ক্যাপসিকাম বারো মাসের সবজি । লঙ্কা প্রজাতির এই সবজিটির বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে হোটেল-রেস্তরাঁয় ক্যাপসিকাম ছাড়া রান্না প্রায় হয় না বললেই চলে। ক্যাপসিকামে ভিটামিন এ এবং সি প্রচুর পরিমাণে থাকে । এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এতে ফাইবার,আয়রন এবং অন্যান্য খনিজ উচ্চ পরিমাণে রয়েছে আর ক্যালরির পরিমাণ সামান্য থাকে। এছাড়া ক্যাপসিকাম বিদেশে রপ্তানীর সম্ভাবনাও রয়েছে প্রচুর।
মাটি
জলনিকাশিযুক্ত দোআঁশ মাটি লঙ্কা প্রজাতির এই সবজিটি চাষের পক্ষে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
চাষের সময়
বীজ বপণের উপযুক্ত সময় অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত। তবে বর্তমানে ঘরোয়া কৃষকরা ১২ মাসই এটি চাষের চেষ্টা করছেন। ক্যাপসিকাম উৎপাদনের জন্য আদ্রতা কম আছে এমন পরিবেশ সবচেয়ে উপযোগী। রাতের তাপমাত্রা ১৬০- ২১০সে. এর কম বা বেশি হলে গাছের বাড়তে পারেনা, ফলে ফুল ঝরে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে, ফলন ও মান কমে যায়, কোন কোন ক্ষেত্রে একেবারেই ফলন হয় না।
চাষপদ্ধতি
ক্যাপসিকাম চাষের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ঝরঝরে বেলে দোআঁশ মাটি । যদিও সব মৌসুমেই ক্যাপসিকাম চাষ সম্ভব, তবে ভাদ্র ও মাঘ মাসে বীজ বপন করলে ভালো ফলনের সম্ভাবনা বেশি থাকে।
সার প্রয়োগ
মিষ্টি মরিচ চাষে প্রতি শতাংশে গোবর ৪০ কেজি, ইউরিয়া ১ কেজি, টিএসপি ১.৪ কেজি, এমপি ১ কেজি, জিপসাম ৪৫০ গ্রাম এবং জিংক অক্সাইড ২০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে। জমি তৈরির সময় অর্ধেক গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে। বাকি অর্ধেক গোবর, টিএসপি, জিংক অক্সাইড, জিপসাম, ১/৩ ভাগ এমপি এবং ১/৩ ভাগ ইউরিয়া চারা রোপণের গর্তে প্রয়োগ করতে হবে। বাকি ২/৩ ভাগ ইউরিয়া এবং এমপি পরবর্তীতে দুই ভাগ করে চারা লাগানোর যথাক্রমে ২৫ এবং ৫০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে ।
আরও পড়ুনঃ ছাদে টবেই চাষ করে ফেলুন ক্যাপসিকাম, রইল টিপস্
গাছের পরিচর্যা
অঙ্কুরোদগমের আগে গাছটি যেন কম সূর্যালোকে থাকে, এই সময়ে আপনি সেটিকে বাড়ির ভিতরে রাখতে পারেন। অঙ্কুরোদগম হওয়ার পরে, আপনি টবটিকে বারান্দায় সূর্যালোকে রাখতে পারেন।
পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ
ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচে কিছু পোকামাকড় ও রোগের আক্রমণ হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে আছে জাবপোকা. থ্রিপস পোকা, লালমাকড়, এ্যানথ্রাকনোজ রোগ, ব্লাইট রোগ ইত্যাদি। কোনও রোগ বা পোকার আক্রমণ হলে টক্সিন মুক্ত দ্রবণ ব্যবহার করাই শ্রেয়। এক চামচ সাবান গুঁড়া এবং নিম তেল এক টেবিল চামচ নিন, উভয় এক লিটার পানিতে মিশ্রিত করুন। প্রতি সপ্তাহে এই দ্রবণ একবার স্প্রে করুন।
আরও পড়ুনঃ এই পদ্ধতিতে চন্দ্রমল্লিকা চাষ করলে অধিক লাভবান হবেন
ফলন
চারা বসানোর দু’মাসের পর থেকে পরবর্তী এক থেকে দেড় মাস ফলন দেয়। একর প্রতি ৫০ থেকে ৭৫ কুইন্টাল পর্যন্ত ফলন হয়। বাজারে কম করে খুচরো হিসাবে ৭০ থেকে ১৫০ টাকা কিলোগ্রাম দরে বিক্রি করা যেতে পারে।