ধান উৎপাদনে বেশী লাভ করতে চাইলে পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা বিভিন্ন ধান গবেষণা কেন্দ্র, যেমন- চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্র, বর্ধমান ফার্ম প্রভৃতি জায়গা থেকে এবং বাজার থেকেও কৃষকেরা বীজ নিতে পারেন, তবে তা যেন উন্নত মানের হয়।
বীজতলা তৈরির পদ্ধতি (Method of making seedbed) -
বীজতলা তৈরি করতে হলে, বীজ রোয়ার ২০-২৫ দিন আগে বীজ বপন করতে হবে। বীজতলা আগস্ট-এর প্রথমে তৈরি করতে হবে। ধানের সর্বোচ্চ ফলনের জন্য আগস্ট-এর মাঝামাঝি বা সর্বোচ্চ ২০ তারিখ পর্যন্ত ধান রোয়া করা যাবে। এরপর বীজতলা তৈরি করলে ধানের ফলন কমে যাবে।
ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যে কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরী। উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য উন্নত প্রজাতির বীজ , সার, সেচ প্রভৃতির পাশাপাশি উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতির গুরুত্ব অপরিসীম। উন্নত যন্ত্রপাতি যেমন চাষের খরচ ও সময় বাঁচায়, তেমনি উৎপাদন ও ফসলে গুরণগত মান বৃদ্ধি করে।
ধান কাটার মেশিন / রিপার (Reaper) :
এই যন্ত্রটি দিয়ে পাকা ধান, গম প্রভৃতি ফসল কাটা যায়। যন্ত্রটিতে রবারের চাকা লাগানো থাকে বলে ছোট জোতের জমিতেও স্বচ্ছন্দে চালানো যায়। ফসল কাটার পর যন্ত্রটি ফসলকে একপাশে ফেলে দেয় , ফলে সহজেই আঁটি বেধে ফসলকে তোলা যায়। দিনে ১-২ জন দক্ষ কৃষি শ্রমিকের মাধ্যমে ১০-২০ বিঘা জমির ফসল কাটা যায়। এক একর জমির ফসল কাটতে ৩৫০-৪৫০ মিলি জ্বালানি লাগে।
ড্রাম সিডার (Drum Seeder) :
স্বল্প মুল্যের এই যন্ত্রটি দিয়ে খুব সহজেই কাদানে জমিতে অঙ্কুরিত ধান বীজ বোনা যায়। যন্ত্রটি খুব হালকা, ওজন মাত্র ৬ কেজি। ২জন কৃষি শ্রমিক এই যন্ত্রের মাধ্যমে ৮ ঘন্টায় ৭.৫-১০ বিঘা জমিতে সারিতে ধানবীজ বুনতে পারে। জমির আগাছা নিয়ন্ত্রণ করলে প্রচলিত পদ্ধতির থেকে ১০-১২% বেশিফলন পাওয়া যায়। ড্রাম সিডারে বোনা ধান প্রচলিত রোয়া ধানের থেকে ১০-১৫ দিন আগে পাকে এবং সেচের জল কম লাগে।
আরও পড়ুন - Fruit Bagging Technique: ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তিতে লাভজনক আম উৎপাদন
ড. প্রশান্ত কুমার মাইতি জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদী এবং স্বল্পমেয়াদী সকল ধরণের বীজ দিয়েই কৃষকেরা চাষ করতে পারেন। যেমন – বন্দনা, পুষ্প ইত্যাদি ধানের বীজ বপন করলে তা এই মরশুমে ভালো ফলন দেবে। তবে, স্বল্পমেয়াদি ধান চাষ করলে তা ১১০ থেকে ১১৫ দিনের মধ্যে পেকে যাবে। আর বৃষ্টির এই মরশুম ধান চাষের জন্য উপযুক্ত। তাই কম সময়ে উন্নত মানের ফলনের জন্য রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন যন্ত্রের সাহায্য নিতে পারেন কৃষকেরা।