কৃষিতেও ধীরে ধীরে আত্মনির্ভর হয়ে উঠছে বাংলা। ধান থেকে আলু উৎপাদনে বাংলা আর পিছিয়ে নেই। একটা সময় ছিল বাংলার আলু চাষিরা আলু বীজের জন্য পাঞ্জাবের ওপর নির্ভরশীল ছিল। রাজ্যে বেশীরভাগ আলু বীজ আসত পাঞ্জাব থেকে। আবার তা নিয়ে শুরু হয়ে যেত কালোবাজারি। বীজের কালোবাজারি হওয়ায় চষিদের বীজ কিনতে হতো বেশি দামে। বাংলায় আলু বীজের কালোবাজারি রুখতে ও নিজ থেকে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠতে বছর চারেক আগে রাজ্যের সরকারি কৃষিখামারে ভাইরাস-মুক্ত উন্নত মানের আলু বীজ তৈরির কাজ শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যার নাম দিয়েছিলেন 'বঙ্গশ্রী'। সেই বঙ্গশ্রী বীজই এখন চাষিদের হাতের মুঠোয়।
বঙ্গশ্রী বীজ নিয়ে জেলায় জেলায় শিবির করেছে কৃষি দফতর। এই বিষয়ে নবান্ন কর্তাদের বার্তা, আগামিদিনে আলু চাষে চাষিরা পুরোপুরি আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠবে। বাড়বে লাভের পরিমাণও। সুত্রের খবর, কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের (Sovandeb Chattopadhyay) বলেন, বাংলায় আলু বীজের চাহিদা পুরন করে দেবে বঙ্গশ্রী। তাঁর জন্য বাংলা আরও বেশি উৎপাদন বাড়াবে। আগামী দিনে পাঞ্জাব থেকে বীজ আনার প্রয়োজন পরবেনা।
কৃষি দপ্তর সূত্রে খবর, সিমলায় ভারত সরকারের যে পোটাটো রিসার্চ ইনস্টিটিউট (Central Potato Research Institute) রয়েছে, তাদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ২০১৭-য় মেদিনীপুর কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে প্রথম বঙ্গশ্রী বীজের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়। এবং পরবর্তী সময়ে কেশপুরের আনন্দপুর ফার্ম এবং নদিয়ার কৃষ্ণনগরে সরকারি গবেষণাগারে উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে হুগলি, উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতেও বিভিন্ন কৃষি সমবায়ের বঙ্গশ্রী আলু বীজ তৈরি হচ্ছে।
পাঞ্জাবের আলু বীজ ভাইরাস মুক্ত না। সেদিক থেকে বঙ্গশ্রী ভাইরাস-মুক্ত। ফলে আলুতে কিট-পতঙ্গের আক্রমণের ভয় নেই, অত্যাধিক সার প্রয়োগ করতে হবে না। ফলনও অধিক হবে। মোট ৩৭টি সংস্থা বঙ্গশ্রী বীজ বিক্রি করছে। পাঞ্জাবের বীজের সঙ্গে বঙ্গশ্রী বীজের দামের ব্যবধান অনেকটাই। যেখানে পাঞ্জাবের আলু বীজ ৫০ থেকে ৭০ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, সেখানে বঙ্গশ্রী আলু বীজ প্রতিকেজি ২২ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।