কৃষিজাগরন ডেস্কঃ কৃষিই আমাদের দেশের মেরুদণ্ড। দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কৃষকরা যাতে চাষ করে লাভ করতে পারে ।তার জন্য কৃষি বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এক জমিতে অন্য ফসল বপন করে কৃষকরা দ্বিগুণ লাভবান করতে পারবেন। কিন্তু আজ আমরা আপনাকে এমনই চাষের কথা বলব,যার মধ্যে একটি-দুটি নয়, বহু স্তরের চাষাবাদ রয়েছে।সব জমিতে ফসল বপন করে বড় মুনাফা অর্জন করা যায়।এটি মাল্টিলেয়ার ফার্মিং নামে পরিচিত।
মাল্টিলেয়ার ফার্মিং, যেমন নাম থেকেই বোঝা যায়, যে এক জায়গায় বিভিন্ন রকমের চাষ এর সাথে জরিত। এই পদ্ধতিতে ৩, ৪ বা ৫ ধরনের চাষ করা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে জমির ব্যবহার কম হয়। যেমন, কিছু ফসল মাটির নিচে হয়, কিছু ওপরে, কিছু উঁচুতে এবং কিছু অন্যান্য প্রজাতির চাষ করা যায়। শস্যচক্রের কথা বললে, কিছু কম, কিছু মাঝারি এবং কিছু পাকতে বেশি সময় লাগতে পারে।
আরও পড়ুনঃ আদিবাসী মানুষদের জীবন ও জীবীকার উন্নতিতে এবার পথ দেখাবে বনবিভাগ
বহুস্তরীয় চাষে ফসল নির্বাচনের ক্ষেত্রে যত্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি প্রথম স্তরে বড় গাছ লাগানো হয় তবে অন্যান্য স্তরগুলি অকেজো হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হলুদ, আদা প্রথম স্তরে ছোট গাছের আকারে বপন করা যেতে পারে। দ্বিতীয় স্তরেও, কম গভীরতা এবং কম উচ্চতার সবজি ফসল বেছে নিন। বড় গাছ যেমন- পেঁপে বা অন্য কোনো ফলের চারা তৃতীয় স্তরে লাগানো যেতে পারে। যে কোন লতা ফসল চতুর্থ স্তরে রোপণ করা যেতে পারে।
মাল্টিলেয়ার ফার্মিং থেকে সঠিক মুনাফা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণ নিতে হবে। কৃষি বিজ্ঞানী, কৃষি বিশেষজ্ঞ বা যেকোনো কৃষি কর্মকর্তার মতামত নেওয়া যেতে পারে। আসলে ফসল উৎপাদনের জন্য পরিবেশ অনুকূল হওয়া প্রয়োজন। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে তাপমাত্রার তারতম্য রয়েছে। এমন জায়গায় যেখানে মাল্টিলেয়ার ফার্মিং করতে হবে। সেই অনুযায়ী ফসল নির্বাচন করতে হবে। এতে কৃষকরা চার থেকে পাঁচ গুণ ভালো ফলন পেতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ বাজারে চাহিদা বাড়ছে কৃত্রিম ফুলের, শীতের মরশুমে মুখে হাসি নেই ফুল চাষিদের
মাল্টিলেয়ার ফার্মিং শুধু মাটিতে নয় ছাদেও করা যায়। তার জন্য ছাদে জমি তৈরি করতে হবে। ছাদে দেশীয় সার মেশানো মাটির পুরু স্তর ছড়িয়ে দিন। যদি গাছগুলি বেশি গভীরতার হয় তবে মাটির স্তরটি আরও ঘন হওয়া উচিত। বারান্দায় গাজর, মুলা, পালংশাক, বেগুন, টমেটো, ইত্যাদি ফসল চাষ করা যেতে পারে ।
মাল্টিলেয়ার ফার্মিংয়ের অন্যতম সুবিধা হল কম জলের প্রয়োজন হয়। প্রকৃতপক্ষে, সমস্ত ফসল মাটির একই স্তরে বপন করা হয়। এক ফসলে জল দিলে অন্য ফসলও পায়। এভাবে প্রায় ৭০ শতাংশ কম জলের প্রয়োজন হয়।