এই এক রত্তির নাম দিব্যজ্যোতি চেটিয়া। আসামের প্রত্যন্ত গ্রাম তিনসুকিয়া জেলার বাসিন্দা। বয়স ১০ বছর। কৃষক ধনিরাম চেটিয়ার ছেলে। ছোট থেকেই গাছের সঙ্গে এক নিবিড় টান এই এক রত্তির। পেঙ্গেরির একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে অধ্যয়নরত এই খুদে। স্কুল ছুটির পর তাঁর খেলার সঙ্গী এই খামার। স্কুলে ছুটির ঘণ্টা বাজলেই তাঁর একমাত্র ঠিকানা এই খামার। তাঁর বাবা জানান দিব্যজ্যোতি প্রায়ই স্কুল ছুটির পরে বাড়ি থেকে 5-6 কিলোমিটার দূরে খামারে চলে যায়। তাদের সাথে বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে।
দিব্যজ্যোতি দিনের বেশিরভাগ সময় তাঁর বাবার সঙ্গে কাটায়। বাবা যেহেতু কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত তাই ছেলেরও একই জিনিসের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে। গ্রামাঞ্চলে দেখা যায় ছেলেরা তাঁর বাবাকে কাজে সাহায্য করে। শিশুরা তাদের পিতামাতার সঙ্গ পছন্দ করে। পিতামাতার জীবিকার সাথে একীভূত হয়। তাই দিব্যজ্যোতির ক্ষেত্রেও অন্যথা হয়নি। ধনীরাম চেটিয়া আসামে নতুন ধারণা নিয়ে চাষ করছেন। ছোট্ট দিব্যজ্যোতি তার বাবার কৃষি কাজের প্রত্যক্ষদর্শী। তাই জন্মের পর থেকেই মাটি, গাছ, পশু পাখির সঙ্গে তাঁর নিবিড় সংযোগ। ছোট্ট দিব্যজ্যোতির কথোপকথন প্রকৃতির প্রতি তার আকাঙ্ক্ষা এবং পাখির প্রতি তার ভালোবাসাকে প্রতিফলিত করে।
জন্মদিনে কেক কাটার পরিবর্তে এই খুদে তাঁর খামারে গাছ লাগিয়ে এই দিনটি উদযাপন করে। এই এক রত্তির কথা আর কাণ্ড কারখানা শুনলে আপনিও চমকে যাবেন। কেক কাটার পরিবর্তে গাছ লাগানোর এই পরিকল্পনার কথা জিজ্ঞেস করলে তাঁর উত্তর “ আপনি যদি ৩০০ টাকায় কেক কিনে খান তাহলে একদিনেই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা যদি একটি ফলের গাছ লাগাতে পারি, তাহলে তার ফল আমরা দীর্ঘদিন খেতে পারি। আকাশের পাখিরা গাছে তাদের বাসা বাঁধবে।“
আরও পড়ুনঃ গরু পালন থেকে বছরে লক্ষাধিক আয়, এই সাফল্যের গল্প মুগ্ধ করবে আপনাকে
এই বয়সে এত স্বচ্ছ এবং উদার ধারণার উৎস কি? কীভাবে জানল এত সুন্দর সুন্দর কথা জানতে চাইলে এই এক রত্তির উত্তর, “ “আমি ছোটবেলা থেকেই বাবাকে অনুসরণ করে আসছি। এভাবেই বাবার কাছ থেকে শিখেছি।“
দিব্যজ্যোতির বাবা ধনিরাম চেটিয়া মনে করেন, দিব্যজ্যোতির বড় হয়ে কৃষি কর্মকর্তা বা কৃষি বিজ্ঞানী হওয়া উচিত। কিন্তু এই ক্ষুদে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি যে সে বড় হয়ে কী হবে। তবে বাবার স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করবে সে । পাশাপাশি সেনাবাহিনিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে আছে এই এক রত্তির।