কৃষি যন্ত্রগুলি কেনার পর নিয়ম মেনে রক্ষণাবেক্ষণ করলে দীর্ঘদিন সমস্যাবিহীন ভাবে কৃষকেরা তা ব্যবহার করতে পারবেন ও সাশ্রয় ও হবে, কারণ যান্ত্রিক ক্রটি সারাতে খরচ বাড়ে। তাই কৃষি যন্ত্রের যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ উভয়ই জরুরি।
প্রথমে ট্রাক্টরের রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতি আলোচনা করা হল (Tractor Maintenance) -
ট্রাক্টরটি চালু হবার পর দেখতে হবে লুব্রিকেটিং অয়েল প্রেসার মিটার ঠিক মতো উঠছে কিনা এবৎ ডায়ানামো ঠিকমতো ব্যাটারিকে চার্জ দিলো কিনা এবং সব কিছু ঠিক থাকলে তবেই ট্রাক্টর নিয়ে মাঠে কাজে যাওয়া উচিত।
ট্রাক্টরের কাজ হয়ে গেলে ইঞ্জিন ঠান্ডা হতে দিতে হবে। এরপর ট্রাক্টরটি পরিষ্কায় করে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং কোথাও কোন লিক আছে কিনা চেক করে নিতে হবে। প্রতি ২৫০০ ঘন্টা ট্রাক্টর চালানোর পর ফুয়েল পাম্পের লুব্রিকেটিং আয়েল পরিবর্তন করতে হবে। এছাড়া ট্রাক্টর পুরানো হলে কিছু সমস্যা দেখা যায়। যেমন -
-
বেশী লুব্রিকেটিং অয়েল লাগে
-
বেশি ধোঁয়া বের হয়
-
সহজে স্টার্ট হতে চায় না।
এই সব সমস্যা দেখা দিলে সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে যাওয়া উচিৎ।
ট্রাক্টর চালু করার আগে যে বিষয়গুলি পরীক্ষা করে দেখতে হবে সেগুলি হল -
-
জ্বালানি তেল ঠিক মতো আছে কিনা,
-
রেডিয়েটরে জল ঠিকমতো আছে কিনা,
-
ইঞ্জিন অয়েল ঠিকমতো আছে কিনা ,
-
চাকার হাওয়া পরীক্ষা করে নিতে হবে,
-
ট্রান্সমিশন লিভারগুলি নিরপেক্ষ (neutral) জায়গায় আছে কিনা দেখে নিয়ে ট্রাক্টর চালু করা উচিত।
এরপর প্রতি ২৫০ ঘন্টা চালানোর পর যা যা করতে হবে, সেগুলি হল -
-
লুব্রিকেটিং অয়েল ও লুব্রিকেটিং অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন,
-
ফ্যান-বেল্ট এর টেনশন চেক,
-
এয়ার ক্লিনার নেট পরিষ্কার,
-
লিফট পাম্পের প্রি ফিল্টার পরিষ্কার ইত্যাদি।
প্রতি ৫০০ ঘন্টা চালানোর পর যা যা করতে হবে, সেগুলি হল -
-
সব কটি ক্ল্যাম্প, ক্লিপ, লক, হোস, কাল্টিভেটর চাকার সব কটি নাট বোল্ট চেক করে দেখা
-
ট্যাপাক ক্লিয়ারেন্স অ্যাডজাস্ট করে নেওয়া।
প্রতি ১০০০ ঘন্টা চালানোর পর যা যা করণীয়-
-
সেন্ধ স্টার্টার ও ডাইনামোর বিয়ারিং এর বুশগুলি চেক,
-
ফ্রন্ট হুইল গ্রিজিং,
-
ফুয়েল ট্যাঙ্ক পরিষ্কার,
-
রেডিয়েটর সার্ভিসিং।
ডিজেল চালিত পাম্প সেটের রক্ষণাবেক্ষণ (Maintenance of diesel powered pump set) –
১) প্রথমত মনে রাখতে হবে পাম্পসেট একটানা ৬-৭ ঘন্টার বেশী চালানো উচিত নয়।
২) মেশিনের প্রস্তুতকারক কোম্পানীগুলির সুপারিশকৃত পরিমাণ অনুযায়ী মোবিল অনুমোদনপ্রাপ্ত ডিলারের কাছ থেকেই কেনা তথা মেশিনে ব্যবহার করা উচিত। কমদামি মোবিল ব্যবহার করলে মেশিনের বিয়ারিং নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৩) ১২০-১৫০ ঘন্টা মেশিন চালানোর পর মোবিল পাল্টে নিতে হবে।
৪) প্রতি ৩০০ ঘন্টা অন্তর জ্বালানি তেলের ফিল্টার পরিবর্তন করা উচিৎ।
৫) মেশিনের এয়ার ক্লিনার জালটি প্রতি মাসে কেরোসিন দিয়ে পরিষ্কার করা উচিৎ।
৬) জলের পাম্পের বিয়ারিংটি প্রতি সপ্তাহে গ্রিজিং করা উচিৎ।
৭) দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে অভিজ্ঞ মেকানিক দিয়ে ‘ISI’ চিহ্নযুক্ত যন্ত্রাংশ কিনে মেরামত করাতে হবে।