আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত টিস্যু কালচার পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে গ্যাপ (গুড এগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিস) উত্তর ২৪ পরগনার কৃষি বিজ্ঞানীরা জেলার বারাসতের পঞ্চায়েতের তিনটি গ্রামে উল্লা, কালসারা এবং কাঁঠালিয়ায় ‘কোভুর’ প্রজাতির ওলের কাটিং করে চলেছেন। এই কাটিংয়ের উপর স্থানীয় চাষিদের হাতেকলমে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। আগে চাষিরা ৫ কিলো একটা ওল নিয়ে এসে সেটিকে ৬ টুকরো করে ৬টা বীজ তৈরি করতেন। বর্তমানে নতুন পদ্ধতিতে ৫ কিলো ওলকে ৫০ টুকরো করা হচ্ছে। ওলের একেবারে গুড়িকেও বের করে নেওয়া হচ্ছে একটা বীজ হিসেবে। অর্থাৎ মোট ৫১ টুকরো। অর্থাৎ ৫১ টা বীজ তৈরি হচ্ছে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে। এই ৫১টা বীজ থেকে এক কেজি করে ৫১ কেজি ওল পাওয়া যাবে। আগে পাওয়া যেত ৬টি টুকরো থেকে পাঁচ কেজি করে অর্থাৎ ৩০ কেজি। অর্থাৎ আগের পদ্ধতির চেয়ে ২১ কেজি বেশি ওল পাওয়া যাবে। মাটিতে জৈব সার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে খামার সার, জীবাণু সার, খোল, অ্যাজোলা সার, হাড়ের গুড়ো, কেঁচো সার, কচুরিপানা সার ইত্যাদি। এর সঙ্গে রাসায়নিক সারের মাত্রা হল, ১০:২৬:২৬। চাপান হিসেবে দেওয়া হচ্ছে তরল জৈব সার। আশা, এ বছর ব্যাপক ওল চাষ হবে এই অঞ্চলে।
সম্পূর্ণ জৈব মাটি তৈরিতে লাগবে ছয় বছর। তাই উৎপাদন বৃদ্ধি করে, দূষণ কমিয়ে, রাসায়নিক সারকে নিয়ন্ত্রণ করে, জৈব সারের ব্যবহারকে বাড়িয়ে গ্যাপ উত্তর ২৪ পরগনায় কাজ করে চলেছে। চাষিদের দেওয়া হচ্ছে বিশেষ প্রশিক্ষণ। এবার এই সব অঞ্চলে গ্যাপের নিজস্ব ফসল ফলবে। এই ফসলকে গ্যাপের গাড়িতে নিজস্ব বিপণনকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে। গ্যাপের বিপণনকেন্দ্রগুলি রয়েছে রাজারহাট, বাগুইআটি, বিধাননগর এবং কেষ্টপুর বাজারে রয়েছে। বিধাননগর শিশু উদ্যানের বাজারটি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। গ্যাপ চাষিদের কাছ থেকে ন্যায্য দাম দিয়ে ফসল কিনে বাজারে তা ন্যায্য দামে বিক্রি করছে। এখানেই গ্যাপের মূল সাফল্য। ফড়ে ছাড়া ফসল বিক্রি হচ্ছে। ওল চাষের ব্যাপক চাষ চাষিদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
- Sushmita Kundu