স্টিভিয়া একটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এটা বহু বছর ধরেই বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, এছাড়া এটি চিনির বিকল্প হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে বলে এর বাণিজ্যিক সম্ভাবনা প্রচুর। এর মধ্যে সক্রিয় যৌগগুলি স্টিভিওল গ্লাইকোসাইডস (প্রধানত স্টিভিওসাইড এবং রেবাউডোসাইড), যা একচামচ চিনির মিষ্টিতা থেকে 30 থেকে 150 ভাগ বেশি থাকে একটি পাতায়। এর তাপ-স্থিতিশীল, পিএইচ-স্থিতিশীল, এবং এটি fermentable হয় না। ফলে স্টিভিয়াতে শরীর চর্বিযুক্ত করে না এবং তাই এটি কিছু কৃত্রিম মিষ্টির মতো 0 ক্যালোরি ধারণ করে। স্টিভিয়ার স্বাদ চিনির চেয়ে ধীরে ধীরে শুরু এবং দীর্ঘ সময়কাল।
জাপানী খাদ্য পণ্য এবং ঠান্ডা পানীয়, (কোকা কোলা সহ) এবং অন্যান্য কাজের জন্য স্টিভিয়া ব্যবহার করে আসছে। ২006 সাল থেকেই স্টিভিয়ার মাধ্যমে মিষ্টি বাজারের 40% চিনির ঘার্তি পূরণ করে থাকে। তবে স্টিভিয়া দক্ষিণ আমেরিকায় গুড়ানি জনগণেরা 1,500 বছরেরও বেশি সময় ধরে এর ব্যবহার করে আসছে, এটি "মিষ্টি ঔষধি" বলা হয়। ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে অঞ্চলে স্থানীয় চা ও ওষুধগুলি মিষ্টি করার জন্য এবং মিষ্টি খাবার হিসাবে শত শত বছর ধরে পাতাগুলি ঐতিহ্যগতভাবে ব্যবহৃত হয়। এর পরে এটি চীন, কোরিয়া, কানাডা, আমেরিকা, ইংল্যান্ড সহ ভারতেও এর চাষ শুরু হয়। অল্পকিছুদিন পরেই পশ্চিমবঙ্গ তথা উত্তরবঙ্গে এর চাষ শুরু হয় প্রথম অবস্থায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ের, বায়োটেকনোলজি ডিপার্টমেন্টের সেন্টার ফর ফ্লোরিকালচার এন্ড এগ্রি-বিজনেস ম্যানজমেন্ট (কোফার্ম) এর উদ্যোগেই বিশ্ব বিদ্যালয় চত্বরেই এর চাষ শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পরে বিভিন্ন জেলায় উদ্যোগী চাষীদের মধ্যে, তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই কোফার্ম এর টেকনিকাল অফিসার অমরেন্দু পান্ডের নাম উল্লেখযোগ্য তার প্রচেষ্টায় এই চাষ প্রতিবেশী দেশ এবং রাজ্যে বিপুল ভাবে ছড়িয়ে পরে।
এই চাষের ক্ষেত্রে কিছু কিছু বড় এবং ছোটো চাবাগান গুলিও ভীষণ ভাবে আগ্রহ নিচ্ছে এর মধ্যে গুডরিক কোম্পানি এই পাতা মিশ্রিত করা দারুন সুস্বাদু চা বাজারজাত করে ফেলেছেন, বলা ভালো এই চা আপনি চিনি ছাড়া খেলেও মিষ্টি লাগবে যেটা আজকের প্রচুর ডায়বেটিক রুগীর জন্যে একটি যুগান্তকারী ভেষজ মিষ্টি মিশ্রিত চা।
কোফার্ম এর টেকনিকাল অফিসার অমরেন্দু পান্ডের মতে এই চাষ করা একদম কঠিন নয় এবং এর থেকে রয়েছে প্রচুর রোজগারের সুযোগ, এই বিষয়ে বিশদ জানতে চোখ রাখুন কৃষি জাগরনের পরবর্তী সংখ্যায়।
- অভ্রদীপ দত্ত