এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 1 August, 2021 10:16 AM IST
Pomegranate farming (image credit- Google)

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামের মোকাররম হোসেন চলতি মৌসুমে বেদনা চাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন | ভিটামিন সমৃদ্ধ আমদানিনির্ভর বেদনা  চীন, ভারত, নেপাল, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বেশ কয়েকটি দেশ থেকে শত শত টন আনার বাংলাদেশের চাহিদা মেটাতে আমদানি করা হয়। তবে এবার দেশের মাটিতেই চাষ হচ্ছে আনার।  অত্যন্ত সুস্বাদু ও ওষুধি গুণসম্পন্ন এ ফল এতোদিন বিদেশি ফল হিসেবেই পরিচিত ছিল। কিন্তু দেশের মাটিতেই প্রথম এ ফলের সফল চাষ হয়েছে উদ্যোগী তরুণ মোকাররম হোসেনের হাত ধরেই।

কিভাবে তিনি চাষ শুরু করেন(How he started)?

গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা মোকাররম হোসেন ৩ বছর আগে ৫ বিঘা জমিতে চাষ করেন এ বিদেশি ফলের। ইতোমধ্যে ফলে ভরিয়ে তুলেছেন গোটা আনার বাগান। এক সপ্তাহ পরেই বাগান থেকে বাণিজ্যিকভাবে ফল বিক্রিও শুরু হবে।

এর আগে মোকাররম হোসেন কয়েক বছর থেকেই বিভিন্ন ফলের চাষ করার চেষ্টা করে আসছেন। কিন্তু বার বার তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। পরবর্তীতে একজনের পরামর্শে বিদেশি ফল আনার চাষ করে সফলতা লাভ করেন তিনি। দেশে এই ফলের চাহিদা মেটানোর জন্য বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে তোলেন আনার বাগান।

আরও পড়ুন - Peace Lily Farming: ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতে রাখুন পিস লিলির গাছ

চাষ পদ্ধতি(Farming process):

প্রথমে তিনি ইউটিউবে আনার চাষ দেখে এই ফলটি চাষ করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ফলটি চাষের জন্য তিনি ভারতের একটি কৃষি খামারের সাথে যোগাযোগ করেন। পরবর্তীতে তাদের পরামর্শ নিয়েই এই ফলের বাগান শুরু করেন তিনি। ৩ বছর আগে ৫ বিঘা জমিতে এসসিটি ভাগুয়া জাতের ৮০০টি গাছ রোপণ করেন।

চারা রোপণের এক মাস পূর্বে তিনি ওই জমিতে ৮ ফুট করে দূরত্বে এবং প্রতি লাইনের মাঝে ১২ ফুট জায়গা ফাঁকা রেখে একটি করে গর্ত করেন। এক ফুট গভিরতার ওই গর্তের ভেতর ৩০ কেজি করে গবর সার (জৈব সার), ৫০০ গ্রাম চুন এবং ২ কেজি করে কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোজ) দিয়ে চারা লাগানোর জন্য জমি উপযুক্ত করে তোলেন।

খরচ ও লাভের পরিমান(Profit & expenditure):

 তার প্রথম বছরে চারা কেনা, জমি তৈরি ও পরিচর্চাসহ বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। চারা রোপণের ২ বছর পরই গাছে ফুল আসতে শুরু করে। ফুল থেকে ফল পরিপূর্ণ হতে ৪ মাস সময় লাগে।

তিনি জানান, বছরে ২-৩ বার ফল সংগ্রহ করা যাবে আনার গাছ থেকে। প্রতিটি গাছ থেকে দুই বারে ৫০ কেজি ফল পাওয়া যাবে। এরই মধ্যে চলতি বছরে বাগানে ৮০০ আনার গাছে প্রচুর পরিমাণে ফল এসেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি আনার ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবার প্রায় ২৫ লাখ টাকার আনার বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি। এর আগে গত বছর তিনি ৫ লাখ টাকার আনার বিক্রি করেছিলেন।

বাজারে এই ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতিটি ফলের বাইরের ও ভেতরের রঙ টকটকে লাল। খেতে সুস্বাদু ও মিষ্টি। তার দাবি, এ চাষ দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে বিদেশ থেকে আমদানি নির্ভরতা কমবে এবং প্রতি কেজি বেদনা ১০০  টাকার ভেতরে কিনতে পারবে সবাই |

ভারতের কৃষি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সয়েল চার্জার টেকনোলজির সাথে যৌথভাবে এ চাষ করছেন মোকাররম হোসেনের গ্রীনভিসতা সয়েলটেক অ্যান্ড এগ্রো ফার্ম। এ কারণে সয়েল চার্জার টেকনোলজির সিনিয়র কনসালটেন্ট কৃষিবিদ হারসাল মুখেকার সার্বক্ষণিক এ ফলের  বাগানের দেখভাল করেছেন।

তার মতে, বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া আনার চাষের জন্য বেশ কঠিন ছিল। সেই কঠিন কাজটি সহজ করতে অনেকটা বেগ পেতে হয়েছে। এক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রযুক্তিও ব্যবহার করতে হয়েছে। মোকাররম হোসেনের বাগানের গাছে গাছে শোভা পেয়েছে বিভিন্ন সাইজের বেদনা। বাগানে বেদনা থোকায় থোকায় ডালে ঝুলছে। বেদনার বাগান দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শতশত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন বাগানটিতে।

বাগানে কর্মরত মাজেদুর রহমান বলেন, রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামটি মূলত একেবারে ভারত সীমান্তঘেঁষা। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। বেদনা বাগানটি হওয়াতে অনেকেই এখন বাগানটিতে কাজের সুযোগ পেয়েছেন। এখান থেকে উপার্জিত অর্থে জীবিকানির্বাহ করছেন তারা।

কৃষি দপ্তরের মতে, স্থানীয় ধনী ও মাঝারি কৃষকরা বেদনা চাষে এগিয়ে আসলে দেশে চাহিদা মিটানোর পরও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। মোকাররম হোসেন আনার চাষে সাফল্য পাওয়ায় চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে আনার চাষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। মোকাররম হোসেনের সাফল্য দেখে এলাকার বহু বেকার শিক্ষিত যুবকরা তার থেকে প্রশিক্ষণ নিতে আসছেন |

আরও পড়ুন - Seaweed Farming: জেনে নিন সামুদ্রিক শৈবাল চাষ পদ্ধতি

English Summary: Pomegranate Farming: Successful farmer Mokarram earned lakhs of rupees by cultivating pomegranate
Published on: 01 August 2021, 10:16 IST