দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার মথুরাপুর-২ ব্লকের নগেন্দ্রপুর গ্রামের কৃষিজীবী পরিবারের গৃহবধূ - রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন এর সহযোগিতায় বাড়ির ২-কাঠা জমিতে পুষ্টি বাগান করে আজ অনেকটাই স্বনির্ভর। দারিদ্রতার কারণে সপ্তম শ্রেণী পাশ করার পর বাসন্তীর আর পড়াশোনা হয়নি | ১৮ বছর বয়সে বিবাহ হয় কৃষজীবি পরিবারে। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে ছয় সদস্যের পরিবার সম্পূর্ণ ভাবেই কৃষির উপর নির্ভরশীল।
গত বছর কোভিড পরবর্তী কালে জীবন জীবিকা-র ক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে মানুষ যখন গৃহবন্দী, সেই সময় রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ধারাবাহিকভাবে নিমপীঠ কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের সাথে যৌথ উদ্যোগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলায় পর্যায়ক্রমে মহিলা কিষাণ দের নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়াল ট্রেনিং-এর আয়োজন করে। সৌভাগ্যবশতঃ ফাউন্ডেশনের কর্মী অনিন্দ্য কুমার মন্ডল -এর সহযোগিতায় বাসন্তী এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান। কৃষিবিজ্ঞানী ড:মানসী চক্রবর্তী-র কাছ থেকে বাসন্তী ঘরোয়া পুষ্টি বাগান তৈরির বিষয়টি বিস্তারিতভাবে জানার পাশাপাশি বাড়িতে ফেলে দেওয়া আবর্জনা এবং আনাজ এর খোসা থেকে জৈব সার তৈরির খুঁটিনাটিগুলিও শিখে নেনে।
এর পাশাপাশি ফাউন্ডেশনের নিঃশুল্ক হেল্পলাইন নম্বর ১৮০০ ৪১৯ ৮৮০০ থেকেও প্রয়োজনমতো তথ্যের আদানপ্রদান করেন। মানসী ম্যাডামের প্রশিক্ষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং হেল্পলাইনের সাহায্যে আজ বাসন্তী বাড়িতে দুই কাঠা জমিতে পুষ্টিকর সবজি বাগান তৈরির পাশাপাশি সেখানে কিছু ফলের গাছও রোপন করেছে এবং রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করছে। পারিবারিক খাদ্যের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি কিছু উদ্বৃত্ব সবজি বাজারেও বিক্রি করে নিয়মিত আয় করে বাসন্তী আজ অনেকটাই স্ব-নির্ভর। শুধু তাই নয়, নাগেন্দ্রপুর গ্রামের অন্যান্য মহিলা কিষাণদের-ও হাতে কলমে সবজি বাগান তৈরির কৌশলগত দিক গুলিতে সাহায্য করছে।
আরও পড়ুন -Periphyton based aquaculture: মাছ চাষে পেরিফাইটন পদ্ধতিতে উৎপাদন বাড়বে তিনগুন
রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ও নিম কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে মানসী বলেন " আমাদের মতো গ্রাম বাংলার মহিলাদের কাছে আধুনিক কৃষির বিষয়গুলি একেবারেই অধরা, রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন এর প্রশিক্ষণ এবং হেল্পলাইন পরিষেবা এই অভাব আজ অনেকটাই দূর করেছে। যখনি কোনো প্রয়োজন হয় আমরা ফাউন্ডেশনের অভিজ্ঞ কৃষি বিজ্ঞানীদের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করি"। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন পরিবার এভাবেই বাংলার অগণিত কৃষিজীবী পরিবারের পাশে থেকে দৃঢ় করছে কৃষি অর্থনীতি।
বাসন্তী পাল আজ নিতান্তই কৃষক বোনদের অনুপ্রেরণা | তাকে দেখে আরও অনেকে এগিয়ে আসবেন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন থেকে কৃষি প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে | এতে গ্রামীণ অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়াবে ও বেকারত্ব ঘুচবে |
তথ্যসূত্র: অনিন্দ্য কুমার মন্ডল, রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন
আরও পড়ুন -Pearl farming guide: মুক্ত চাষে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেন কৃষক মোয়াজ্জেম