ভাত-ডালের সঙ্গে একটুকরো পেঁয়াজ না হলে বাঙালির মন গলে না। ঝাঁঝযুক্ত এই সবজি খাওয়া অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর সাথে সাথে এই সবজি ত্বক এবং চুল ভালো রাখতেও সাহায্য করে। পেঁয়াজ আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে চাষ হয়। মূলত গরমকালে পেঁয়াজ চাষ পশ্চিমবঙ্গে বহুল পরিমাণে হয়।
উপযুক্ত জলবায়ু এবং মাটি: (climate and Soil)
নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু পেঁয়াজ চাষের উপযুক্ত আবহাওয়া। পেঁয়াজ চাষে বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন। পেঁয়াজ চাষের জন্য গড় তাপমাত্রা দরকার যথাক্রমে ১৩-২৪ ডিগ্রী ও ১৬-২৫ ডিগ্রী।
জৈব পদার্থে পরিপূর্ণ মাটিতে পেঁয়াজ চাষ করতে হবে। আগাছামুক্ত ক্ষেতে পেঁয়াজ চাষ করা উচিত। এই চাষ বালিমাটি, এঁটেল মাটি, কাদামাটি, পাথুরে মাটি যেকোনো মাটিতে করা যায়। পেঁয়াজ চাষের ক্ষেত্রে মাটির pH-এর মান থাকতে হবে ৬.০-৭.৫ মাত্রার আশেপাশে, কারণ এই চাষের জন্য মাটি কিছুটা ক্ষারকীয় হতে হয়।
বীজ বপনের সময়কাল (palnting time)
পেঁয়াজের বীজ বপন জুন মাসের মাঝামাঝি সময় করা উচিত। মার্চমাসের মাঝের থেকে পেঁয়াজ চাষের জমি তৈরী করতে হবে।
চাষের মাটিকে বীজ বসানোর আগে ৫ থেকে ৬ বার লাঙল মেরে নিতে হবে যাতে মাটির ডেলাগুলি ভেঙ্গে যায়। মাটি গুঁড়ো হওয়ার ফলে মাটির জলধারণের ক্ষমতা বাড়বে। চারা প্রতি মাঝের দূরত্ব রাখতে হবে ৩০ সেমি। যাতে জমে থাকা জল ফাঁকা জায়গা দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারে। পিঁয়াজের নার্সারিবেড সূর্যের অতিরিক্ত রোদ থেকে বাঁচাতে হলে, পলিসেড দিয়ে তা ঢেকে দিতে হবে।
সার প্রয়োগ (Fertilizer)
পিঁয়াজ চাষের জন্য একর প্রতি ২০ টন জৈব সার, ৯০ কেজি ইউরিয়া সার ও ২০ কেজি পটাশিয়াম পেন্টাক্সাইড বা ১২৫ কেজি সিঙ্গেল সুপার ফসফেট এবং ২০ কেজি পটাশিয়াম অক্সাইড বা ৩৫ কেজি মিউরিটস অব্ পটাশ প্রয়োগ করা উচিত। পুরো সারের অর্ধেক চারা স্থানান্তরের আগে প্রয়োগ করতে হবে আর বাকি সার চারা স্থানান্তরের চারমাস পরে দিতে হবে।
চারা স্থানান্তরিতকরণ পদ্ধতি:
চারার বয়স ৬-৮ সপ্তাহ ও উচ্চতা ১৫ সেমি হলেই চারাগুলিকে বীজতলা থেকে প্রধান ক্ষেতে পাঠাতে হবে। প্রতি চারার মাঝের দূরত্ব কম করে ২০ সেমি হওয়া উচিত। চারা স্থানান্তর হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জলসেচ দিতে হবে। সন্ধ্যাবেলার দিকে এই ছাড়া স্থানান্তর করা উচিত, যখন সূর্যের আলো কম থাকে।
আরও পড়ুন: Mixed Farming Procedure: মিশ্র চাষ করে লাভবান হতে হলে, জেনে নিন এই ক'টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
ফসল তোলা (Harvest)
ডিসেম্বর মাস নাগাদ মূলত ফসল তোলা হয়। এই ফসলের তেমন রোগপোকা না হওয়ায়, এর নষ্ট হওয়ার কোনও সম্ভাবনা থাকে না। তবে আর্দ্রতাজনিত কারণে বহু সময় পেঁয়াজ খারাপ হয়ে যায়। সবে সবে তোলা হয়েছে এমন পিঁয়াজকে তাইবা শুকনো রাখার জন্য সবসময় আলোব বাতাস যাতায়াত করে এমন গুদামঘরে রেখে দেওয়া উচিত। আলো-বাতাস পূর্ণ ঘরে পেঁয়াজ থাকলে তা পচার সম্ভাবনা থাকে না।
আরও পড়ুন:Pearl millet Farming in India মিলেট হিসাবে বাজরা চাষ