পাউডার রোগ (Powdery mildew)
প্রথমে গাছের গোড়ার দিকে পাতার ওপর সাদা পাউডারের ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায় এবং পাতার সবুজ অংশ ফ্যাকাসে হয়ে যায়। সাদা পাউডার আবৃত দাগগুলি আয়তনে বাড়ে এবং পাতায় নিচের দিকেও সাদা পাউডার দেখা যায়। প্রকট আক্রমনে পাতার দু পাশ সাদা পাউডারে সম্পূর্ণ ঢেকে যায়। তারপর পাতা হলুদ হয়ে অকালে ঝরে পড়ে। গাছের সালোকসংশ্লেষ ব্যাহত হয় এবং বৃদ্ধিও কমে যায়। আক্রান্ত গাছ তাড়াতাড়ি পেকে যায় এবং ফলন কম হয়। ঘন করে লাগানো গাছে আদ্র ও ছায়াযুক্ত স্থানে সহজে এ রোগ ধরে।
প্রতিকারঃ
(১) প্রতিরোধী জাতের চাষ।
(২) ক্ষেতে গাছের দূরত্ব যথাযথ রাখা দরকার।
(৩) আক্রান্ত গাছে ১৫ দিন অন্তর দু বার থায়োফেনেট মিথাইল (১ গ্রাম/ লি. জলে) বা কার্বেন্ডাজিম (১ গ্রাম/ লি. জলে) গুলে স্প্রে করা হয়।
আরও পড়ুনঃ সরিষার প্রধান কয়েকটি রোগ ও তার প্রতিকার
কাণ্ড পচা (Stem rot)
মাটির ওপরে সকল অংশে রোগটির আক্রমণ ঘটতে পারে। মূলত কাণ্ডের ওপর প্রথমে জলে ভেজা হালকা বাদামী পচন দাগ দেখা যায়। পরে ঐ দাগের ওপর সাদা ছত্রাকের বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়। পচা দাগের চারপাশে কালো বর্ণের ছত্রাকের রেনু আবির্ভূত হয়। আক্রান্ত গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। গাছে শুঁটি কম ধরে। শুঁটির ভেতরে বীজ ছোট ও কুঞ্চিত হয়। রোগটি মাটি বাহিত। ঠাণ্ডা ও শুকনো আবহাওয়ায় রোগটি বেশি হয়।
প্রতিকারঃ
(১) ২ কেজি ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি ৫০ কেজি জৈব সারের সঙ্গে মিশিয়ে ছায়ায় এক সপ্তাহ জড়ো রেখে বীজ বোনার সময় এক একর জমির মাটিতে মেশানো হয়।
(২) আক্রান্ত গাছে বেনোমিল (০.৫গ্রাম/ লি. জলে) স্প্রে করা যায়।
(৩) শস্য পর্যায় মেনে চলা ফসলের অবশিষ্টাংশ নষ্ট করে ফেলা দরকার।
আরও পড়ুনঃ ফসলে সেচের নিয়ম এবং পদ্ধতি
৭. ফাইলোডি (Phyllody)
আক্রান্ত গাছে নানা প্রকার বিকৃতি লক্ষ্য করা যায়। গাছের পাতা শাখা ছাড়ে, গাছকে ঝোপের মতো দেখায়। পুস্পমঞ্জরীতে পাতার মতো বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়। গাছের ফল ধরে না বললেই চলে।
প্রতিকারঃ
(১) আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলে নষ্ট করা উচিত।
(২) পরজীবী আগাছার বীজ ধরার আগে তুলে ফেলা দরকার।
(৩) ক্রমাগত সর্ষে চাষ না করে তণ্ডুল ও ডাল জাতীয় ফসলের সঙ্গে শস্য পর্যায় মেনে চলা উচিত।