উৎপল রায়, জলপাইগুড়ি, কৃষিজাগরণ: হঠাৎ করেই সিম গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। যার জেরে সবজির ফলন কম হচ্ছে। এতেই সমস্যায় পড়েছেন ময়নাগুড়ি ব্লকের চাষীরা। সিম গাছের পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি যেমন বিন, লাফা, বরবটি জাতীয় সবজির মধ্যেও এই রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। জানা গেছে, এটি একটি ভাইরাস ঘটিত রোগ। পাতা হলুদ হওয়া এই রোগের নাম ইয়োলো মোজাইক ভাইরাস। ভাইরাসের সংক্রমন হয়। যা পোকা জাতীয় কিছুর সাহায্যে সংক্রমিত হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে বীজের সমস্যার কারণেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যায়। যার কোনো রকম ওষুধ নেই বাজারে। তবে উড়ন্ত পোকার হাত থেকে সবজিকে রক্ষা করার বার্তা দিয়েছেন উদ্যান প্রতিপালন দফতর ।
উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলা মূলত কৃষি প্রধান এলাকা। শীত কালে ময়নাগুড়ি ব্লকে বিভিন্ন ধরনের সবজি ওঠে। তবে এবছরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাষীরা। সিম চাষ করে বরাবর লাভের মুখ দেখেন ময়নাগুড়ির চাষীরা। এবছর ফলনের মূল সময়ে ভাইরাসের হানায় ক্ষতিগ্রস্থ চাষীরা। হঠাৎ সিম গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায়। অনেকটা পাতা গুলি পুড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা লক্ষ্য করা যায়। যার জেরে ফলনেও বেশ কিছু পচন লক্ষ্য করা যায়। এতে ফলন কম হওয়ায় ক্ষতির মুখে সিম চাষীরা। কৃষি নির্ভর পরিবার গুলি এই রোগে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। চাষীদের অভিযোগ, বিক্রির জন্য সিম ছিঁড়ে আনলে তার মধ্যে ৪০ শতাংশ সিমে পচন দেখা যায়। এই ভাইরাসের প্রকোপ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য বিভিন্ন সারের দোকান এবং কৃষি আধিকারিকদের জানানো হলেও কোনো সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ। ময়নাগুড়ি ব্লকের টেকাটুলি এলাকার সিম চাষী অনিল রায় বলেন, "এই ভাইরাসের কোনো ওষুধ পাওয়া যায়নি। আমি কৃষি দফতরের সাথেও যোগাযোগ করেছি কিন্তু কোনো সুরাহা করতে পারেনি।"
তবে এই রোগের হাত থেকে ফলন রক্ষা করতে উড়ন্ত বিভিন্ন পোকা তাড়ানোর ওষুধ ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন আধিকারিকরা। এছাড়া অন্য কোনো বিকল্প পথ নেই বলেই জানিয়েছেন উদ্যান প্রতিপালন দফতরের আধিকারিকরা। এই বিষয়ে উদ্যান প্রতিপালন দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর ডঃ অলোক কুমার মন্ডল বলেন,"এটি একটি ভাইরাস ঘটিত রোগ। এর কোনো রকম ওষুধ এখনো তৈরি হয়নি। তবে ফলন বাঁচাতে উড়ন্ত পোকা থেকে ফসলকে রক্ষা করতে হবে। পোকা তাড়ানো ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন চাষীরা।"
আরও পড়ুনঃ সুকোয়াকা: একটি ব্রড-স্পেকট্রাম ছত্রাকনাশক এবং এটি ব্যবহার করার পদ্ধতি