Dunki এতটাই "Dhangki" মুভি যে ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিট পরেও মনে হবে ইসস আর একটু বেশি হলে ভালো হত। এতটা স্নিগ্ধ সিনেমা বলিউডে শেষ কবে দেখা গিয়েছিল মনে নেই।
শাহরুখ খানের ক্যারিয়ারের বেস্ট যে কটা ফিল্ম আছে সেগুলি যেন এক একটা সিনে আলতো ভাবে ছুঁয়ে বেরিয়ে গেছে। ৩০ বছর পর DDLJ' র রাজ কেমন দেখতে হয়েছে তারই ঝলক Dunki ' র শাহরুখের প্রথম দৃশ্যে। তারপরই সেই রাজ-সিমরণের পঞ্জাবের মাটিতে স্নিগ্ধ প্রেম। কিন্তু ফারাক একটাই ২০২৩ এ কিং খান নিজেই সকলের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল সেই প্রেমের অপর পিঠ।
আরও পড়ুনঃ বক্স অফিসে জাওয়ানের দাপট, ৬দিনে ৬০০ কোটি ছাড়াল জাওয়ানের ব্যবসা
শুধু তাই নয় এই এক সিনেমায় শাহরুখের যেন ১০ অবতার। রয়েছে বাজিগরের সেই ঘোড়ার পিঠে চড়ে আইকনিক দৃশ্য। স্বদেশের মত দেশপ্রেম। চক দে ইন্ডিয়ার মত ইংরেজদের উচিত জবাব। ওখানে হার জিত এর ফয়সালার হাতিয়ার হকি আর এখানে ডনকি করে বিদেশ পাড়ি। Veer zaara র মত প্রেমিকার জন্য অপেক্ষা। নিজের জীবন বাজি রেখে অন্য দেশে পাড়ি। বুড়ি হয়ে যাওয়ার পরও প্রেমিকার জন্য চিরসবুজ প্রেম। মদ্যপান করে কিং খানের সেই আইকনিক ডায়লগ ডেলিভারি। গোটা সিনেমা জুড়ে ২০২৩ এও ভালোবাসার নতুন পাঠ পড়াল বাদশা।
আরও পড়ুনঃ পেরিয়ে গেল তিনটে বছর! জাস্টিস কোথায়?
সিনেমার গল্প, আস্তে আস্তে সেই গল্প তৈরি করা, তারপর সেটাকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া এটা হয়ত রাজকুমার হিরানি ছাড়া আর কেও পারত না। কমেডির মধ্যেও কাট - টু তার পরের দৃশ্যেই চোখের কোনায় জমবে জল। এতটাই প্রাণবন্ত Dunki। আবেগ, পরিবারের বাঁধন, অ্যাকশন, রোম্যান্স, প্রেমিকা-বন্ধুদের প্রতি দায়িত্ববোধ সব যেন সিনেমার প্রতিটি দৃশ্যেতে প্রতিফলিত ।
প্রেম, কমেডির প্রেক্ষাপটে ভারতের আর্থ সামাজিক অবস্থা, ভাষার প্রতি দেশের মানুষের অবহেলা তুলে ধরেছেন রাজকুমার হিরানি। গোটা সিনেমা জুড়ে হালকা ভাবে মজার ছলে ভারী ভারী আবেগ ছুঁড়ে মেরেছেন পরিচালক।
তবে এই সিনেমা শুধু শাহরুখের নয়। সকলকে সমান স্পেস দেওয়া হয়েছে। কম সময়ের জন্য হলেও থ্রি ইডিইয়টসের সেই ভাইরাসের কথা বার বার মনে করিয়ে দিয়েছেন বোমান ইরানি। শিক্ষকের চরিত্রে তার অভিনয় মাস্টার ব্লাস্টার। ঠিক তেমনই শাহরুখের পাশে নিজেদের অভিনয়ে কোনও ত্রুটি রাখেনি তাপসী, বিক্রম কোচর, অনিল গ্রোভার। আর এই সিনেমার ছোটা প্যাকেট বড়া ধামাকা ভিকি কৌশল। ছবির অন্যতম ইম্প্যাকটফুল চরিত্র সুখি। ১০ মিনিট হয়ত সময় ভিকির কিন্তু মনে রাখবে দর্শক।
ঝকঝকে দুনিয়ার আড়ালে যে কালো অন্ধকার তারই প্রতিচ্ছবি Dunki। তবে এই গল্প শুধু পঞ্জাব বা বিদেশে যারা থাকে শুধু তাঁদের জন্য বানানো হয়েছে এমন নয়। কর্মসূত্রে বা পড়াশোনার ক্ষেত্রে অনেকেই নিজের রাজ্য, মা, বাবা, পরিবারকে ছেড়ে অন্য রাজ্য বা দেশের বাসিন্দা হয়। কেও স্বভাবে আবার কেও অভাবে। কেও ভাবে বাইরের জগৎ টা অনেক চাকচিক্যে ভরা, ওই জগতে হয়ত সবাই খুব ভালো আছে কারণ সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে আসে ঝা চকচকে জীবনটাই। আদতে সেটা কতটা অন্ধকার সেই ছবি প্রকাশ করার সাহস নেই তাঁদের। আবার অনেকেই যায় অভাবে।
নিজের রাজ্যে উপযুক্ত অর্থ না পেয়ে পরিবারের সুখের জন্য একটু বেশি অর্থ উপার্জনের আশায় পাড়ি দেয় অন্য রাজ্যে বা দেশে। তারপর সে যখন ফিরে আসে নিজের মাটিতে, পরিবারের কাছে তখন যেন মনে সব বদলে গেছে। আগের মত আর কিছু নেই। রয়ে গেছে শুধু স্মৃতি। আর এই স্মৃতি নিয়েই সিনেমার শেষ ২০ মিনিট আর তার সঙ্গে সনু নিগমের কণ্ঠে 'নিকলে থে কভি হাম ঘরসে’ সেই সময়টা অনবদ্য। চাইলেও আটকে রাখা যায়নি অশ্রুধারা।