‘চাখাও’, যে চালের গন্ধ-স্বাদ মুগ্ধ করে সকলকে, মণিপুরের সেই কালো চাল এবার পেল জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন(জিআই) ট্যাগ বা ভৌগোলিক স্বীকৃতি৷
কী এই জিআই ট্যাগ?
এই জিআই চিহ্ন নিৰ্দিষ্ট সামগ্ৰীর ভৌগোলিক অবস্থিতি বা উৎস অনুযায়ী নিৰ্ধারিত হয়। সামগ্ৰীর নিৰ্দিষ্ট গুণগত মানদণ্ডের বিশেষত্ব নিশ্চিত করে এই ভৌগোলিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়৷ উদাহরণ স্বরূপ পশ্চিমবঙ্গের জিআই স্বীকৃত সামগ্রী বা ফসলের উল্লেখ করা যেতে পারে৷ যেমন- দার্জিলিং চা, গোবিন্দভোগ চাল, তুলাইপাঞ্জি চাল, ডোকরা, ছৌ মুখোশ, পটচিত্র, সীতাভোগ, মিহিদানা, রসগোল্লা, জয়নগরের মোয়া প্রভৃতি৷ নিৰ্দিষ্ট অঞ্চলটিতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করার অধিকার এবং আইনি সুরক্ষা প্ৰদান করে এই জিআই ট্যাগ৷
আর এবার ভৌগোলিক স্বীকৃতি পেল মণিপুরের কালো চাল৷ মণিপুরের ‘কনসোর্টিয়াম অব প্রোডিউসারস অব চাখাও’ এই স্বীকৃতির জন্য আবেদন জানায়৷
চাখাও চালের প্রকারভেদ-
মণিপুর স্মল ফার্মারস এগ্রি বিজনেস কনসোর্টিয়াম-এর মতে, চাখাও আমুবি এবং চাখাও পোইরিটন, এই দুই প্রকারের কালো চাল জনপ্রিয়৷ দ্বিতীয়টি তুলনামূলকভাবে বেশি জনপ্রিয়৷ তবে এই চাল বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হয় না৷ এর ফলন হয় বিক্ষিপ্তভাবে৷ এই চালের প্রতি কেজি মূল্য প্রায় ১০০-১৫০টাকা৷
চাখাও চালের গুণাগুণ-
মণিপুরে, চাখাও-এর অর্থ সুস্বাদু৷ সাধারণত, বিশেষ বিশেষ উৎসবে এই কালো চালের ব্যবহার সীমাবদ্ধ৷ এটি ভাত বা খিচুড়ি হিসেবে খাওয়া হলেও, গরম দুধ দিয়ে পায়েস তৈরির ক্ষেত্রেও এই কালো (গাঢ় বেগুনি বর্ণের) চাল ব্যবহার করা হয়৷ এছাড়া এর গুণাগুণ বিচার করে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহৃত হয়৷ মণিপুরের এই কালো চাল উচ্চমাত্রায় ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ৷ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানও৷ মনে করা হয়, এই কালো চাল হাইপারটেনশন, আর্থ্রাইটিসের মতো বেশ কিছু রোগ বা শারীরিক সমস্যাকে প্রতিহত করতে সাহায্য করে৷ এছাড়া, অ্যালঝাইমার্স-এর মোকাবিলা থেকে ক্যানসারের মতো রোগকে প্রতিহত করার ক্ষমতা রাখে এই চাল, এমনও মনে করা হয়৷
এর আগে, ২০১৫ সালের মার্চ মাসে ‘কাচাই লেমন’, এক বিশেষ ধরণের লেবু ভৌগোলিক স্বীকৃতি লাভ করে৷ মণিপুরের উখরুল জেলার কাচাই গ্রামে এই বিশেষ ধরণের লেবুর ফলন হয়৷
বর্ষা চ্যাটার্জি