বাবা মাঠে চাষ করেন।অভাব নিত্য দিনের সঙ্গী।নদীয়ার তেহট্টের বাসিন্দা রাখী ঘোষের ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে তিনি শিক্ষিকা হবেন।কিন্তু জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন রাখী।তবে দৃষ্টিহীনতা তাঁর স্বপ্নপূরণে কখনওই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।এ বার সেট (স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট) পাশ করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন রাখী।
ছোটবেলা থেকে আর পাঁচ জন ছেলে-মেয়ের মতোই পড়াশোনা করেছেন রাখী।তবে পড়াশোনা বললে একটু ভুল বলা হবে।‘পড়া’ শব্দটি রাখীর জীবনে সেই অর্থে ছিল না।শুধুই ছিল শোনা।কারন ছোট থেকে কখনওই দৃষ্টিহীনদের স্কুলে যাননি রাখি।আর পাঁচ জনের মতো সাধারণ স্কুলেই পড়াশোনা করেছেন।
আরও পড়ুনঃ জল সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে কৃষক উমাশঙ্কর,পাচ্ছেন পদ্মশ্রী সম্মান
ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি ঝোঁক ছিল রাখীর।প্রতিবেশিরা তাঁর বাবাকে বোঝাতে অক্ষম হয়,যে দৃষ্টিহীন মেয়েকে লেখাপড়া করিয়ে কোন লাভ হবে না। কিন্তু তাঁর কৃষক বাবা পড়াশোনার প্রতি মেয়ের আগ্রহ দেখে,সবটুকু সামর্থ দিয়ে মেয়েকে কোন দৃষ্টিহীনদের স্কুল নয় বরং তেহট্টের শ্রীদামচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি করান।সেখান থেকেই রাখী মাধ্যমিক পাশ করেন।বাংলা নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করার পর গোটা বছর সেটের জন্য প্রস্তুতি নেন রাখী।আর তাতেই এল সাফল্য।তাঁর এই সাফল্যে খুঁশি তাঁর বাবা মা।যদিও তিনি তাঁর সাফল্যের কৃতিত্ব দিয়েছেন তাঁর শিক্ষক-শিক্ষিকা,বাবা-মা,এবং তেহট্টের মহকুমাশাসক মৌমিতা সাহাকে।
আরও পড়ুনঃ দেবীলাল ঐতিহ্যবাহী কৃষিকাজ ছেড়ে উদ্যান ফসল গ্রহণ করেছেন, এখন ভালো আয় করছেন
আনন্দবাজারে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী,একসময় টাকার অভাবে রাখী তাঁর পড়াশোনার খরচ চালাতে পারছিলেন না।পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল।মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন রাখী।সেই সময় তেহট্টের মহকুমাশাসক মৌমিতা সাহা রাখীর সাহায্যে এগিয়ে আসেন।এমএ পড়ার সমস্ত খরচ জুগিয়েছেন তিনি।