দেশে কত রকমের ধান চাষ হয় এই প্রশ্নের জবাব মেলা মুস্কিল।তবে বিশেষজ্ঞদের মতে স্বাধীনতার আগে পর্যন্ত আমাদের দেশে প্রায় ৪০,০০০ রকমের বিভিন্ন প্রজাতির ধানের চাষ হত।যা আজ বিলুপ্তির পথে।এবার এই সুগন্ধি হারিয়ে যাওয়া ধান ও বীজের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্দ্যোগ নিল রাজ্য সরকার।
সূত্রের খবর, গত এক দশকে এ রাজ্যে সুগন্ধী চালের উৎপাদন বড়েছে চারগুণ, চাষের এলাকা বেড়েছে সাড়ে তিনগুণ, বীজের উৎপাদন পাঁচগুণ। আগামিদিনে আরও জোর দেওয়া হবে এই সব দেশী ধানের বীজ উৎপাদনে।
একসময় সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকেদের প্রয়োজন, বিভিন্ন ধার্মিক, সামাজিক ক্রিয়াকর্ম এবং স্থানীয় মাটি ও জলবায়ুর কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছিল এই প্রজাতিগুলি।
আরও পড়ুনঃ কোন জাতের ছাগল পালনে লাভ বেশি? কৃষি জাগরনের মতে তিনটি সেরা জাত
খই বানাবার জন্য অতিরিক্ত স্টার্চযুক্ত 'বিন্নি' ধান, চিঁড়ের জন্য 'কার্তিক শাল' কিংবা 'লক্ষণ শাল'। রাজা বাদশাদের পায়েস-পোলাও-এর জন্য সরু সুগন্ধি ধান, আবার মুটে মজুরদের জন্য মোটা চাল যা খেলে অনেকক্ষণ খিদে পাবে না। দেবতার নৈবেদ্যর জন্য এমন ধান যার চাল বিনা সেদ্ধ করেই খাওয়া যায়, আবার সাধু সন্ন্যাসী যাঁরা দিনান্তে একবার অন্নগ্রহণ করেন তাঁদের জন্য এমন ধান যার চালে কিছু মাত্রায় প্রোটিন আছে-ফলে বেশি পুষ্টিকারক।
কেন হারিয়ে গেল বিভিন্ন প্রজাতির ধানের চাষ
বিশেষজ্ঞদের মতে স্বাধীনতার আগে পর্যন্ত আমাদের দেশে প্রায় ৪০,০০০ রকমের বিভিন্ন প্রজাতির ধানের চাষ হত।সাধারণ চাষীরা হাজার বছরের অনলস পরিশ্রমে তৈরি করেছিল এই বিশাল বৈচিত্র্যময় এই বীজের ভাণ্ডার। তবে আজ এই বিশাল ভাণ্ডারের অনেকটাই অবলুপ্ত।কারন হিসাবে বলা হয় 'সবুজ বিপ্লবে'র সময়ে কৃষি বিজ্ঞানীদের দ্বারা উদ্ভাবিত IR8, IRRI প্রভৃতি উচ্চ ফলনশীল ধান বীজের প্রচার ও প্রসারের ফলে চাষীরা দেশী ধানের চাষ ছেড়ে দিয়েছেন।এর ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে বিভিন্ন ধানের বীজ।
আরও পড়ুনঃ কৃষকদের জন্য় স্মার্ট চাষ পদ্ধতি শিখে নিলেই আয় হবে দ্বিগুন
তবে হারিয়ে যেতে বসা ধানগুলিকে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে উঠেছে কৃষি দফতর। জানা গিয়েছে, ম্যানিলায় আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা কেন্দ্রে বিভিন্ন দেশের ধানের বীজ সংরক্ষিত রয়েছে। সেখানেও ওই সব ধানের বীজের সন্ধান করা হচ্ছে। চুঁচুড়া ধান্য গবেষণাকেন্দ্রে সাড়ে তিন হাজার ধানের বীজের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।