চা এর উৎপাদনে আধুনিক পদ্ধতির প্রয়োগ ও কম কীটনাশক ব্যবহার করে কিভাবে ভালো গুণ মানের চা উৎপাদন করা যায় তা নিয়ে ‘বেদান্তিক অর্গানিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের’ কর্ণধার ড: দেবর্ষী দে কাজ করে চলেছেন। তরুন এই উদ্দ্যোগী ইতিমধ্যে “High Impact Entrepreneurs for Emerging Regions for Action (HIEERA)” প্রাইজ পেয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী সুরেশ প্রভূর হাতে দেশের নতুন উদ্দ্যোগী হিসেবে যারা কর্মসংস্থান গড়ে ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তার নিজের ভাষাতেই প্রতিবেদন থাকল তার উদ্ভাবিত Integrated Radical Farming Technology নিয়ে।
“Presidency College’ এ Botany পড়াকালীন আমি Vandana Shiva’ র “Violence of Green Revolution” এবং Richel Huritex – এর “The Silent Spring” পড়ি। তখন থেকেই আমি অনুভব করি যে প্রাক সবুজ বিপ্লব ভারতবর্ষে কৃষিকার্যে উপযুক্ত এমন কোন প্রযুক্তির মডেল বিশেষভাবে কাজ করেনি। অথচ বহু মডেল বহু জায়গায় আংশিক সফলতা পেয়েছে। এই সকল আংশিক সফলতা গুলিকে বিগত দেড় দশক ধরে আমি একত্রিত করি এবং আমার সহকর্মী এবং সমসাময়িক বৈজ্ঞানিকদের সাহায্যে একটি পন্থার সৃষ্টি করি যাকে আমি “TRFT” বা Integrated Radical Farming Technology নাম দিয়েছি। ইতিমধ্যে এই প্রণালীতে বিভিন্ন শস্য একই Climatic zone এ আমি এবং আমার সংগঠন, Vedantic Organic Research Foundation (VORF) এ কর্মরত technologist রা trial করি, এবং যথেষ্ট সাফল্য লাভ করি।
গত পাঁচ বছর ধরে আমি ‘চা’-এর উপরেও সমানষাবে আমার গবেষণা চালু করি, মূলত তরাই, ডুয়ার্স, দার্জিলিং এবং আসাম এর কিছু অঞ্চলে। চা’ তে এই প্রযুক্তির সাফল্য প্রমাণ করা ছিল দুঃসাধ্য কারণ Tea cultivation এর নিজস্ব বহু বাধ্যকতা আছে যেমন Continuous repetitive harvesting, C3 plant, বহু গাছ প্রায় ১০০ বছর পুরোনো, নাইট্রোজেনের চাহিদা খুব বেশী, Acidic soil যেখানে কৃষিতে সাহায্যকারী Micro-organisms –এর সংখ্যা খুব কম এবং New plantation ছাড়া মাটির পুষ্টি নতুন করে ঠিক করার সুযোগ খুব সীমিত। এই সমস্ত বাধ্যকতা সর্ত্বেও বিগত অর্ধেক দশক ধরে দৈনন্দিন বিভিন্ন পরীক্ষা চালিয়ে IRFT র মাধ্যমে চা তৈরীর একটি বিশেষ পদ্ধতির সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি।
এই পদ্ধতির মাধ্যমে মূলত আমি চা গাছের Physiology জাগরীত এবং শক্তি বৃদ্ধি করতে পারছি যার দরুন গাছের Net Photosynthesis বৃদ্ধি পাচ্ছে, গাছের নিজস্ব immunity বৃদ্ধি পাচ্ছে কারণ একটি liquid formulation SIF6 দিয়ে প্রত্যেক কোষের উপর একটি Sillica –র পরত তৈরি হচ্ছে যাকে “Fungal mycelia” ছেদ করে ভেতরে ঢুকতে পারছে না। আমার এই পদ্ধতির মূলত কাজ করছে Soil microbial population বৃদ্ধি করার জন্য যার ফলে Soil – plant- nutrient dynamics সঠিকভাবে কার্যকর হয় এবং Plant physiology –এর Activation যাতে Nutrient মাটি থেকে সঠিক ভাবে তোলা ও তার Utilization সম্ভব হয়। যেটা আপেক্ষিক ভাবে “hast defense mechanism’ বৃদ্ধি ও আরও বেশী ক্ষমতাশীল করে যাতে গাছে পোকা, ছত্রাক, রোগ জীবাণু কম infect করে এবং রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার কমতে থাকে।
আমার এই Climate Smart agriculture পদ্ধতিতে প্রথমে কৃষিজমির একটি এংওট এটতুড করা হয়। যাকে “resource mapping” ও বলা হয় এর থেকে বোঝা যায় কোন জমির কেমন পুষ্টিকরণ দরকার এবং সেই অনুপাতে আমি আমার নিজস্ব compost পদ্ধতি যাকে “Smart com” বলছি সেটিকে বিভিন্ন Microbe –এর সাথে fortify করে জমিতে resource map অনুযায়ী ছড়িয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকি। Light pruning এবং heavy pruning এর সময় এর সমকালীন আবহাওয়ার সাথে তারতম্য রেখে এই compost এর গুণমান নির্ধারণ করে থাকি। আমরা compost এর phytotoxicity নির্ধারণ করে থাকি US Composting Council এর প্রথা ও প্রক্রিয়া মেনে। আমাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে Pesticide index মাটিতে আমরা নির্ধারণ করে থাকি। আর compost এর phytotoxicity নির্ধারণ করে থাকি US Composting Council এর প্রথা ও প্রক্রিয়া মেনে। এরপর চায়ের গুণগত মান ঠিক রাখার জন্য এবং যাতে তার immunity বৃদ্ধি করা যায় এর জন্য 1st Flush, 2nd Flush এবং Autumn flush ধরে বিভিন্ন spraying schedule দিয়ে থাকি যাতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার প্রায় নামমাত্র থেকেও কমিয়ে আনা যায় এবং কৃষি কাজকে organic এর দিকে নিয়ে যাওয়া যায়।
আমার এই সমাধান শুধু এখানেই থেমে না থেকে ফসল যাতে তার সঠিক দাম পায় সেইজন্য কৃষকদেরকে ছোট-বড় Boughtleaf factory, shed garden এবং small tea growers –দের জন্য বিভিন্ন certification এর নির্দেশিকা, যেমন – globsl gap, rain forest alliance, fair trial, BRC এবং ISO ও FSSC –র মতন বিভিন্ন csrtification প্রণালী implement করতে সাহায্য করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আর্থিক অসহযোগিতার জন্য যতটা পরিমাণ এই technology এক এবং সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাইছি সেই অনুপাতে কর্মী বা সংগঠন সেটা করে উঠতে পারছে না। এই পদ্ধতির মধ্যে on farm প্রযুক্তিগুলি বিনা খরচে কৃষকরা নাও নিতে পারেন যদি তারা এই সংগঠনের সাথে কাজ করে। আগামী দিনে Artificial Intelligence, drone এবং বিভিন্ন App-এর মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে অনেক কার্যকরী সাহায্যের উপর এই সংগঠন এখন তাদের জোরদার গবেষণা চালাচ্ছে। সবশেষে কৃষকরা যাতে সঠিক দাম পায় সেই লক্ষ্যে প্রতি নিয়ত ছোট-বড় বিভিন্ন বেসরকারী সংগঠনের সাথে Supply Chain Management তৈরী করার দিকে মন দিয়েছি আমি নিজে”।
তথ্য সহায়তায় Dr. Deborshi Dey
- রুনা নাথ (runa@krishijagran.com)