শসার বিজ্ঞানসম্মত নাম -Cucumis sativus. ডায়াবেটিস রােগী নিয়মিত ভাবে শসা খেলে করলে ব্লাড সুগার কমে যায়। শসা আবার পুজোয় ব্যবহার করা হয়।কাঁচা শসা লবন মিশিয়ে খাওয়া হয় বা স্যালাড করে খাওয়া হয়। পরিণত শসা রান্না করে খাওয়া হয়। বীজের তেল মস্তিস্ক ও দেহের জন্য উপকারী। সেজন্য শসার চাহিদা বাজারে সবসময়ই রয়েছে। তাই শসা চাষ চাষীভাইদের কাছে সবথেকে লাভজনক চাষ। তবে শসা চাষের পদ্ধতি অবশ্যই ভালোকরে জানতে হবে। চাষের পদ্ধতি বিস্তারিত নীচে আলোচনা করলাম, জেনেনিন কীভাবে করবেন ?
মাটি তৈরীর পদ্ধতি
জলনিকাশের ব্যবস্থাসহ বেলে দোঁয়াশ, এঁটেল দোঁয়াশ ও পলিমাটিতে এর চাষ ভাল হয়। ৩-৪ বার লাঙ্গল চালিয়ে এবং মই দিয়ে মাটি তৈরী করতে হবে।
বীজ বপনের পদ্ধতি
মাটিটা কাদার মতাে তৈরী করে নিয়ে বা লাইন করে সমান ব্যবধানে ২-৩ টি বীজ বসাতে হয়। সারি থেকে সারি দেড় থেকে দুই মিটার এবং গাছের দূরত্ব হয়ে ৬০ থেকে ৯০ সেমি।
আরও পড়ুনঃ বৈশাখ মাসে পাট চাষে কৃষকদের কি কি করণীয়
শসার বীজ বপনের সময়
(১) গ্রীষ্মকালীন - জ্যৈষ্ঠ - মে-জুন (২) বর্ষাকালীন আসার (জুন - জুলাই) মাস। এবং (৩)শীতকালীন অগ্রহায়ণ - পৌষ (নভেম্বর - জানুয়ারী) উঁচু অঞ্চল হলে এপ্রিল মাস।
সার প্রয়ােগ পদ্ধতি
প্রতি একর জমির জন্য ২০ গাড়ি গােবর সার বা আবর্জনা সার এবং ২৫ কেজি, ইউরিয়া, ৩০ কেজি, সিঙ্গল সুপার ফসফেট ও ৩০ কেজি, মিউরেট অব পটাশ দরকার জমিতে শেষ চাষ করার সময়। এছাড়া চারার ৩ সপ্তাহ ও ৬ সপ্তাহ বয়সে দুবার প্রতিবারে ১০ কেজি ইউরিয়া চাপান দিতে হবে।
শসা চাষে রোগ-পোকা নিয়ন্ত্রনের পদ্ধতি
কচি ফলের ওপর ছিদ্র করে ডিম পাড়ে এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। বাচ্চা পােকা ফলের নরম অংশ খেতে শুরু করে। এর ফলে ফল বেঁকে যায়। ২ লিটার জলে ৫০০ গ্রাম গুড়, ২০ গ্রাম কার্বারিল ও ২০ গ্রাম ইস্ট গােলা হয়। ঐ জল অল্প অল্প করে অনেকগুলি পাত্রে নিয়ে ক্ষেতে বসালে মাছি এই পাত্রের মিশ্রণে আকৃষ্ট হয় এবং মারা যায়। এছাড়া প্রতি লিটার জলে ০.৭৫ মিলি নুভান গুলে স্প্রে করা যায়।
নালী পােকা বা লিফ মাইনর
পাতার দু’ ত্বকের মাঝে সুড়ঙ্গ সৃষ্টি করে। সুড়ঙ্গের মধ্য থেকে সবুজ অংশ খেতে খেতে এগােয়। ওপর থেকে দেখলে পাতায় আঁকা বাঁকা দাগ লক্ষ্য করা যায়। পাতা ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। প্রথমদিকে প্রতি লিটার জলে ৫ গ্রাম নিমবীজ গুঁড়াে বা ৩ মিলি অ্যাজাডাইরেক্টিন (২ শতাংশ ইসি) গুলে স্প্রে করলে কাজ পাওয়া যায়। পরে প্রতি লিটার জলে ২ মিলি রােগার বা ০.৭৫ গ্রাম অ্যাসাটাফ গুলে স্প্রে করা হয়।
আরও পড়ুনঃ ফুলকপি বা ব্রোকলি নয়,চাষ করুন ব্রাসেলস স্প্রাউটের,আয় হবে দ্বিগুন
গাছের গােড়ার পাতার কিনারা থেকে বাদামী রঙ ধরে। তারপর শুকোতে শুরু করে। ধীরে ধীরে ওপরের দিকের পাতাতে সংক্রামিত হয়। প্রতি লিটার জলে ১ গ্রাম ব্যাভিস্টিন বা ০.৫ গ্রাম ইন্ডেক্স বা ০.৭৫ মিলি টিল্ট গুলে স্প্রে করা হয়।
সাদা পাউডার রোগ
পাতায় ধূসর দাগ হয়। ঐ দাগের ওপর সাদা পাউডার জমে। আঙুল ছোঁয়ালে পাউডার লেগে যায়। পরে পাতা শুকিয়ে যায়। প্রতি লিটার জলে ০.৭৫ মিলি টিল্ট বা ১ গ্রাম ব্যাভিস্টিন বা ০.৫ মিলি ক্যালিক্সিন গুলে স্প্রে করা হয়।