কিনোয়া হচ্ছে একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। বাংলায় কিনোয়া কোরা, দানা, কান্তি নামেও মানুষের কাছে পরিচিত। শিশুদের পক্ষে এই দানাশস্যটি অত্যন্ত পুষ্টিকর। কিনোয়া দানাশস্য যেমন স্বাদে খেতে ভালো তেমনই পুষ্টিকর। মূলত পাশ্চাত্যের দেশগুলিতে এই দানাশস্যের ফলন দেখার মতন। এশিয়া মহাদেশেরও অন্যান্য দেশেও এখন এই বিশেষ্য দানাশস্যের চাষ হচ্ছে। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে আজকাল বাণিজ্যিক ভাবে কিনোয়া চাষ হচ্ছে।
কিনোয়া চাষের পদ্ধতি: (Process of Quinoa Farming)
এই প্রজাতির দানা বিশিষ্ট শস্য প্রায় সব রকমের মাটিতে চাষ করা যায়। বেলে দোঁআশ মাটি যেখানে জল দাঁড়ায় না সেখানে এই চাষ খুব ভালো পরিমানে হয়। কিয়ানোর বীজ আকারে মাঝারি এবং ঘিয়ে রংয়ের । হাজার বীজের ওজন ২.৩-২.৫ গ্রাম। অগ্রহায়ণ মাসে এই কিয়ানোর বীজ বপন করা হয়। কিয়ানোর বীজ কৃষিক্ষেতে ছিটিয়ে দিয়ে অথবা সারি দিয়ে বপন করা যায়। যদি এই বীজ ছিটিয়ে দেওয়া হয় তাহলে হেক্টর প্রতি ১০ কেজি এবং সারিতে বপন করলে ৮ কেজি বীজ চাষিভাইদের প্রয়োজন। সারি অনুযায়ী বীজ বুনলে সারি থেকে সারির দূরত্ব ২৫-৩০ সেমি রাখা উচিত।
চারা গজিয়ে গেলে ২-৩ সপ্তাহের ভেতর সারিতে চারার দূরত্ব ৬-৮ সেমি অনুযায়ী বাদবাকি চারা উঠিয়ে নিতে হবে। কিনোয়া চাষে রাসায়নিক সার প্রয়োগ না করে ভালো। কিনোয়া খরা সহ্য করেও বেঁচে থাকতে পারে। তবে গরমকালে যদি খরা দেখা দেয় তাহলে ১-২ টি সেচের ব্যবস্থা করলে ফলন ভালো হয়। আগাছা দেখা দিলে জমিতে, তাহলে সেই জমি নিড়ানি দিয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে।
কিনোয়া খাবার প্রয়োজনীয়তা: (Healthy side of eating Quinoa)
১) অন্যান্য দানাদার খাদ্য উপাদানের চাইতে কিয়ানোতে আঁশ অনেক বেশি পরিমাণে থাকে। তাই দানাশস্য খেলে পাকস্থলীর মতন শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ অনেকাংশে সুস্থ থাকে।
২) কিনোয়াতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, জিংক ও আয়রন থাকে। তাই নারীদের জন্য এই শস্য উপকারী এক খাবার।
৩) কিনোয়া দানাশস্য খেলে অনেকাংশে কোলেস্টোরল কমে যায়, এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সুস্থ থাকে।
৪) কিনোয়াতেতে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম থাকায় তা খেলে আমাদের শরীরের লবণের ভারসাম্য ঠিক থাকে। এরফলে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
আরও পড়ুন: Cultivation of Black Rice: জৈব উপায়ে ব্ল্যাক রাইসের চাষ
৫) কিনোয়া কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করে।
৬) কিনোয়াতে রয়েছে প্ৰচুর পরিমানে আঁশ। তাই এই বিশেষ দানাজাতীয় খাবার খেলে পেট অনেকক্ষণ ভর্তি থাকে। কিনোয়া পরিমাণ মতন খেলে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমে।
আরও পড়ুন: Profitable Farming - পতিত জমিতে মুসুর চাষ করে আয় করুন অতিরিক্ত অর্থ