করে বা প্রয়োজনে স্প্রে ছাড়াই বেগুন ফলানো সম্ভব।
ফেরোমোন ফাঁদের ক্ষেত্রে ফানেল ট্র্যাপে পোকা পড়লেও সংখ্যা উল্লেখযোগ্য নয়। তবে এখন বাজারে এসেছে সহজ প্রযুক্তির সোলার লাইট ট্র্যাপ। এতে একটি পলি পাত্রের উপর সোলার সেল যুক্ত আলোর ব্যবস্থা ও সঙ্গে দুটি ‘ফেরোমোন lure’ থাকছে। ফসলের ক্ষতি কারক কীট বিশেষত পূর্ণাঙ্গগুলি ‘Nocturnal’ ফলে সন্ধ্যের আলো নিভলেই এমার্জেন্সি লাইটের মত এই আলো আপনা আপনি সকালের সূর্যালোকে চার্জ হয়ে থাকা শক্তিতে জ্বলে উঠছে আর পাত্রে জল ও উপরে কেরোসিন বা কোন কৃষি বিষ দিয়ে রাখা স্থানে পড়ে মরে যাচ্ছে। চাষিরা প্রথমে বেগুনে বিষ দিতে হবে না শুনে বিশ্বাস না করলেও, উত্তর ২৪ পরগণার সহ উদ্দ্যানপালন অধিকর্তা ড: শুভদীপ নাথ ফার্মার্স প্রডুসার সংস্থার সঙ্গে চাষিদের মাঠে নেমে এই প্রযুক্তি হাতে কলমে দেখিয়েছেন। তাজ্জব সবাই আর বাড়ছে সচেতনতা।
আরও পড়ুন লেবুজাতীয় গাছের সুতো কৃমি জাতীয় রোগ ও তার সম্ভাব্য প্রতিবিধান
বিশ্বাসের বন্ধন গড়তে শুরু হতে চাষিদের গড়া গোষ্ঠিবদ্ধ সংস্থা (FPC) ও অন্যান্য নানা ফার্মার্স ক্লাব বিপনন ও এই সোলার লাইট ট্র্যাপের সরবরাহে এগিয়ে এসেছে। ফলে কৃষিবিষের দোকানদার বিক্রি না করুক নেই আর পরোয়া।
তথ্যসূত্র - ড: শুভদীপ নাথ
- রুনা নাথ (runa@krishijagran.com)