চাকরিজীবীদের ছুটি থাকলেও কৃষকদের কোনো ছুটি নেই, একটার পর একটা কৃষিকাজ লেগেই থাকে। আর সেই কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের। আমন ধান কাটা শেষ হতে না হতেই আবার শুরু হয়ে যায় বোরো ধান রোপণের সময়। হাওর বা বাঁওড় শব্দ থেকে বোরো শব্দের উৎপত্তি। বোরো ধানগুলো এককালে বাংলাদেশে হাওর ও বাঁওড় এলাকায় চাষ হতো। বর্তমানে সেচের বিস্তার হওয়ায় অন্যান্য উঁচু জমিতেও এর চাষ হচ্ছে। বোরো ধানের বীজতোলা থেকে শুরু করে রোপণ পর্যন্ত একটা বৈরী পরিবেশের মধ্য দিয়ে যায় বলে, বিশেষ কিছু পরিচর্যা ব্যবস্খা গ্রহণ করতে হয়। না হলে বোরোর ফলন মারাত্মকভাবে কমে যায়।
কৃষিতে তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগায় বেড়েছে উৎপাদন। পরিবর্তন হয়েছে মানুষের জীবনযাত্রার মান। জমিতে জৈব সারের পরিবর্তে বেড়েছে রাসায়নিক সারের প্রয়োগ। প্রতিটি ফসলেই কমবেশি ব্যবহার হচ্ছে সার। আসুন জেনে নিই বোরো ধান চাষে বিঘাপ্রতি সার প্রয়োগ মাত্রা। বোরো মওসুমে ধানের আশানুরূপ ফলন পেতে জমিতে পরিমাণমতো জৈব ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করা দরকার।
আরও পড়ুনঃ পড়াশোনায় স্কুলের দুরত্ব আর কাঁটা নয়, ছাত্রীদের সাইকেল বিতরণ সোনু সুদের
বোরো ধানের ক্ষেত্রে প্রতি ৩৩ শতকে সারের মাত্রা ইউরিয়া ৩৫ কেজি, টিএসপি বা ডিএপি ১২ কেজি, এমওপি ২০ কেজি, জিপসাম বা গন্ধক ১৫ কেজি, দস্তা (মনোহাইড্রেট) ১.৫ কেজি। ১৫০ দিনের বেশি দীর্ঘমেয়াদি জাত যেমন- ব্রি ধান২৯, ব্রি ধান৫০, ব্রি ধান৫৮ বা ব্রি ধান৬৯, ব্রি ধান৮৯ এর ক্ষেত্রে বিঘাপ্রতি অর্থাৎ প্রতি ৩৩ শতকে সারের মাত্রা ইউরিয়া ৪০ কেজি, টিএসপি বা ডিএপি ১৩ কেজি, এমওপি ২২ কেজি, জিপসাম ১৫ কেজি, দস্তা ১.৫ কেজি। হাওর অঞ্চলের জাতের ক্ষেত্রে প্রতি ৩৩ শতকে সারের মাত্রা ইউরিয়া ২৭ কেজি, টিএসপি বা ডিএপি ১২ কেজি, এমওপি ২২ কেজি, জিপসাম ৮ কেজি, দস্তা ১.৫ কেজি। তবে টিএসপির বদলে ডিএপি সার ব্যবহার করলে বিঘাপ্রতি ৫ কেজি ইউরিয়া সার কম প্রয়োগ করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ বিদেশী হলেও দেশীয় বাজারে এই ফলগুলির চাহিদা আকাশ ছোঁয়া
গাছের প্রয়োজনমাফিক সেচ দিলে সেচের জলর পূর্ণ ব্যবহার হয়। বোরো ধানের জমিতে সব সময় জল ধরে রাখতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। বোরো মওসুমে সাধারণত ধানের সারা জীবনকালে মোট ১২০ সেন্টিমিটার জলর প্রয়োজন।