শুধু গরুর দুধ এবং দুগ্ধজাত সামগ্রীই যে ব্যবসাতে লাভের মুখে দেখাবে তা নয়, গরুর বর্জ্য বা গোবর দিয়েও আপনি ব্যবসায় লাভের মুখ দেখতে পারেন৷ বর্তমানে কঠিন পরিস্থিতিতে এমনিতেই ব্যবসা-বাণিজ্য ধাক্কা খেয়েছে অনেকটাই৷ আর সেখানেই পুঁজি বেশি বিনিয়োগ করা থেকে অনেকেই পিছিয়ে আসছেন৷ আর ঠিক এই সময়ে দাঁড়িয়ে স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগে গোবর থেকে আয় করা যেতে পারে৷
তবে অনেকেই এই ব্যবসা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না থাকায় অর্জিত টাকা এই ব্যবসাতে বিনিয়োগ করতে চান না৷ তবে যারা কৃষির বাইরে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিকল্প কাজ হিসেবে বা অতিরিক্ত অর্জন করতে চাইছেন, তারা গোবরকে ব্যবসার মাধ্যম করতে পারেন৷ তবে এই কাজে এগিয়ে যাওয়ার আগে প্রাথমিক ধারণা স্পষ্ট করে নিতে হবে অবশ্যই৷
তুলনামূলকভাবে অন্যান্য ব্যবসার থেকে এই ব্যবসাতে খুব বেশি পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় না৷ সঠিক উপায়ে করতে পারলে উপার্জনও মন্দ হয় না৷ গোবর দিয়ে বিভিন্নভাবে ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে৷ যাদের বাড়িতে খামার রয়েছে, গরু রয়েছে তাদের পক্ষে খুবই সুবিধাজনক এই ব্যবসায় প্রবেশ করা।
অনেকেই হয়তো জানেন না কাগজ তৈরির ক্ষেত্রে গোবরের প্রয়োজন হয়৷ তাই কাগজ তৈরির ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে৷ গোপালক হলে এই ব্যবসার ক্ষেত্রে আরও সুবিধা হয়৷ গোবর থেকে তৈরি কাগজের মান বেশ উন্নত। তৈরি করা যেতে পারে ক্যারি ব্যাগও৷ দেশে যখন প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহারে নিষেধ করা হচ্ছে, সেখানে জৈব উপাদানে তৈরি ক্যারি ব্যাগের চাহিদা বাড়ছে এবং সেই সঙ্গে এটি পরিবেশ বান্ধবও৷
তবে কাগজ তৈরির থেকেও বহুগুণ বেশি এই গোবর কাজে লাগানো হয় ভেজিটেবল ডাই-এর ক্ষেত্রে৷ এটি রাসায়নিক মুক্ত হওয়ায় ভেজিটেবল ডাই এবং উদ্ভিজ্জ রঙ হিসেবে এর ব্যবহার প্রচলিত৷ অবিশ্বাস্য মনে হলেও, বড় পাত্রে গোবর এবং জল দিয়ে সারারাত সুতির কাপড় ভিজিয়ে রেখে তা ব্লিচ করেন অনেকে৷ এই ভেজিটেবল ডাই-এর চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে৷
গোবর দিয়ে ব্যবসার আরও একটি জনপ্রিয় দিক হল ঘুঁটে ব্যবসা৷ জ্বালানি হিসেবে এর চাহিদা রয়েছে ভালোই৷ বর্তমানে অনলাইনেও ঘুঁটের প্যাকেট, কেজি বা পিস হিসেবে বিক্রি হয়৷ পশুপালকদের মধ্যে অনেকের কাছেই ঘুঁটে একটি জনপ্রিয় ব্যবসার মধ্যে অন্যতম, যার মাধ্যমে কম সময়ে, কম খরচে লাভের মুখ দেখা সম্ভবপর হয়৷ এছাড়া জৈব সার হিসেবেও গোবরের ব্যবহার হয়ে থাকে৷
বর্ষা চ্যাটার্জি