বাংলাদেশের ৩০টি গ্রামের ৪০০ চাষি বাণিজ্যিকভাবে প্রতিবছরই বরবটি চাষে সফলতা পেয়ে আসছেন । কিন্তু প্রায় দেড় যুগ ধরে বরবটি চাষে ব্যাপক সফলতা থাকলেও জল সেচের সংকট এবং সরকারি প্রণোদনা না থাকায় বরবটি চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা । গত বছরের তুলনায় এ বছর অর্ধেকেরও কম জমিতে বরবটির চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ও বরমচাল ইউনিয়নে ২০ হেক্টর কৃষিজমিতে বরবটি চাষ হয়েছে। এ অঞ্চলে চায়নিজ, কেগোর নাটকি, লাল বেনি জাতের বরবটি চাষ করা হয়। ২০২১ সালে ৪৫ হেক্টর জমিতে এবং ২০২০ সালে ৪০ হেক্টরে বরবটি চাষ হয়েছিল। এক বিঘা জমিতে দুই টন বরবটি ফলন হয়।
আরও পড়ুনঃ বৈশাখ মাসে পাট চাষ করবেন যেভাবে
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ফসল আবাদের দুই মাস পর ফলন ভালো হলে এক দিন পরপর ১ বিঘা থেকে ১০ থেকে ১২ মণ বরবটি সংগ্রহ করা যায়। প্রতিদিন একেকজন চাষি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার বরবটি পাইকারি বিক্রি করেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারি ক্রেতারা উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার-বরমচাল সড়কে অবস্থিত শ্রীপুর মাদ্রাসা বাজারে বরবটি কিনতে আসেন। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ওই এলাকায় অস্থায়ী বরবটির পাইকারি হাট বসে। চলতি বছর পাইকারেরা এসে ৩০-৩২ টাকা কেজি দরে বরবটি কিনে নিয়ে যান।
বরমচালের পশ্চিম সিঙ্গুর গ্রামের বাসিন্দা খোর্শেদ আলম বলেন, ‘আড়াই বিঘা জমিতে বরবটি চাষ করেছি। প্রায় ৩০ বছর ধরে এই চাষাবাদ করে আসছি। চলতি বছরে বরবটি চাষে প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। পোকার আক্রমণ ও অতিরিক্ত তাপে অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে। সেচব্যবস্থা ও কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পরামর্শ পেলে উপকার পেতাম।’
আরও পড়ুনঃ রেশম চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন এই গ্রামের ১৩০টি পরিবার
স্থানিয় সুত্রে জানা যায়, এক দিন পর পর ছয়-সাত মণ বরবটি পাইকারি বিক্রি করেন। এ বছর দাম ভালো। তবে ফলন অনেক কম হয়েছে। বরবটি চাষে খরায় জলের অভাবে ও পোকার আক্রমণে ক্ষতি অনেক হয়েছে।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, পৌষ মাস থেকে বৈশাখ পর্যন্ত তুলনামূলক বৃষ্টি কম হওয়ায় জলের সংকট দেখা দিয়েছে । সরকারিভাবে এসব এলাকায় সেচের জন্য নলকূপ ও পাম্প দেওয়া হলে চাষিদের সেচসংকট কাটবে। যদিও এ বছর কম জমিতে বরবটি আবাদ হয়েছে।