আজ আমরা অরুণাচল প্রদেশের একটি গ্রামের কথা বলতে যাচ্ছি , যেটি একসময় সমগ্র রাজ্যে আফিম চাষের জন্য কুখ্যাত ছিল। সরকারের নিষেধাজ্ঞার পরও এখানকার কৃষকরা অবৈধভাবে আফিম চাষ করত। এমতাবস্থায় এখানে প্রতিদিনই পুলিশের অভিযান চলত। কিন্তু এখন এই গ্রামের মানুষ আফিম ছেড়ে এমন ফসল চাষ শুরু করেছে, যা নিয়ে গোটা রাজ্যে আলোচনা হচ্ছে। সেই সাথে আশেপাশের কৃষকরা এখন কৃষিকাজ শিখতে এই গ্রামে আসছেন। বিশেষ ব্যাপার হল এখানকার মানুষ এই চাষ থেকে লাখ লাখ টাকা আয় করছে। সেই সঙ্গে মানুষের মান-সম্মানও বেড়েছে।
আসলে, আমরা অরুণাচল প্রদেশের লোহিত জেলায় অবস্থিত মেদো গ্রামের কথা বলছি। এই গ্রামটি ইটানগর থেকে 350 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই গ্রাম এক সময় আফিম চাষের জন্য কুখ্যাত ছিল। কিন্তু এখানকার মানুষ এখন কুমড়ার মতো ফসলের চাষ শুরু করেছে। এর পাশাপাশি এখানকার চাষীরা আদা, সরিষা ও চা ফসলও আবাদ করছেন। তবে এসবের মধ্যে বিশেষ ব্যাপার হলো দেশ বিদেশের মানুষ এখানে এসে সবজি কেনাকাটা করছে। এই কারণেই এখন মেদো গ্রাম উদ্যান ও সবজি চাষের জন্য গোটা রাজ্যে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে।
একই সঙ্গে কৃষি উন্নয়ন কর্মকর্তা বলছেন, এ গ্রামে এখন আফিমের পরিবর্তে কুমড়ার চাষ হচ্ছে। উন্নয়ন কর্মকর্তা জানান, এই গ্রামে ওয়াক্রো নামে একটি এলাকা রয়েছে। ওয়াক্রোতে, 500 টিরও বেশি কৃষক 1000 হেক্টরের বেশি জমিতে কুমড়া চাষ করেছেন। একইসঙ্গে চাষিরা বলছেন, প্রথমে কুমড়া বিক্রি হতো তিন টাকা কেজিতে। কিন্তু এখন বিক্রেতারা নিজেরাই গ্রামে এসে সাত টাকা কেজি কিনছেন।
জানিয়ে রাখি, অরুণাচল প্রদেশে দীর্ঘদিন ধরেই বেআইনিভাবে আফিম চাষে লাগাম টানতে চাইছিল সরকার। কিন্তু 2021 সালে, এখানকার কৃষকরা সরকার কর্তৃক চালু করা 'স্বনির্ভর কৃষি প্রকল্প'-এর সুবিধা গ্রহণ করে এবং আফিমের পরিবর্তে কুমড়া চাষ শুরু করে। রিপোর্ট অনুযায়ী, অনেক সামাজিক সংগঠন সরকারকে আফিমের অবৈধ চাষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করেছিল। জেলার অনেক কৃষক এখনো গোপনে অবৈধভাবে আফিম চাষ করলেও অধিকাংশ মানুষ ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন।