উত্তর ভারতের অনেক রাজ্যে এখনও পর্যন্ত বর্ষার আগমন ঘটেনি। উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, বিহার সহ অনেক রাজ্যে আশানুরূপ বৃষ্টি হয়নি। যার ফলে এসব রাজ্যে ধান চাষ ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে সঠিক বৃষ্টিপাত না হলে কৃষকদের আরও ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে।
আবহাওয়া দফতর সুত্রে, এখনও পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডে ৫১ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। জুলাই মাসের অর্ধেক পেরিয়ে গেলেও এখানে রোপনের কাজ শুরু হয়নি। এ বছর রাজ্যে ধানের বপনের হার ১০ শতাংশেরও কম।
ঝাড়খণ্ডের কৃষকরা সাধারণত ১৫ জুন থেকে বীজ বপনের জন্য তাদের ক্ষেত প্রস্তুত করে। তারপর বপন প্রক্রিয়া ১ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত চলতে থাকে। কিন্তু এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বপন কার্যক্রম পিছিয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে। এই খড়া ধান চাষের জন্য খুবই বিপজ্জনক। আগামী পাঁচ দিনে রাজ্যে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে ফলন ব্যাপক হারে কমে যাবে।
আরও পড়ুনঃ জলের অভাবে আমন ধান বুনতে পারছে না বাংলাদেশের কৃষকরা
রাজ্যের কৃষি বিভাগের তথ্য অনুসারে, বুধবার পর্যন্ত রাজ্যের ২৪টি জেলার মধ্যে ১৩টিতে ধান বপন শুরু যায়নি। সরকার এ বছর ১৮ লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে চাষের সিদ্ধান্ত নিলেও এখন পর্যন্ত মোট জমির মাত্র ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ ধান রোপন করা গিয়েছে। রাঁচির রাহে ব্লকের কৃষক খিরু মাহতো বলেন, জমিতে জলের অভাবে আমরা এখনও ধান বপন করতে পারিনি। বীজ বপনের মৌসুম প্রায় শেষ। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের সর্বনাশ হবে।
জুন ও জুলাই মাসে কম বৃষ্টির কারণে ঝাড়খণ্ডকে খরার সম্মুখীন হতে হয়েছে। ২০১৩, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালেও এই রাজ্যকে খরার সম্মুখিন হতে হয়েছিল। ২০১৩ সালে, ঝাড়খণ্ডে জুন মাসে 8 শতাংশের কম এবং জুলাই মাসে ৩৭ শতাংশ বৃষ্টিপাত হয়েছিল৷ ২০১৮ সালে, রাজ্যটি জুন মাসে ৩৫ শতাংশের কম এবং জুলাই মাসে ১৮ শতাংশের কম বৃষ্টিপাত হয়েছিল। ২০১৯ সালে, এই রাজ্যে জুন মাসে ৫৫ শতাংশ এবং জুলাই মাসে ২৫ শতাংশ বৃষ্টিপাতের ঘাটতি রেকর্ড করেছিল৷ এই বছর, রাজ্যটি জুন মাসে ৪৯ শতাংশ এবং ২০ জুলাই পর্যন্ত ৫১ শতাংশের ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে৷ ঝাড়খণ্ডে ১ জুন থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত ১৯২.৯ মিমি বৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশে লিচুর বিকল্প হয়ে উঠছে আশফল
রাজ্যের ছয়টি জেলা ৭০ শতাংশেরও বেশি বৃষ্টিপাতের ঘাটতির সম্মুখীন হচ্ছে, সাহিগঞ্জে ২০জুলাই পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৮২ শতাংশ বৃষ্টিপাতের ঘাটতি রেকর্ড করা হয়েছে। রাঁচি আবহাওয়া কেন্দ্রের ইনচার্জ অভিষেক আনন্দ বলেছেন যে আমরা আগামী পাঁচ দিন রাজ্যে ভাল বৃষ্টির আশা করছি। এ অবস্থায় কৃষকরা এর সুফল পাবেন। অন্যদিকে খরা মোকাবেলায় প্রস্তুতি শুরু করেছে কৃষি বিভাগ।