এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 14 November, 2022 3:50 PM IST
ছবিঃ কৃষি জাগরন

কৃষিজাগরন ডেস্কঃ অ্যাজোলা (Azolla) এক ধরনের ভাসমান ফার্ন (বিভাগ Pteridophyta, বর্গ Salviniales, গোত্র Azollaceae) যা পৃথিবীর মধ্যে সর্বাপেক্ষা দ্রুত হারে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত এবং এটি সাধারনত গ্রামাঞ্চলের বহু জলাশয়েই প্রচুর পরিমাণে দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু কৃষিক্ষেত্রে এই ফার্নটির উপকারিতা বা ভূমিকা সম্পর্কে অনেকেই না জানার কারণে অ্যাজোর ব্যবহার সেভাবে প্রচলিত নয়। এমনকি অনেক সময়ই কৃষকরা ধান জমিতে দাঁড়িয়ে থাকা জড়ো আজোলা থাকলে তাকে অবাঞ্চিত উপদ্রব মনে করে তা মেরে ফেলতে চায়। অথচ বাস্তবে ফসলের উপর এর অনেক উপকারী প্রভাব রয়েছে। আলোতে আশ্রয় করে থাকা নীল সবুজ শেওলা, সায়ানোব্যাকটেরিয়া (Anabaena azollae) সরাসরি বাতাস হতে হেক্টর প্রতি প্রায় ২৫ কেজি নাইট্রোজেনকে আবদ্ধ করতে পারে। ফলে ধান জমিতে অ্যাজোলার উপস্থিতি মাটিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে গাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং একইসাথে এর ফলে মাটিতে বাইরে থেকে নাইট্রোজেন ঘটিত সার প্রয়োগের পরিমাণও কমিয়ে ফেলা যায়।

আরও পড়ুনঃ মাশরুম চাষ করে লাভবান ঝাঝাঙ্গির চাষি সুনিল

অ্যাজোলায় রয়েছে অশোষিত প্রোটিন (প্রায় ২০%-এর অধিক), বিভিন্ন প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড (উচ্চমাত্রার লাইসিন) সহ ভিটামিন A ও B এবং ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ লবণ। ফলে যেকোন গবাদি পশুর জন্য এটি একটি উন্নত মানের পুষ্টিকর খাদা রূপে ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার শুরুনো অ্যাজোলা ফ্রেক্স পোলট্রির খাবার এবং সবুজ অ্যাজোলা মাছেরও পুষ্টিকর খাবার হিসাবে ব্যবহৃত হয়। জীবাণু সারের পাশাপাশি জলাশয়ে বিভিন্ন ক্ষতিকারক ভারী ধাতুর প্রভাব প্রশমনের জন্যও অ্যাজোলা Bio-scavenger-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আবার আজোলা দিয়ে অতি সহজে খুব কম সময়ের মধ্যে উন্নত মানের কম্পোস্ট সার তৈরি করাও সম্ভবপর। অর্থাৎ কৃষিক্ষেত্রে অ্যাজোলার এক বহুমুখী ব্যবহারিক গুরুত্ব রয়েছে এবং একে খুব সহজে অল্প জায়গায় নূন্যতম খরচে উৎপাদন করাও সম্ভবপর।

অ্যাজোলা অঙ্গজ ও যৌন উভয় ধরনের প্রজননেই সক্ষম। অঙ্গজ প্রজননে কান্ডের গোড়ার বয়স্কতম পার্শ্বশাখাটি খন্ডিত হয়ে তা থেকে নতুন উদ্ভিদ জন্মায়। অনুকূল পরিস্থিতিতে উদ্ভিদ দ্বিগুণ হতে সময় লাগে প্রায় ৩ দিন। মুখ্য রেণুধর এ উদ্ভিদ ক্ষুদ্র লিঙ্গধর পর্যায়ের সঙ্গে প্রত্যাবৃত হয়। এতে দু প্রকার স্পোরোকার্প থাকে ক্ষুদ্রাকার মেগাস্পোরোকার্প (স্ত্রী) ও বৃহৎ মাইক্রোস্পোরোকার্প (পুং) এবং এগুলি উষ্ণমন্ডলে শীতকাল বা বসন্তের শুরুতে পার্শ্বশাখার বয়স্কতম (প্রথম) পাতার কক্ষে জন্মে। আলোককাল ও তাপমাত্রা রেণু উৎপাদন প্রভাবিত করে। মেগাস্পোরোকার্প ও মাইক্রোস্পোরোকার্প সর্বদা সজোড় ও পাশাপাশি থাকে।

