ঢেঁড়স একটি মালভেসী পরিবারের অন্তর্গত বর্ষজীবি উদ্ভিদ। এর উৎপত্তিস্থল ইথিওপিয়া, এটি মূলত ক্রান্তীয় এবং উপ-ক্রান্তীয় অঞ্চলে জন্মায়। ঢেঁড়স বা ভেন্ডি আমাদের দেশের একটি জনপ্রিয় সবজি। আমাদের দেশে বৃহৎ পরিসরে চাষ করা হয় এই সবজিটির। ঢেঁড়স মূলত শীতকালীন সবজী হলেও বর্তমানে এটি সারা বছরই চাষ করা যায়। ঢেঁড়শে প্রচুর পরিমাসে ভিটামিন এ, বি ও সি এবং এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমানে আয়োজিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে।
মাটি
ঢেঁড়স বিভিন্ন রকমের মাটিতে চাষ করা যায়। তবে দো-আশ ও বেলে দো-আশ মাটি ঢেঁড়শ চাষের জন্য ভালো । জল নিষ্কাশনের সুবিধা থাকলে এটেল মাটিতেও চাষ করা যায়। সঠিক নিকাশী সুবিধা পাওয়া গেলে এটি ভারী জমিগুলিতে ভাল জন্মাতে পারে। তবে মাটির পিএইচ ৬ থেকে ৬.৫ হওয়া উচিত। ক্ষার সমৃদ্ধ লনণাক্ত জমিতে ক্ষুদ্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেও ঢেঁড়স চাষ অনুপযোগী হয়ে উঠবে।
ঢেঁড়সের জাত
ঢেঁড়সের নানা রকম জাত বাজারে পাওয়া যায়। শাউনি, পারবনি কানি, বারি ঢেঁড়শ, পুশা সাওয়ানি, পেন্টা গ্রিন, কাবুলি ডোয়ার্ফ, জাপানি প্যাসিফিক গ্রিন চাষ উপযোগী জাত।
আরও পড়ুনঃ Ladies Finger Farming: জেনে নিন আধুনিক উপায়ে ঢেঁড়স চাষ পদ্ধতি
বীজ বপন
বীজ বপণের আগে ২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হয়। ফাল্গুন থেকে বৈশাখ মাসে বীজ বপনের জন্য সঠিক সময়। সারি করে বীজ বপণ করতে হবে । প্রতি শতকে ২০ গ্রাম এবং প্রতি হেক্টরে ৪-৫ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়।
রোগবালাই
ঢেঁড়শের ফল ছিদ্রকারী পোকাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। এছাড়া জাব পোকা, সাদা মাছি, ছাতরা পোকা, লাল গান্ধি ইত্যাদিও ক্ষতি করে। তাই গাছের বৃদ্ধির সময় নিয়মিত নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিস্কার করে দিতে হবে । অল্টারনারিয়া ছত্রাক দ্বারা আক্রমনের ফলে পাতার উপরে বিভিন্ন আকৃতির গোলাকার বাদামি রং পড়ে। রোগের মাত্রা বেশি হলে পাতা মুচড়িয়ে যায় এবং পরে ঝলসে ঝরে পরে।
আরও পড়ুনঃ
ফসল সংগ্রহ
বীজ বপনের ৬০ থেকে ৭০ দিনের পরে ঢেঁড়স তোলার জন্য প্রস্তুত হয়।ছোট ও নরম ঢেঁড়সগুলি বাছাই করে তুলতে হবে। সকালে এবং সন্ধ্যায় ঢেঁড়স তোলা উচিত। বীজ হিসাবে চাষাবাদে ফলন হয় ১০০-১৫০ কেজি/ হেক্টর।