উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড় জেলার মাতিয়াল গ্রাম ভুতুড়ে গ্রাম নামেই পরিচিত। এখানে জনগনের বসবাস নেই বললেই চলে। তাই এই জনশূন্য গ্রামকে স্থানীয়রা ভুতুড়ে গ্রাম বলে থাকে। তবে এই জনশূন্য গ্রামেই প্রাণের সঞ্চার ঘটালেন দুই যুবক। বিক্রম সিং মেহতা, 34, যিনি মুম্বাইয়ের একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন এবং দিনেশ সিং, 35, যিনি পানিপথে চালক হিসাবে কাজ করতেন। 2020 সালে, কোভিড লকডাউনের পরে দুই যুবক তাদের গ্রামে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
2020 সালের জুনে যখন তিনি গ্রামে ফিরে আসেন, তখন অনেকেই তাকে বোঝানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। তবে, তারা উভয়ই পরিস্থিতির পরিবর্তন আনতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে তাঁদের মনে জোর ছিল। কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠা দিয়ে দুজনে এই জনশূন্য গ্রামে তৈরি করলেন ইতিহাস।
শস্য ও সবজি চাষ দিয়ে শুরু
প্রথম লকডাউনের সময় তাঁরা দুজন যখন গ্রামে ফিরে আসেন তখন পুরো গ্রাম ছিল খালি। তবে জলের কোনো অভাব হয়নি। পাশাপাশি জমিও উর্বর। তাই খাদ্যশস্য ও শাকসবজি চাষের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা । এর জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী স্বরোজগার যোজনা থেকে দেড় লাখ টাকা ঋণ নেন।
মুখ্যমন্ত্রী স্বরোজগার যোজনার অধীনে ঋণ নিয়ে শুরু করেন চাষ। কৃষিকাজে লাভের মুখ দেখতে পেয়ে দুজনেই গরু, ষাঁড়, ছাগল কিনেছেন। গ্রামে পশুপালনের কাজ করেছেন । তাঁদের উন্নতি দেখে মানুষের মধ্যে ভৌতিক গ্রামের কুসংস্কার ভাঙতে শুরু করেছে। অন্য পরিবারগুলোও এখন বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ এই গরমেও চাষ করুন এই জাতের ফুলকপি, হবে লক্ষ্মীলাভ
বিক্রম সিং মেহতা বলেন, প্রায় দুই দশক আগে পর্যন্ত মাটিয়াল গ্রামে ২০টি পরিবার বাস করত। গ্রামের মৌলিক সুযোগ-সুবিধা না থাকায় বিপাকে পড়েছে মানুষ। কর্মসংস্থানের কোন উপায় ছিল না, তাই যুবকরা চাকরির জন্য মেট্রো শহরগুলির দিকে ঝুঁকেছে।
তারপর থেকেই এই প্রাণহীন গ্রামকে ভুতুড়ে মনে হতে শুরু করে সকলের। মানুষ গ্রাম ছেড়ে চলে গেলে এখানকার জমিগুলো অনুর্বর হয়ে পড়ে। আগে মানুষ এখানে গম, ধান ও সবজি চাষ করত। আমাদের গ্রামে উর্বর জমি এবং পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ছিল। আমরা 2020 সালে ফিরে আসি, আমরা গ্রামের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছি।
আরও পড়ুনঃ চাঁদের মাটিতে কৃষি! বিজ্ঞানীদের চমকপ্রদ গবেষণা!