সারা বছরই পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যাজোলার চাষ সম্ভব। এজন্য ১০০ সেমি গভীর ও আলোময় একটি পুকুরই যথেষ্ট। প্রতিদিন হেক্টর প্রতি ১০ কেজি ইউরিয়া ও ৫ কেজি মিউরেট অব পটাশের দ্রবণ পানিতে প্রয়োগে হেক্টর প্রতি ১.০-১.৫ টন তাজা অ্যাজোলা ফলানো যায়। পানিতে প্রতিদিন তরল সারের পরিবর্তে পাতায় সার স্প্রে করা অধিকতর ফলপ্রসূ।

জৈৰ সবুজ অ্যাজোলা উৎপাদন পুথিগত খাদ্যগুণাবলী

সাধারণত দেখা যায় যে অ্যাজোলা ৩ থেকে ৪ দিনেই প্রায় দ্বিগুন হয়ে যায়। এর উৎপাদন প্রতি বর্গমিটারে সাধারণত ভাবে ৭০০ গ্রাম হয়। অ্যাজোলা (শুকনো) -এর বিশ্লেষণে দেখা গেছে এতে প্রোটিন ২৫-৩৫%, ১০-১৫% অন্যান্য খনিজ লবণগুলি যথাক্রমে ক্যালসিয়াম - ৬.৭%, ফসফরাস ০.৬৯%, লৌহ - ৭.৩% ও ম্যাঙ্গনীজ ০.২০% থাকে।

আরও পড়ুনঃ অর্ধেকেরও বেশি খেজুর গাছের প্রজাতি বিলুপ্তের মুখে দাঁড়িয়ে

অ্যাজোলার ব্যবহার

) পশুখাদ্য হিসাবে অ্যাজোলার ব্যবহার

অ্যাজোলা গরু ও মহিষের একটি উত্তম খাদ্য। এর অতিরিক্ত প্রোটিন এবং কম লিগুমিন থাকার কারনে আজোলা গবাদি পশুদের তাড়াতড়ি হজম হয়ে যায়। অ্যাজোলা কৃত্রিম কনসেনট্রেট খাবারের সঙ্গে ১ঃ১ অনুপাতে মিশিয়ে গরু মহিষ কে খাওয়ানো যেতে পারে। আজোলা খাওয়ালে গাভীর দুধের গুণগত মান ও পরিমান বৃদ্ধি পায়।

) হাঁস-মুরগীর খাদ্য হিসাবে অ্যাজোলার ব্যবহার

হাঁস - মুরগী ও কোয়েলকে অ্যাজোলা সরাসরি অথবা খাদ্যশস্য এবং রন্নাঘরের বর্জ্য পদার্থের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে। গৃহপালিত হাঁসদের টাটকা অ্যাজোলা সরাসরি খাওয়ানো যেতে পারে। ভেজা অ্যাজোলা ২০% থেকে ৩০% কনসেনট্রেট খাবারের পরিবর্তে ঘরোয়া পদ্ধতিতে দেওয়া যেতে পারে। হাঁস অ্যাজোলা ক্ষেতে খুব পছন্দ করে। ব্যবসায়িক ভিত্তিতে চাষ করা পাখিদের ক্ষেত্রে অ্যজোলা ২০০ গ্রাম প্রতি পাখিকে কৃত্রিম খাদ্যর সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া যায়।

) সবুজ সার হিসাবে অ্যাজোলার ব্যবহার

১) খারিফ ও রবি দুই খন্দেই এটি সহজে বেশী পরিমানে সবুজসার হিসাবে উৎপাদন ও ব্যবহার করা যায়।

(২) এটি ধান ক্ষেতের ছোট ছোট আগাছা দমন করে।

৩) এটি শস্য বৃদ্ধির জন্য নাইট্রোজেনের উৎস হিসাবে কাজ করে ও কিছু মাত্রায় রাসায়নিক নাইট্রোজেন সারের ব্যবহার কমাতে সাহায্য করে।

৪) এটি দস্তা, লোহা, ম্যাঙ্গানীজ কে দ্রবীভূত করে ধান গাছের কাজে লাগায়।

৫) চারা বৃদ্ধি সহায়তা করে।

৬) এটি সেচকৃত জমির জলের বাষ্পীভবন কমায়।

English Summary: Importance of Azolla as fertilizer and fodder
Published on: 14 November 2022, 03:50 IST

எங்களுக்கு ஆதரவளியுங்கள்!

প্রিয় অনুগ্রাহক, আমাদের পাঠক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকরা আমাদের কৃষি সাংবাদিকতা অগ্রগমনের অনুপ্রেরণা। গ্রামীণ ভারতের প্রতিটি কোণে কৃষক এবং অন্যান্য সকলের কাছে মানসম্পন্ন কৃষি সংবাদ বিতরণের জন্যে আমাদের আপনার সমর্থন দরকার। আপনার প্রতিটি অবদান আমাদের ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান।

এখনই অবদান রাখুন (Contribute Now)