মহারাষ্ট্রের কৃষকরা এখন ঐতিহ্যবাহী চাষাবাদ ছেড়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে উদ্যানপালনের দিকে ঝুঁকছেন। ঔরঙ্গাবাদের পৈথান তালুকের কলিবোদখা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক কৃষ্ণা চাভরে এমনই একটি পরীক্ষা করেছেন। চাভরে তার দৃঢ় সংকল্প ও পরিশ্রমে পাথুরে মাটির অনুর্বর জমিতে ডালিম চাষ করে এখন বাগানটি ফুলেফেঁপে উঠতে শুরু করেছে। আর কৃষকেরও লাভ হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। কৃষকের এই ডালিম বাগান দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন কৃষকরা। বর্তমানে তার বাগানে এক ক্যারেট ডালিমের দাম প্রতি ক্যারেট ৩১০০ থেকে ২১০০ টাকা পর্যন্ত।
কৃষকরা আগে পৈতৃক কৃষিতে তুলা, তুর এবং পেঁয়াজ ফসল ফলানোর চেষ্টা করত। কিন্তু জমি পাথুরে হওয়ায় উৎপাদন হচ্ছিল না। তাই ভিন্ন কিছু চেষ্টা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপর সাত একর জমিতে ডালিমের আবাদ করেন। চাভরে বলেন, সঠিক পরিকল্পনা করে এ বছর প্রথমবারের মতো ডালিম থেকে পঁচিশ লাখ টাকা লাভ হবে।
কৃষ্ণা চাভরে প্রথাগত চাষাবাদ ছেড়ে নতুন কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন। যেহেতু তিনি নিজে একটি কৃষি সেবা কেন্দ্র পরিচালনা করতেন, তাই তিনি তার সাত একর খামারে একটি ডালিম বাগান করার সিদ্ধান্ত নেন। কৃষক 2020 সালে কৃষি পরিকল্পনা করেছিলেন এবং 2000 হাজার গাছ রোপণ করেছিলেন। এ সময় তাকে নানা সংকটেরও সম্মুখীন হতে হয়েছে। কৃষক কৃষ্ণ জানান, সঠিক পরিকল্পনা ও কৃষি পরামর্শ নিয়ে তিনি তার বাগান গড়ে তুলেছেন। এখন প্রথম বছরেই পুরো ফল বিক্রি করতে যাচ্ছেন তিনি। আর এতে তারা লাখ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন। চাভেরের কঠোর পরিশ্রম তার ডালিম বাগানের জন্য প্রতিফলিত হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ সবজি চাষ কাশ্মীরি যুবকের ভাগ্য বদলে দিয়েছে
চাভরে জানান, কলিবোদখা শিভারে তার পৈতৃক জমি রয়েছে এবং তিনি সাত একর জমিতে ২০০০টি চারা রোপণ করেছেন এবং এখন তার ডালিমের বাগানে ফুল ফুটছে। আর বাকি এলাকায় তুর চাষ হয়। কৃষক জানান, ডালিম বাগানের জন্য তার আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখন তিনি বছরে পঁচিশ লাখ টাকা লাভ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। নাসিকে চাভরের ডালিম বিক্রি হয়। বর্তমানে তারা এর জন্য প্রতি ক্যারেট মিল রেট ৩১০০ থেকে ২১০০ টাকা পাচ্ছেন।
এ বছর মারাঠাওয়াড়ায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে এবং গত তিন বছর ধরে এই অবস্থা। এর প্রভাব পড়েছে পৈঠান তালুকের ডালিম চাষিদেরও। কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি আবার কখনো অতিবৃষ্টিতে ডালিমের বাগানে তৈলাক্ত রোগ, কালো দাগের মতো রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়, যার কারণে কৃষকদের তাদের বাগান ধ্বংস করতে হয়। কিন্তু পৈঠানের কলিবোদখার কৃষ্ণা চাভরেও দৃঢ় সংকল্প ও পরিশ্রমে পাথুরে জমিতে ডালিমের বাগান করে এমন পরিস্থিতির মোকাবিলা করে দাঁড়িয়েছেন।