যদিও 'পুষ্পা' ছবিতে অবৈধ চন্দন কাঠের চোরাচালানের গভীর আভাস দিয়েছে, সেখানে চন্দনের বৈধ চাষ কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে। এটি শুধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিই আনে না, আমাদের পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও রক্ষা করে। কৃষকরা যদি সঠিক প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ নিয়ে চাষ করেন তাহলে এই চাষ তাদের অর্থনৈতিক অবস্থাকে শক্তিশালী করতে পারে। চন্দন গাছ শুধু লাভই দেবে না দেশের সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায়ও সাহায্য করবে। চন্দন কাঠ, যা ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, এখন কৃষকদের জন্য একটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে৷ পূজা, আয়ুর্বেদ, প্রসাধনী ও সুগন্ধি দ্রব্যে উপযোগী এই গাছ এখন কৃষিকাজেও আয়ের বড় উৎস হয়ে উঠছে।
যদি দেখা যায়, ভারতীয় বিজ্ঞানীরা নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে চন্দন কাঠের চাষকে উত্তর ভারতের জলবায়ুর উপযোগী করে তুলতে সফল হয়েছেন । এই উদ্যোগ শুধু কৃষকদের অর্থনৈতিক সুবিধাই দেবে না, দেশে চন্দন কাঠের উৎপাদনও দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
চন্দন কাঠের গুরুত্ব
ভারতীয় সংস্কৃতিতে চন্দন কাঠের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। দেশে সাদা ও লাল চন্দন উভয়েরই চাষ হয়। এই দুটি চন্দনের দাম বেশ চড়া। এগুলি বিশেষ করে তিলক, প্রতিমা তৈরি, ধূপকাঠি, সুগন্ধি এবং অ্যারোমাথেরাপির জন্য পূজায় ব্যবহৃত হয়। আয়ুর্বেদে চন্দন থেকে অনেক ধরনের ওষুধ তৈরি করা হয়। বাজারে চন্দন কাঠের দাম খুব বেশি এবং চাহিদাও প্রচুর।
লাভজনক চাষ
চন্দন গাছ যত পুরনো হয় বাজারে তার দাম তত বাড়ে। একটি 15 বছর বয়সী গাছের দাম 70,000 টাকা থেকে 2,00,000 টাকা পর্যন্ত হতে পারে। একজন কৃষক যদি 50টি গাছ লাগান, তাহলে তিনি 15 বছরে 1 কোটি টাকা পর্যন্ত লাভ করতে পারেন। গড় আয় প্রতি বছর 8 লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। একটি কন্যা বা পুত্রের জন্মের দিনে যদি ঘরে 20টি চন্দনের চারা রোপণ করা হয় তবে তাদের বিবাহ পর্যন্ত তাদের খরচ সহজেই মেটানো যায়।
আরও পড়ুনঃ ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় কলার ফসল রক্ষা করুন এই সহজ পদ্ধতিতে, উৎপাদন বাড়বে কম খরচে
চন্দন কাঠের বৈশিষ্ট্য
চন্দন একটি পরজীবী উদ্ভিদ। এর মানে হল যে এটি নিজের খাবার নিজে তৈরি করতে পারে না। বেঁচে থাকার জন্য অন্য কোনো উদ্ভিদের শিকড় থেকে পুষ্টি গ্রহণ করতে হয়। অতএব, চন্দন গাছের ভাল বৃদ্ধির জন্য, এটির সাথে অন্য কিছু সহায়ক উদ্ভিদ রোপণ করা বাধ্যতামূলক। চন্দন কাঠের শিকড় কাছাকাছি গাছের শিকড়ের সাথে সংযোগ করে তাদের পুষ্টি পায়। চন্দন গাছ ভালোভাবে বাড়তে 15 বছর সময় লাগে, তবে এই সময়ে কৃষকরা অন্যান্য ফলের গাছ লাগিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করতে পারে।
চন্দন চাষের টিপস
লাল, বেলে, বা এঁটেল মাটি চন্দন চাষের জন্য উপযোগী, তবে লাল মাটি সবচেয়ে ভালো বলে বিবেচিত হয়। জৈব সার তার ফলন বাড়ায়, এবং গাছপালা শুরুতে আরো যত্ন প্রয়োজন। আগাছা নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। এই গাছটি 15-20 বছরের মধ্যে প্রস্তুত হয়, যার শিকড় এবং কাঠ অত্যন্ত সুগন্ধযুক্ত। বাজারে এর দাম বেশ চড়া।