কোনো রকম বড় অংকের বিনিয়োগ ছাড়াই রেশম চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন লালমনিরহাট সদরের প্রান্তিক চাষিরা। তেলিপাড়ার প্রায় ১৩০ টি পরিবার রেশম চাষ শুরু করেছে। তবে ওই গ্রামের আমির হোসেন (৬৫) দেড় যুগ আগে সর্ব প্রথম রেশম চাষ শুরু করেন। একপ্রকার তার হাত ধরেই এই গ্রামের কৃষকরা এখন লাখ লাখ টাকা রোজগার করছেন।
একটি ঘরের পাঁচ ফুট স্কোয়ার ডালায় রেশমের ডিম রাখতে হয়। সেখানে তুঁতের পাতা দিলেই পলুগুলো খেয়ে খেয়ে ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে রেশম গুটি হয়। এ গুটি বছরে চারবার উৎপাদন করা যায় । প্রতি ১০০ পলু পালন করে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। বছরে কোনো খরচ ছাড়াই দেড় লাখ টাকা আয় করা সম্ভব ।
আরও পড়ুনঃ রহস্যময়ী লজ্জাবতী গাছের অবাক করা এই গুনগুলি জানেন?
বাংলাদেশের এক সংবাদপত্রকে আমির হোসেন জানিয়েছেন , ২০০৭ সালে নিজ উদ্যোগে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে পলু পালন শুরু করেন তিনি। তারপর কয়েক বছর কেটে যায়। বছরে চারবার পলু থেকে রেশম গুটি উৎপাদিত হয়। প্রতিবার ১০০ পলু পালনে ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়। পলুর খাদ্য শুধু তুঁত পাতা।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বিঘা তুঁত গাছ চাষের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়। কোনো চাষি সড়কে তুঁত গাছ চাষ করলে গাছপ্রতি আট টাকা পান প্রতি বছরে। এ চারাগুলোকে ‘লোকাট’ চারা বলা হয়।
স্থানীয় সুত্রের খবর, আমির হোসেন এ গ্রামে প্রথম পলু পালন বা রেশম চাষ শুরু করেন। তার দেখে এখন ১৩০টি পরিবার পলু পালন করছে। তারা সবাই এখন ভালোভাবে জীবনযাপন করছেন।
আরও পড়ুনঃ বীজহীন তরমুজ চাষে এক কৃষকের পরীক্ষা
সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য় অনুযায়ী, পাঁচ থেকে সাত শতক জমিতে ২০০ তুঁতের গাছ লাগানো যায়। এর জন্য পলুচাষি প্রথম বছর তিন হাজার ৫০০ টাকা, দ্বিতীয় বছর এক হাজার ২৫০ টাকা এবং তৃতীয় বছর এক হাজার ২৫০ টাকা পেয়ে থাকেন। এর মধ্যে যেসব চাষি সরকারি বিভিন্ন সড়কে তুঁতের গাছ লাগান, তারা প্রথম বছর প্রতি গাছের জন্য আট টাকা, দ্বিতীয় বছর চার টাকা এবং তৃতীয় বছর চার টাকা গাছ দেখে রাখার জন্য পাবেন। আর প্রতি চাষি এক লাখ ২৫ হাজার টাকা সহায়তা পাবেন। চাষিদের উৎপাদিত রেশমগুটি রেশম বোর্ড কিনে নেয়। এছাড়া বাইরের ক্রেতারাও কিনছেন। এতে নতুন করে আশা জাগছে ওইসব অঞ্চলে। স্বাবলম্বী হচ্ছেন শত শত প্রান্তিক মানুষ।