ধুতুরা স্ট্রামোনিয়াম, যার সাধারণ নাম কাঁটা ফল, জিমসনওয়েড (jimson weed) বা ডেভিলস স্নেয়ার নামেও পরিচিত। ধুতুরা (Datura), দেশের নানা স্থানে ঝোপেঝাড়ে এই গাছের দেখা মেলে৷ বিভিন্ন রোগের উপশমে এই গাছ অনেক কাজে লাগে৷ এর কাণ্ড ৬০-১৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে৷ এর ফুলগুলি বেশিরভাগ সাদা রঙের হয়৷ এই ধুতুরার বীজ থেকে তেল তৈরি হয়, যা বাণিজ্যিকভাবে দেখতে গেলে লাভজনক৷ এর পাতার চাহিদা প্রচুর৷ তবে এর ঔষধি গুন (Medicinal Plant) যেমন রয়েছে তেমনই এটি বিষাক্তও৷ তাই এর চাষ এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়৷
মাটি (Soil preparation) -
যে কোনও ধরণের মাটিতেই এই গাছের চাষ হতে পারে, তবে দোআঁশ মাটিতে এর চাষের জন্য সবথেকে উপযুক্ত বলে মনে করা হয়৷ ধুতুরার চাষে সবথেকে বেশি প্রয়োজন সূর্যকিরণ৷ ধুতুরা চাষের আগে জমি ভালো করে কর্ষণ করে নিতে হবে৷ প্রয়োজনে জৈব সার ব্যবহার করতে পারেন৷
চাষের সময় (Cultivation method) -
সাধারণত গরমের সময় এর চাষ করা হয়ে থাকে৷ বপনের আগে বীজ ১২ ঘন্টা জলে ভিজিয়ে রাখতে হয়৷ এতে অঙ্কুরোদ্গম প্রক্রিয়া সহজ এবং দ্রুত হয়৷ ধুতুরা চাষে সেচকার্যের বিশেষ প্রয়োজন হয় না৷ দু সপ্তাহ অন্তর অন্তর জলসেচ করা যেতে পারে৷ তবে বর্ষাকালে চাষের (Monsoon Farming) জমিতে যেন জল না জমে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে৷
তবে এই ধুতুরা বিষাক্ত হওয়ায় এর চাষে (Datura Farming) যত্ন এবং সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়৷
এই ধুতুরার উপকারিতা (Benefits of Datura) সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যাক -
১) গাঁটে ব্যথার উপশমে ধুতুরার ব্যবহার করা হয়৷ এর পাতা এবং রস ব্যথআ কমাতে খুবই সাহায্য করে৷
২) কানের প্রদাহ সারাতে এই ধুতুরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷ এর পাতার রস মূলত কানের প্রদাহ সারাতে ব্যবহার করা হয়৷
৩) কাঁকড়াবিছের কামড়ে উপশমে সাহায্য করে ধুতুরা৷
৪) চোখের ব্যাথাতে ধুতুরা পাতার রস এবং নিম পাতার রস মিশিয়ে লাগালে উপশম পাওয়া যায় বলে দাবি করা হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ধুতুরার ব্যবহার করা উচিত হবে না৷
৫) ধুতুরার বীজ জ্বর, সর্দি কমাতে সাহায্য করে, এবং কফ কমাতেও সাহায্য করে৷
আরও পড়ুন - Organic Fertilizer Benefits – জৈব সার প্রয়োগে চাষ করে ফসলের দ্বিগুণ ফলন
ধুতুরা সংগ্রহ -
জুলাই মাসে এটি প্রথমবার সংগ্রহ করা যেতে পারে এবং দ্বিতীয়বার সংগ্রহ করা যেতে পারে অক্টোবর মাসে৷ পাতা, শাখা সংগ্রহের পর তা তা শুকিয়ে নেওয়া হয়৷
ধুতুরার বহুবিধ ব্যবহার থাকলেও এটি বিষাক্ত হওয়ায় খুব সাবধানে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এটি ব্যবহার করা উচিত৷ তবে এর ঔষধি গুনের কারণে বাজারে এর চাহিদাও রয়েছে৷ তাই বাণিজ্যিক লাভের কারণে অনেকেই ধুতুরার চাষ করে থাকেন৷