কৃষিজাগরন ডেস্কঃ এই জাতের মাশরুম ঝিনুকের মতো দেখতে বলে, একে ঝিনুক ছাতু( Oyster mushroom) বলা হয়। এটি ধিংরি ছাতু নামেও পরিচিত। বিভিন্ন রঙের ঝিনুক ছাতু রয়েছে। যার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হল (১) কালচে সাদা, (২) দুধ সাদা, (৩) গোলাপি, (৪) হলুদ ইত্যাদি। ঝিনুক ছাতুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য ২০-২৮ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন। অত্যধিক গরম (জ্যৈষ্ঠ- ভাদ্র মাস) ছাড়া সারা বছরই দক্ষিনবঙ্গে এই মাশরুম চাষ করা যায়।
চাষের জায়গাঃ
ঝিনুক তথা যেকোনো ছাতু চাষ করার জন্য ছায়াযুক্ত জায়গা প্রয়োজন। মাশরুম ঘরের মধ্যে আর্দ্রতা পরিমাণ বেশি থাকতে হবে এবং বাতাস চলাচল স্বাভাবিক থাকতে হবে। মাশরুম যেখানে চাষ হচ্ছে, সেখানে কোনো সময় যেন সরাসরি সূর্যের আলো বা বৃষ্টির জল না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
চাষের উপকরনঃ
১. ধান বা গমের খড়, ২. বড় গামলা বা ড্রাম, ৩. স্পন(বীজ), ৪. পাতলা পলিথিনের ব্যাগ (১৬ x ১৮ ইঞ্চি মাপ), ৫. দড়ি, ৬. বাঁশের মাচা, ৭. পরিস্কার জল, ৮. স্প্রে মেশিন, ৯. জীবাণুনাশক (প্রয়োজনে)।
আরও পড়ুনঃ কেন মাশরুম চাষ করবেন?
চাষ পদ্ধতিঃ
দেশী আমন ধানের সোনালী রঙের লম্বা খড় মাশরুম চাষের জন্য সব থেকে ভালো।এগুলি কয়েকদিন রোদে রেখে ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে যাতে কোন কাঁচা/সবুজ খড় না থাকে।
আরও পড়ুনঃ ইউটিউব দেখে কৃষক এই ব্যবসা শুরু করেছিলেন, এখন আয় করছেন লাখ লাখ টাকা
খড়গুলি ১-২ ইঞ্চি লম্বা করে কেটে, ওষুধ মিশ্রিত জলে ১০-১২ ঘণ্টা সম্পূর্ণ নিমজ্জিত অবস্থায় ডুবিয়ে রাখতে হবে প্রতি ১০ লিটার জলে ৩ গ্রাম ব্যাভিস্টিন ও ২৫ মিলি ফরমালিন লাগে। সাধারনত কাটা খড় পাতলা নাইলনের বস্তায় ভর্তি করে বড় গামলা/ ড্রামে ডুবিয়ে রাখা হয়। নির্দিষ্ট সময়ের পর বস্তা ভর্তি খড় তুলে নিয়ে কোনো উঁচু যায়গা থেকে ঝুলিয়ে বাড়তি জল ঝরিয়ে নেওয়া হয়।কম খড় থাকলে, ভিজে খড় গুলো জল থেকে তুলে ঝুড়িতে ভরে বাড়তি জল ঝরিয়ে নিতে হবে।
বাড়তি জল ঝরে যাওয়ার পর ভেজা খড়ে অতিরিক্ত জল আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে। দুই হাতে যতটা খড় ধরে তা নিয়ে জোরে মুঠো করার পর খড় থেকে যদি জল বেরিয়ে মুঠোর ফাঁকে ফোঁটার আকারে দেখা জায়, কিন্তু না পড়ে তাহলে জলের মাত্রা সঠিক। নতুবা পরিস্কার জায়গায় ভেজা খড় পাতলা করে মেলে রেখে দিতে হবে এবং মাঝে মাঝে নেড়ে দিতে হবে । জলের মাত্রা ঠিক হলে বীজ মেশাতে হবে।