বর্তমান উন্নত প্রযুক্তির যুগে ড্রোনের সাহায্যে কৃষিজমিতে কীটনাশক ছড়ানোর একটি নতুন ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। ড্রোন পরিচালিত Unmanned Aerial Vehicle (UAV) নামক যন্ত্রটির শূন্যে উঠে কৃষিজমিতে কীটনাশক ছেটানোর ক্ষমতা রয়েছে। শুধুমাত্র কীটনাশক ছেটানোই নয়, এই যন্ত্রটি কৃষিজমিকে উপর থেকে পর্যবেক্ষণ করে বিভিন্ন বিষয়ের হালহাকিকত জানতে পারে এবং সেই তথ্যকে খুব দ্রুত চালান করতে পারে। এই যন্ত্রটিকে আঞ্চলিক ও স্থানীয়ভাবে কৃষিক্ষেত্রের উন্নতির জন্য জমি ও ফসল-এর স্বাস্থ্য নিরীক্ষণ, ফসলের বৃদ্ধি, ধরণ, কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে তার ভবিষ্যৎবানীকরণ, ফসল কাটার পরবর্তী সময় জমির অবস্থা, ফসলবীমা যোজনার নীতি অনুসারে ক্ষতিগ্রস্থ ফসলের ক্ষতিপূরণ নির্ণয় ইত্যাদি কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রেও কাজে লাগানো যেতে পারে।
ড্রোনকে কীটনাশক ছড়ানোর কাজে ব্যবহার করা যাবে যাতে করে ফসলের রোগভোগ ছড়িয়ে পড়ার থেকে রক্ষা করা যেতে পারে। এতে অনেকখানি জমিতে মাত্র আধঘন্টার মধ্যে কীটনাশক ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এছাড়াও প্রতি গাছ থেকে কত সংখ্যক ফলন কর্ষণযোগ্য হলো তার সংখ্যা ও পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারে এই ড্রোন, এর ফলে চাষি খুবই সহজে জানতে পারবে যে প্রতি গাছ থেকে ঠিক কতখানি ফলন তোলা যাবে। এক্ষেত্রে চাষিদের বহুমূল্য সময় বেঁচে যেতে পারে এবং চাষি খুব দক্ষতার সাথে চাষ করতে পারে। এই ড্রোনকে বিভিন্ন উদ্যান চাষে বা ফুলচাষের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যায়। উঁচু গাছগুলি যেমন নারকেল, তাল ইত্যাদিতে ঠিকঠাক নজর দেওয়া সম্ভব হয় না, সেখানে তাদের পরিচর্যা ও রোগভোগের ক্ষেত্রে ড্রোন নজরদারি করতে পারে, কারণ এর মধ্যে অত্যন্ত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। সেই কারণে ড্রোন এই সব গাছগুলির রোগগ্রস্ত অঙ্গে কীটনাশক ছেটানোর কাজ করতে সক্ষম। এই উরন্ত যন্ত্রটি তার থার্মাল সেন্সর এর সাহায্যে ফসলের গুণমান নির্ধারণে করতে পারে। এই সমস্ত উচ্চ ও নিবিড় গুণাবলী থাকার কারণে এই ড্রোন পরিচালিত UAV কৃষিকার্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পৃথিবীর বহু দেশ এখন থেকে ড্রোনকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা শুরু করেছে। ভারতে একমাত্র অন্ধ্রপ্রদেশেই প্রথম কৃষিক্ষেত্রে কীটনাশক ছড়ানোর কাজে ড্রোনকে ব্যবহার করতে পারে।
- প্রদীপ পাল