রোজ বদলাচ্ছে আকাশের মেজাজ: দক্ষিণ ও উত্তরবঙ্গের আবহাওয়ার আপডেট (Weather Update of Bengal) সরাসরি বাজারে নয়, FPO-র মাধ্যমে বেশি দাম পেতে কী করবেন? পশ্চিমবঙ্গের ছোট শিল্প: হ্যান্ডলুম থেকে টেরাকোটা
Updated on: 29 December, 2018 5:13 PM IST

স্ট্রবেরি ফল দেখতে যেমন আকর্ষনীয় তেমনি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। ভিটামিন সি ও আয়রণ সমৃদ্ধ এই ফল নানাবিধ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস –এ ভরপুর। লতানে গুল্মজাতীয় এই ফলগাছ খুব সহজেই টবে চাষ করা সম্ভব। তাই বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় যেখানে আলো ও হাওয়া খেলে সেখানে আমরা স্ট্রবেরির মত দৃষ্টিনন্দনীয় ফলের আবাদ করে আনন্দের সঙ্গে বাড়িতেই পেতে পারি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। তাই কৃষি জাগরণের এই সংখ্যায় টবে স্ট্রবেরি চাষের প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনার হাল হদিশ দিলাম।

চাষের আবহাওয়া ও মাটি – স্ট্রবেরি মূলত ঠান্ডা আবহাওয়ার ফল। শরৎ থেকে শুরু করে শীতের মরশুমে এই ফলের চাষ খুব ভালোভবে করা সম্ভব। বর্ষার শেষে শরৎকাল (সেপ্টেম্বরের মাঝ থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ) হলো চারা লাগানোর আদর্শ সময়।

টবের প্রকার ও মাটির মিশ্রণ – আট ইঞ্চি ব্যাসের একটু মুখ ছড়ানো টব বেছে নিন। টব বা পট উচ্চতায় বেশী গভীর (৮ ইঞ্চির) না হলেও চলবে। আধুনিক যুগের ঝোলানো বাহারী টব হলে দারুণ। সৌন্দর্য্যের সঙ্গে অতি সংবেদনশীল এই ফল ধরবার পর নষ্ট না হয়ে অটুট থাকবে। আর কোনোকিছু না পেলে কাছাকাছি মাপের সুবিধাজনক পলি-ব্যাগেই চেষ্টা করুন

মাটি মিশ্রন বানাতে নিন ২ ভাগ দোঁয়াশ মাটি, ১ ভাগ ভার্মিকমপোস্ট বা কেঁচোসার, ৫০ গ্রাম হার গুঁড়ো, ২৫ গ্রাম অণূখাদ্য, ২৫ গ্রাম সিলিকা (সিলিকা পাওয়া কঠিন হলে সিলিকা-বেসড্ সিউইড এক্সট্রাক্ট বা হিউমিক দানা নিন)।

চারা নির্বাচন – টিস্যুকালচার চারাই সর্বোৎকৃষ্ট ও প্রচলিত। পশ্চিমবঙ্গে চাষের উপযোগি জাতগুলি নিম্নরূপ।

১) থিয়োগা – রোগ সহনশীল জাত। ফল বড়, শক্ত, অল্প টক।

২) সুইট চার্লি – লাল টুকটুকে নরম, সুস্বাদু ফল।

৩) সেলভা – সময়ে চাষের উপযোগী, ফলের মাঝখানে কিছুটা ফাঁকা অংশ থাকে।

৪) বেরলুবি – ফল বড় ও প্রচুর চারা তৈরি হয়।

মাটি-মিশ্রন তৈরি করে পলিপ্যাক চারার পলিথিন খুলে সঙ্গের কোকোপিট/মিডিয়াম সমেত চারা টবের মাঝে সাবধানে বসান। প্রাথমিক মূল যেন না বেড়িয়ে থাকে। সপ্তাহখানেকে চারা মাটি ধরে নিলে মাঝে-মধ্যে হালকা জলের সঙ্গে দু-সপ্তাহে একবার করে জলে-গোলা সার (এখন অর্গানিকও বেড়িয়ে গেছে, যেমন-প্রাইম প্যাক ১.-.-., ন্যানো এন.পি.কে. ইত্যাদি) দিন। চারা লাগানোর ২ মাস পরে ফুল ধরে। ফুল ধরার ১০-১৫ দিন পরে ফল  ধরে। প্রথমে ফল সবুজ থাকে ক্রমে তা লাল হতে থাকে। এসময় ফলে যেন মাটির ঘসা না লাগে। আর তাই খড় বা শুকনো পাতার মাল্চিং-এ ফল সমেত থোকা রাখুন। হালকা বাটার পেপারের আবরণও ব্যাবহার করতে পারেন। ঝুলন্ত টবে সমস্যা কিছুটা কম। ফল লাল হলে পাখির উৎপাত সামলে রাখবেন। ফল লাল হলে নিজে খান, খাওয়ান আর উপভোগ করুন টবেই স্ট্রবেরির মজা।  ফলের মরশুমের শেষের দিকে গাছের গোঁড়া থেকে লম্বা ধাবক বড় হতে শুরু হলে এটিকে ঐ টবেই বা পাশে অন্য একটি টবে নরম ধাবকের কান্ডটির আগা মাটি ছুঁইয়ে রেখে দিলে ওখান থেকে কিছুদিনে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ চারা তৈরি হবে। তাই নতুন টবে আগামীর স্ট্রবেরি চারা আবার তৈরি। চাইলে কাউকে গিফ্ট দিন। আকর্ষণীয় ব্যাপার না?

রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ –

  1. জাব পোকা – এই পোকা রস শোষণ করে ফলনের ক্ষতি করে। ২-৩বার নিমজাত কৃষিবিষ স্প্রে করুন। বেশী আক্রমণ হলে থায়ামিথোক্সাম ১/২ গ্রাম প্রতি লিটার জলে আঠা দিয়ে স্প্রে।
  2. লাল মাকড় – শীতের শেষে পাতার নিচে লাল মাকড় পাতার রস চুষে নেয়, এতে গাছ শুকিয়ে যায়। ফেনজাকুইন ১.৫ মিলি/ লি জলে গুলে স্প্রে।

- রুনা নাথ (runa@krishijagran.com)

English Summary: Strawberry cultivation in tub
Published on: 29 December 2018, 05:13 IST