খোলা ধসা রোগ
পাশকাঠি ছাড়ার সময় সংক্রমন বেশী হয়। প্রধানত মাটি বাহিত রোগ। ক্ষেতের জমা জল থেকেও গৌণ ভাবে রোগ ছড়াতে পারে। এই রোগের জন্য দায়ী রাইজোকটোনিয়া সোলানি (Rhizoctonia solani) নামক ছত্রাক।
সনাক্তকরণ
জলের ঠিক ওপর পাতার খোলার অনির্দিষ্ট আকৃতির মাকুর মতো লম্বাটে ধূসর সাদা দাগ (০.৫ থেকে ১.৫ সেমি লম্বা, ০.৩ থেকে ০.৫ সেমি চওড়া) হয়। খোলার সঙ্গে যুক্ত পাতা হলুদ হয়ে শুকিয়ে যায়। ঘন রোয়া করলেও জমিতে বেশী নাইট্রোজেন দিলে এই রোগের প্রকোপ বাড়ে। গরম আদ্র আবহাওয়াতে রোগের প্রকোপ বাড়ে।
আরও পড়ুনঃ ধানের ঝলসা রোগ ও তার প্রতিকার
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাঃ
-
প্রতিরোধী জাত যেমন- সবিতা, স্বর্ণ, পঙ্কজ, শালিবাহন, যোগেন, অমূল্য, মন্দিরা, পূর্ণেন্দু ইত্যাদি চাষ করতে হবে।
-
কমপক্ষে ১০ শতাংশ পাশ কাঠি আক্রান্ত হলে প্রতিকার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। নিচের একটি ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে-
-
প্রপিকোনাজোল ২৫% ই. সি. (টিল্ট)- ০.৭৫ মিলি
-
ভ্যালিডামাইসিন ৩% এল (শীথমার, রাইজোসিন)- ২.০ মিলি
-
ট্রাইসাইক্লোজল ৭৫% ডব্লিউ. পি (বিম, টুপার)- ০.৫ গ্রাম
-
হেক্সাকোনাজোল ৫% ই. সি. (কনটাফ)- ২ মিলি
-
হেক্সাকোনাজোল ৫% ই. সি. (কনটাফ)- ২ মিলি
লক্ষ্মীর গু বা ভুষা রোগ
শীষ আসার সময় সংক্রমন হয়। এই রোগটি উস্টিলাগিনয়ডি ভাইরেন্স (Ustilaginoidea virens) নামক ছত্রাকের আক্রমনের ফলে হয়।
আরও পড়ুনঃ ধানের অন্যতম ক্ষতিকর বাদামীদাগ রোগ ও তার প্রতিকার
সনাক্তকরণ
ছত্রাকের আক্রমনে ধানের দানা হলুদ্ম রঙের হয়ে যায়। ছত্রাকে ঢাকা বড়ো আকারের দানাটি কালচে সবুজ বর্ণে পরিনত হয়। দানা ছত্রাকে পরিপূর্ণ হয়ে ফেটে যায়। বাতাসের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা
-
রাসায়নিক ওষুধ প্রয়োগে এই রোগ নিরাময় করা যায় না। ফুল আসার সময় ম্যানকোজেব ৭৫% ডব্লিউ. পি (ডাইথেন-এম ৪৫)- ২.৫ গ্রাম প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করলে রোগের প্রকোপ কমে।
-
পরের বছর, প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে ১ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম ৫০% ডব্লিউ. পি (ডাইথেন-এম ৪৫) মিশিয়ে বীজকে শোধন করে বপন করতে হবে।