আমরা প্রত্যেকেই দৈনন্দিন জীবনে বাড়িতে কতকিছুই ব্যবহার করে থাকি। আর ওই ব্যবহার্য জিনিস গুলির মধ্যে আমাদের যে জিনিস গুলি কাজে লাগে না অর্থাৎ যে বর্জ্য গুলিকে ফেলে দেওয়া হয় সে গুলিকে না ফেলে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রাখুন। এই ধরুন শাকসবজির ও ফলের খোসা, ডিমের খোলা, ব্যবহৃত চা পাতা, মাছ ধোঁয়া জল, মাংস ধোয়ার জল ইত্যাদি। বাড়ির এই ফেলে দেওয়া বর্জ্য থেকেই তৈরি হয় জৈব সার। প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি এই জৈবসার মাটির কার্যক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে, মাটির অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব এবং তাপমাত্রা ভারসাম্য রক্ষা থেকে শুরু করে মাটিতে বায়ু চলাচলের পরিমান বৃদ্ধি করে।
গৃহস্থালির বর্জ্যের পুষ্টিমানঃ
বাড়ির গৃহস্থালীর বর্জ্য কম্পোস্ট সার তৈরির উপাদান হিসাবে ব্যবহার করা হয়। পেঁয়াজ ও আলুর খোসার মধ্যে বেশকিছু পদার্থ থাকে যারা ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক দমন করতে পারে। ফলের খোসা বা শাক সবজির ফেলে দেওয়া অংশ থেকে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রোজেন পাওয়া যায়। কলার খোসাতে প্রচুর পরিমাণে ফসফেট ও পটাশ থাকে। এছাড়াও ডিমের খোসাতে প্রায় ৯০ শতাংশেরও বেশি খনিজ পদার্থ থাকে। তাই বলা চলে রান্না ঘরের অবশিষ্ট খাদ্য থেকে শুরু করে ফেলে দেওয়া বর্জ্য এক জায়গায় রেখে জৈব সার তৈরি করে গাছের গোঁড়ায় বা একাধিক ফসল ফলাতে ব্যবহার করতে পারি।
আরও পড়ুন: পাঞ্জাবের কৃষক মাশরুম চাষ করে বছরে 18 থেকে 20 লক্ষ টাকা আয় করছেন
জৈব বর্জ্যের কয়েকটি উল্লেখ যোগ্য পদ্ধতিঃ
বাড়িতে ছোট খাটো বাগান তৈরির জন্য বাড়ির বর্জ্য গুলিকে সুষম সার হিসাবে ব্যবহার করতে পারি। এই সার আমরা সম্পূর্ণ বিনা মুল্যে তৈরি করতে পারি। আবার এই সার ব্যবহারের ফলে গাছের পুষ্টি বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও বর্জ্য গুলিকে কম্পোস্ট সার এবং কেঁচো সার তৈরির উপাদান হিসেবেও ব্যবহার করতে পারি। আমরা সকলেই যদি একটু সচেতন হয় তাহলেই রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমবে। অনেকেই হয়তো জানেন না যে কেঁচো সার কি? অর্ধপচা জৈব পদার্থ খেয়ে কেঁচো মল ত্যাগ করে এবং এর সাথে কেঁচোর দেহ থেকে রাসায়নিক পদার্থ বের হয়ে যে সার তৈরি হয় যাকে কেঁচো কম্পোস্ট বা ভার্মি কম্পোস্টও বলা হয়।
আরও পড়ুন: দেশি বনাম হাইব্রিড, ফল এবং শাকসবজি চেনার সহজ উপায়
কম্পোস্ট সারের গুরুত্বঃ
১) সাধারণ কম্পোস্টের তুলনায় কেঁচো সার বেশি পুষ্টি উপাদান ধারণ করে।
২) এই সার দ্রুত প্রস্তুত হয়। প্রায় 2 থেকে 3 মাসের মধ্যে আমরা উন্নতমানের সার পেতে পারি।
৩) এর ব্যবহার মাটির ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৪) মাটিকে ভঙ্গুর করে তোলে এবং মাটিতে বায়ু চলাচলও বৃদ্ধি করে।
৫) গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।