ভারতে দুগ্ধ ব্যবসা একটি অন্যতম জনপ্রিয় ব্যবসা। এই দুগ্ধ শিল্পের মাধ্যমে অনেকেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। দুগ্ধ একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্য । গবাদিপশু যেমন গরু, মহিষ ইত্যাদি প্রাণীর দুগ্ধ আমরা পান করে থাকি। কৃষকেরা যদি বেশী পরিমাণ দুগ্ধ উৎপাদন করেন, তাহলে তাঁরা সেই দুগ্ধ বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন।
ভারতে তিনটি প্রজাতির মহিষের জনপ্রিয়তা সর্বাধিক, যার মধ্যে মুররা, গোদাবরী এবং মেহসানার নাম উল্লেখযোগ্য। জেনে নিন তাদের পালন পদ্ধতি সম্পর্কে।
মুররা -
মুররা জাতের মহিষ ভারতে খুব জনপ্রিয়। এর দুগ্ধ উৎপাদনের পরিমাণ অনেক। ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশের কৃষকরাও এই জাতের মহিষ খুব পছন্দ করেন। মুম্বাইয়ের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে প্রায় ১ লক্ষ মুররা জাতের মহিষ পালন করা হয়। এই মহিষের সাহায্যে, প্রতিদিন ১০-২০ লিটার দুগ্ধ উৎপাদন সম্ভব।
গোদাবরী -
এই মহিষটি উত্তর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে যেমন মথুরা, আগ্রা এবং ইটাওয়ায় পালন করা হয়। এর দুধে ১৪ থেকে ১৮ শতাংশ ফ্যাট থাকে। এর দুধ শরীরের বিভিন্ন রোগে জন্য উপকারী।
মেহসানা –
মেহসানা প্রজাতির মহিষ ১২০০ থেকে ১৫০০ লিটার দুগ্ধ উৎপাদন করতে সক্ষম। এটি গুজরাটের মেহসানা অঞ্চলে পাওয়া যায়।
মহিষ পালনের উপযোগী স্থান -
মহিষ যেখানে পালন করবেন, খেয়াল রাখবেন সেই স্থানটি যেন সর্বদা পরিষ্কার থাকে। মনে রাখবেন যে, ঠান্ডা, প্রখর তাপ, বৃষ্টি ইত্যাদিতে যেন তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জায়গাটিতে কোন অসুবিধা না হয়। স্থানটির মেঝে যদি পাকা না হয় ক্ষতি নেই, কিন্তু নিশ্চিত হয়ে নিন মেঝে যেন পিচ্ছিল না হয়। অর্থাৎ সর্বদা খেয়াল রাখবেন, ঘরটি যেন কোনমতেই স্যাঁতসেঁতে না হয়, সেখানে বায়ুচলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
খাদ্য ও পানীয় -
প্রাণীদের সবসময় পানের জন্য পরিষ্কার জল দিন। তাদের বিশ্রাম করতে দিন, এটি খুবই জরুরি। প্রাণীরা যদি পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পায়, তবে তাদের দুধের উত্পাদন ক্ষমতা হ্রাস পাবে। অধিক পরিমাণ দুগ্ধ উৎপাদনের জন্য খাদ্যেও ভারসাম্য থাকা জরুরি। খাদ্যে প্রায় ৩৫ শতাংশ শস্য রাখা জরুরি, সরিষার খোল ছাড়াও, চিনাবাদামের খোল, বা তুলোবীজের খোল ব্যবহার করা যেতে পারে।
পশুপালনে সফল কৃষক –
গ্রামের বাসিন্দা গোবিন্দ চৌধুরী একইসঙ্গে চাষ এবং পশুপালন (Animal Husbandry) করে পেয়েছেন প্রচুর মুনাফা৷ তার এই কাজে অংশীদার হয়েছেন আরও বহু বহু কৃষক৷
প্রথাগত কৃষিকাজের সঙ্গে তিনি পশুপালনও (Animal Husbandry) করতে থাকেন৷ তাঁর ৪ টি মহিষ রয়েছে। তাঁর সবজির খেত থেকে ফসলের অবশিষ্টাংশ তিনি পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেন৷ এর ফলে একদিকে যেমন পশুদের খাদ্যমান নিয়ে দুশ্চিন্তা কম থাকে, তেমনই খাদ্যের পিছনে অতিরিক্ত ব্যয়ও হয় না৷
কৃষি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন পরামর্শ নিয়ে তা কৃষিকাজে প্রয়োগ করেন, যার ফলে কৃষিক্ষেত্রে প্রচুর লাভ হয়৷
এই কৃষক শুধু পশুপালন থেকেই প্রতি মাসে প্রায় লক্ষ টাকার মুনাফা অর্জন করেন৷ গোবিন্দ চৌধুরীর এই প্রচেষ্টা এবং সাফল্য অন্যদেরও উৎসাহিত করছে৷
Image source - Google
Related link - (Pig farming) ঘুঙরু এই প্রজাতির শূকর পালনে লক্ষ টাকা আয়
(Quail bird firming) কৃষকবন্ধুরা আয় বাড়াতে কৃষিকাজের সাথে করুন কোয়েল পাখির চাষ