এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 29 January, 2024 10:51 AM IST

কৃষিজাগরন ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গে তৈলবীজ উৎপাদনকারী শস্যগুলির মধ্যে সরিষা অন্যতম। অন্নান্য ফসলের মতো সরিষের প্রধান কয়েকটি রোগ দেখা যায়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পাতা ধ্বসা, শিকড় ফোলা, সাদা মরচে, ডাউনি মিলডিউ, পাউডার রোগ, কাণ্ড পচা  প্রভৃতি। এরমধ্যে প্রধান রোগ হলো ধ্বসা রোগ। যার ফলে সরষের ফলন ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। সময়মতো জমি পরিদর্শন করে আগাম প্রতিকার ব্যবস্থা নিলে অধিকাংশ রোগ দমন করা সম্ভব। নিচে বিভিন্ন প্রকার রোগ, তার লক্ষণ ও তার প্রতিকার ব্যবস্থা সম্বন্ধে আলোচনা করা হল।

পাতা ধ্বসা রোগ : প্রথমে পাতার ওপর গোলাকার বাদামী মৃত দাগ দেখা যায়। ঐ দাগ ঘিরে থাকে হলুদ আভা। দাগগুলির আকৃতি বাড়ে এবং কতকগুলি কালো বা বাদামী বর্ণের সমকেন্দ্রিক বৃত্তে পরিণত হয়। কাণ্ড ও শুঁটিতে একই দাগ দেখা যায়। প্রকট আক্রমণে শুঁটি কালো হয়ে যায় এবং পচন ধরে। বীজ গুলি কুঞ্চিত ও ছোট হয়। ২০-৫০ শতাংশ ফলন কমে যেতে পারে। সাধারণত ব্রাসিকি ছত্রাক ধূসর বর্ণের এবং ব্রাসিকলা ছত্রাক কালচে বর্ণের দাগ তৈরি করে। বিনয় ও ঝুমকা জাতের পাতা ধ্বসা বেশি দেখা যায়। রোগটি বীজবাহিত। মেঘলা ও আর্দ্র  আবহাওয়ায় রোগ বাড়ে।

আরও পড়ুনঃ কমানো হল আমেরিকান আপেলের আমদানি শুল্ক, ক্ষুব্ধ কাশ্মীরি কৃষকরা

সরিষার পাতা ধ্বসা রোগ

প্রতিকার

(১) প্রতিরোধী জাত এবং নীরোগ বীজ লাগানো উচিত।

(২) প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি মিশিয়ে বীজ শোধন করা হয়।

(৩) ২ কেজি ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি ৫০ কেজি জৈব সারের সঙ্গে মিশিয়ে ছায়ায় এক সপ্তাহ জড়ো রেখে বীজ বোনার সময় এক একর জমির মাটিতে মেশানো হয়।

(৪) সময় মতো বীজ বোনা, সুষম সার ব্যবহার ও ফসলের অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে ফেলা কার্যকরী।

(৫) আক্রমণ বেশি হলে প্রতি লিটার জলে ৪ গ্রাম কপার অক্সিক্লোরাইড বা ২.৫ গ্রাম ম্যানকোজেব বা ২ গ্রাম মেটাল্যাক্সিল বা ৩ গ্রাম আইপ্রডায়োন গুলে স্প্রে করা হয়।

শিকড় ফোলা রোগ : রোগটি মূলত অম্ল মাটিতে (পি. এইচ ৫.৭-৬.২) হলুদ সর্ষেতে দেখা যায়। বীজ বোনার এক মাস পরে রোগের লক্ষণ প্রথম প্রকাশ পায়। গাছের বৃদ্ধি থেমে যায়। গাছে ফুল আসতে চায় না। যদিও বা দেরিতে ফুল আসে, শুঁটির সংখ্যা, আকৃতি ও শুঁটির ভিতরে দানার সংখ্যা ও আকৃতি হ্রাস পায়।

আরও পড়ুনঃ সাধারণ আলুর পরিবর্তে গোলাপি আলু চাষ করুন, উপকার পাবেন

ফুল আসার সময় গাছ দিনে ঝিমিয়ে পরে এবং রাতে স্বাভাবিক হয়ে যায়। আক্রান্ত গাছের শিকড় বিভিন্ন আকৃতির ফোলা অংশে পরিণত হয়। ছত্রাকটি মাটিতে ২-৫ বছর বেঁচে থাকতে পারে। যে কোন সময়ে সর্ষে গাছকে আক্রমণ করতে পারে।

প্রতিকার

(১) প্রতিরোধী হিসাবে কল্যাণ (ডবলু বি বি এন- ১) চাষ করা যায়।

(২) বীজ বোনার এক মাস আগে একর প্রতি ১০ কুইন্টাল চুন মিশিয়ে সেচ দিয়ে মাটির অম্ল কমানো যায়।

(৩) ২ কেজি ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি ৫০ কেজি জৈব সারের সঙ্গে মিশিয়ে ছায়ায় এক সপ্তাহ জড়ো রেখে বীজ বোনার সময় এক একর জমির মাটিতে মেশানো হয়। এছাড়া একর প্রতি ৬ কুইন্টাল নিম ও মহুয়া খোলের মিশ্রণ (১:১) জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করা যায়।

(৪) রসুন ও লবঙ্গ বাঁটা ৫০ গ্রাম প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে বীজ শোধন করা যায়।

(৫) আক্রান্ত ক্ষেতে সেচ বন্ধ করে দিতে হবে এবং আক্রান্ত ক্ষেত থেকে নিকাশি জল অন্য ক্ষেতে যাওয়া বন্ধ করতে হবে।

সরিষার শিকড় ফোলা রোগ

সন্দীপন গরাই - সহায়ক মুখ্য প্রযুক্তি আধিকারিক, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র বর্ধমান

সেখ মহম্মদ আজিজুর রহমান - বরিষ্ঠ বৈজ্ঞানিক এবং প্রধান, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র বর্ধমান

শুভাশিষ প্রামানিক - কৃষি আবহাওয়া পরিদর্শক, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র বর্ধমান

সুব্রত সতপথী - প্রধান বৈজ্ঞানিক এবং হেড কোয়ার্টার ইন চার্জ অফ কে ভি কে, ক্রিজাফ, ব্যারাকপুর

গৌরাঙ্গ কর - নির্দেশক, ক্রিজাফ, ব্যারাকপুর

English Summary: Two deadly diseases of mustard and their remedies
Published on: 15 September 2023, 05:30 IST