ভারতে ডেইরি ফার্মিং ব্যবসা খুব দ্রুত গড়ে উঠছে। এমতাবস্থায় প্রাণিসম্পদ খামারি ও খামারিরাও প্রচুর আয় করছেন। যদি দেখা যায়, হিন্দু ধর্মে গরুকে মায়ের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এটি এখন থেকে নয়, পৌরাণিক যুগ থেকে চলছে। গরুর দুধ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। একইভাবে, গুজরাটের বাসিন্দা রমেশভাই রূপারেলিয়া গরু-ভিত্তিক চাষের মাধ্যমে কোটি টাকা আয় করছেন।
ছোটবেলা থেকেই মা গরুর সেবা করে আসছেন
রমেশ ভাই রূপরেলিয়ার এই অবস্থানে পৌঁছতে অনেক বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই গরুর প্রতি তার ভালোবাসা তার সাফল্যের গল্প বলে। আসুন আমরা বলি যে রমেশ ভাই রুপেলিয়াও ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। গরুর সেবা ও সঙ্গীতের প্রতি তার ছিল ভালোবাসা, যার কারণে তিনি গানের মাধ্যমে গ্রামে গরুর মহিমা গাইতেন। গানের মাধ্যমে তিনি গ্রামবাসীদের গোমূত্র, গোবর ও দুধের উপকারিতা বলতে শুরু করেন। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় তাকে ৭ম শ্রেণীর পর পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয়। এরপর মাত্র ৮০ টাকায় মজুরি শুরু করেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে কৃষি শ্রমিক হিসেবে মাঠে কাজ শুরু করেন। 1988 সাল নাগাদ, রমেশ ভাই অন্যদের গরু চরাতে শুরু করেন। বহু বছর ধরে তিনি গরু সেবার এই কাজ চালিয়ে যান।
ভাড়ায় জমি নিয়ে শুরু করুন
তখনও তার আর্থিক অবস্থা খারাপ ছিল। কিছু করার উদ্যমে তিনি জমি নেন এবং সম্পূর্ণ জৈব চাষ শুরু করেন। সার তৈরির জন্য তিনি গোবর ও গোমূত্রের ব্যবস্থা করে কৃষিকাজে ব্যবহার করতেন। ধীরে ধীরে এই রেসিপি কৃষিতে কাজ শুরু করে।
২০১০ সালে ১০ একর জমিতে রেকর্ড ৩৮ হাজার কেজি পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। এরপরও তিনি থেমে থাকেননি, এরপর ১ একর জমিতে চাষ করে ৩৬ হাজার কেজি হলুদ ফলনের দ্বিতীয় রেকর্ড গড়েছেন নিজের নামে। তার কঠোর পরিশ্রম এবং আবেগের কারণে সাফল্য তার পায়ে চুমু খেতে থাকে। ঠিক তখনই কি, ৪ একর জমি কিনে জৈব চাষ দিয়ে গরু পালন শুরু করেন।
রমেশ ভাই এখন সময়ের সাথে এগোতে শিখেছেন। এর পাশাপাশি সময়ের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি একটি কম্পিউটার কোর্স করেছেন, যাতে তিনি অনলাইনে তার অর্গানিক পণ্য বিক্রি করতে পারেন । আগে তিনি তার অর্গানিক পণ্য চক্রের মাধ্যমে বিক্রি করতেন। বর্তমানে এই অর্গানিক পণ্যের চাহিদা দেখে তার ব্যবসা তাকে কোটিপতি বানিয়েছে।
প্রশিক্ষণ দিয়েছেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে
রমেশ ভাইয়ের ক্রমবর্ধমান অর্জন দেখে আশেপাশের গ্রামের কৃষকরাও তার কাছে প্রশিক্ষণ নিতে আসতে শুরু করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ পর্যন্ত তিনি ২৩টি দেশের ১০ হাজার মানুষকে গরু পালন ও জৈব চাষের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন । তার কাছ থেকে গায়ের দেশি ঘি তৈরি করা শিখছে কৃষকরা। রমেশভাই রূপরেলিয়া আজকের তারিখে জৈব চাষের পাশাপাশি 'শ্রী গির গৌ কৃষি জাতি সংস্থা' নামে একটি গোয়ালঘর চালাচ্ছেন ।
আরও পড়ুনঃ ব্যবসায়িক ধারণা: খড়ের সমস্যা থেকে মুক্তি পান, উপার্জন করুন মোটা অঙ্কের টাকা