পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার কামনারা ব্লকের কৃষক শঙ্কর বেড়া, টমেটো চাষ করে আজ সাফল্য অর্জন করেছেন। কৃষি জাগরণের টিম এই সফল কৃষকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি তার সাফল্যের চাবিকাঠির হদিশ দিয়েছেন অন্যান্য কৃষকদের উদ্দেশ্যে। কথা প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, কৃষিকাজ তিনি পারিবারিক সূত্রে করে থাকেন।
মূলত টমেটো চাষ (Tomato Cultivation) করলেও পাশাপাশি আরও অনেক সবজী যেমন, বেগুন, নিম, ধনে, উচ্ছে, মুলো, ব্রকোলি, গাজর, ওলকপি ইত্যাদির চাষ করেন তিনি। প্রায় ১৫ শতক জায়গা জুড়ে আবাদকার্য করেন কৃষক শঙ্কর বেড়া । তবে কৃষিকাজ করতে গিয়ে ফসল সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন তিনি, ফলত চাষের পথে আসে অন্তরায়।
এই কৃষক আমাদের জানিয়েছেন, এমতাবস্থায় তিনি সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করেন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের সঙ্গে। কোন সময়ে কোন কোন ফসলের বীজ কীভাবে বপন করতে হবে, কি কি সার কতটা পরিমাণে প্রয়োগ করতে হবে ফসলে, কোন ওষুধ প্রয়োগে উদ্ভিদ ভালো হবে, রাসায়নিক ছেড়ে জৈব পদ্ধতিতে চাষ, রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের ইত্যাদি সকল পরামর্শে তিনি চাষে আজ লাভের মুখ দেখেছেন।
চাষ পদ্ধতি (Cultivation Method) :
এই কৃষক জানিয়েছেন, তিনী শীতকালীন টমেটোর চাষ করেছিলেন। প্রায় সব ধরনের মাটিতেই এই শীতকালীন টমেটো চাষ করা যায়। তবে বেলে দোঁ-আশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী। কার্তিকের শেষ সপ্তাহ থেকে অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহ (নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ) চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। তবে অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি পর্যন্ত- ২০-২৫ দিনের চারা লাগানো যায়। জমি চাষ সম্পন্ন হলে ভূমি হতে ১০-১৫ সেমি উঁচু বেড তৈরি করে বেডের চারপাশে জল নিকাশের ব্যবস্থা রাখতে হয়। সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৫০ সেমি এবং চারা হতে চারার দূরত্ব হবে ৫০ সেমি।
পরিচর্যা (Crop Care) :
চারা লাগানোর পর আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী দিয়ে জমির মাটি ঝুরঝুর করে দিতে হবে এবং হাল্কাভাবে আগাছাগুলো পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। ভালো ফলন ও নিখুঁত ফল পেতে টমেটো গাছে ঠেকনা দেয় প্রয়োজন। প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির সার প্রয়োগের আগে পার্শ্বকুশি ছাঁটাই করে দিতে হয়। এতে পোকামাকড় ও রোগের আক্রমণ কম হয় এবং ফলের আকার ও ওজন বৃদ্ধি পায়। নিড়ানি দিয়ে জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে।
সর্বশেষে সফল কৃষক শঙ্কর বেড়া আমাদের যা জানিয়েছেন, তা হল আর.এফ- এর বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী, অতি স্বল্প খরচে উদ্ভিদে পরিচর্যা করা যায়। তিনি সেখানকার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী, নিমপাতার নির্যাস, গোবর, গো মূত্র এবং অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে জৈব কীটনাশক প্রস্তুত করেন এবং তা ফসলে স্প্রে করেন। এই সার অল্প পরিমাণে প্রয়োগ করলেই সমগ্র বাগানের ফসল পরিচর্যা করা যায়। এতে তার ফসলের ফলন এবং মান দুইই বেড়েছে। আর.এফ-এর পরামর্শে চাষ করে আজ তিনি একজন সফল কৃষক।
আরও পড়ুন - Profitable Animal Husbandry – গ্রামের ক্ষুদ্র কৃষক পশুপালন করে আজ উপার্জন করছেন লক্ষাধিক অর্থ
কোন ব্যক্তি যদি কৃষিকাজ জনিত সমস্যায় আর.এফ-এর পরামর্শ নিয়ে চাষ করতে চান, তাহলে যোগাযোগ করুন নিম্নে উল্লিখিত নম্বরে –
হেল্পলাইন নম্বর ১৮০০-৪১৯-৮৮০০
আরও পড়ুন - Success Story - আধুনিক পদ্ধতিতে আখ চাষ করে মধ্যপ্রদেশের এই কৃষক আয় করছেন লক্ষাধিক অর্থ