নাইট্রোজেনের তথা ইউরিয়া সারের অভাব
নাইট্রোজেনের অভাবে গাছের গোড়ার দিকে বয়স্ক পাতা এবং কান্ডের সবুজ অংশ হলুদ হয়ে যায়। অভাব তীব্র হলে পাতা মরে যায়। নাইট্রোজেনের অভাবে গাছে কুশির সংখ্যা কমে যায়, গাছের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায় এবং পাতা ছোট হয়ে যায়। এর অভাবে সালোকসংশেষণ হার কমে যায়; ফলে গাছে শর্করা উৎপাদন হ্রাস পায়। ধান গাছে আগাম পরিপক্বতা আসে, ফলে ফলন কম হয়।
ফসফরাসের তথা টিএসপি সারের অভাবজনিত লক্ষণ সমুহ
ফসফরাসের তথা টিএসপি সারের অভাবজনিত প্রধান লক্ষণ হলো - সীমিত সংখ্যক কুশি, সরু পাতা এবং গাঢ় সবুজ বর্ণের খাটো গাছ। এ সারের অভাবে কাণ্ড চিকন ও সুচের মতো হয় এবং গাছের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। পরিপক্বতা দীর্ঘায়িত হয় এবং মারাত্মক অভাবে অনেক সময় গাছে একেবারেই ফুল আসে না। শিষে পুষ্ট দানার সংখ্যা কমে যায়।
এম.ও.পি. বা পটাসিয়ামের অভাব
এম.ও.পি. বা পটাসিয়ামের অভাবে গাছের গোড়ার পাতায় বাদামি দাগ দেখা যায়। প্রাথমিক অবস্থায় পাতার আগার দিক হলদেটে কমলা রঙ ধারণ করে। পরে এ বিবর্ণ রঙ পাতার গোড়ার দিকে ছড়িয়ে পড়ে ফলে পাতা মরে বা শুকিয়ে যায়। গাছে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ বেশি দেখা যায়। শিষে অনেক সময় অনিয়মিতভাবে নেক্রোটিক দাগ দেখা যায় এবং চিটার হার বেড়ে যায়। ধান গাছ হেলে পড়ে।
সালফারের অভাব
সালফারের অভাবজনিত লক্ষণ নাইট্রোজেনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ; তবে পার্থক্য হলো নাইট্রোজেনের অভাবে প্রথমে গাছের পুরাতন পাতা হলুদ হয়ে যায় এবং সালফারের অভাবে গাছের নতুন গজানো পাতা হলুদ হয়। ধান গাছের উচ্চতা, কুশির সংখ্যা, শিষের আকার খাটো এবং প্রতি শিষে দানার সংখ্যা কমে যাওয়াসহ জমির ধান সাধারণত ১-২ সপ্তাহ পরে পাকে। বীজতলায় এর অভাব হলে চারা হলুদ হয়ে যায়।
দস্তার অভাব
চারা রোপণের ২-৪ সপ্তাহ পরে ধান গাছে দস্তার অভাব দেখা যায় এবং সে ক্ষেত্রে কচি পাতার গোড়া সাদা হয়ে যায়। পুরাতন পাতা মরচে পড়া বাদামি থেকে হলদে কমলা লেবুর মতো রঙ ধারণ করে। পাতার আকার ছোট ও সরু হয়। গাছের বৃদ্ধি সুষম হয় না। মাঠের মধ্যে স্থানে স্থানে উচ্চতার ভিন্নতা দেখে মনে হয় গাছগুলো মাঝে মাঝে বসে গেছে। গাছে রোগবালাইয়ের প্রকোপ বেশি দেখা যায়।
- রুনা নাথ