অবশেষে পশ্চিমবঙ্গে বাস্তবায়নের শিয়রে পিএম কিষাণ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকল্পটি মানতে নারাজ বলে বিভিন্ন মত উঠলেও এসবের তোয়াক্কা না করে বিগত কাল সোমবার তিনি জানান, কেন্দ্র আবেদনকারী কৃষকদের তথ্য প্রেরণ করলে, রাজ্য তা যাচাই করে রিপোর্ট দেবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে সরাসরি কৃষকদের অ্যাকাউন্টে (DBT) টাকা পাঠানোর ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিল রাজ্য। কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরকে একাধিক বার চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছিলেন, পিএম কিষাণ-এর টাকা রাজ্য সরকারের কাছে প্রেরণ করা হোক, রাজ্যই তা কৃষকদের কাছে বিতরণ করবে। কিন্তু কেন্দ্র সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ায় এ রাজ্যের কৃষকরা এতদিন বঞ্চিতই থেকে গেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে আরও বলেন, পিএম কিষাণ প্রকল্পের পোর্টালে বাংলার বহু কৃষকদের নাম নিবন্ধন করা রয়েছে অথচ সেই নামের তালিকা সম্পর্কে রাজ্য সরকার অনবগত। ফলে রাজ্য সরকার কৃষকদের বিশদ তথ্য প্রেরণে অসমর্থ।
কিন্তু রাজ্য কেন সেই তালিকা যাচাই করছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্র-এর তরফে! এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, ‘কৃষকরা আমার কাছে গর্বের বিষয়’। নিবন্ধন করা হয়েছে এমন কৃষকদের তথ্য কেন্দ্র সরকার রাজ্যকে প্রেরণ করলে রাজ্য তা বিচার করে শীঘ্র এর রিপোর্ট জানাবে।
প্রসঙ্গত, গত লোকসভা ভোটের আগে থেকেই কেন্দ্রের পিএম কিষাণ এবং রাজ্যের কৃষকবন্ধু প্রকল্প নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। এ দিনও মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, রাজ্যের প্রকল্প অনেক বেশি কার্যকর। মমতা বলেন, ‘‘পিএম কিষাণের অনেক আগেই কৃষকবন্ধু রাজ্যের কৃষকদের জন্য প্রচলন করা হয়েছে। আমরা ৭০ লক্ষ কৃষককে এই সুবিধা দিচ্ছি। পিএম কিষাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর হয়তো এ রাজ্যের অর্ধেক কৃষক সুবিধাভোগী হবেন।
কৃষকবন্ধু প্রকল্প (Benefit Of KrishakBandhu) -
রাজ্যের অনেকেই মনে করেন কেন্দ্রের পিএম কিষাণ প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষক। তবে পিএম কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পে একর পিছু ১২১৪ টাকা করে দেওয়া হয়, তাও আবার অন্তত দু'হেক্টর জমি থাকলে তবেই। কিন্তু মাত্র এক একর জমি থাকলেই কৃষকবন্ধু প্রকল্প থেকে কৃষকরা পেতে পারেন ৫০০০ টাকা। প্রকল্প অনুযায়ী প্রতিটি সুবিধাভোগীকে ২,০০,০০০ টাকার জীবন বীমা (Life Cover Insurance) প্রদান করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়কালে দুর্ঘটনাক্রমে কোন কৃষকের মৃত্যু হলে তার পরিবারকে পূর্ণ বীমার টাকা সরবরাহ করা হবে।
উল্লেখ্য, এখন অপেক্ষা শুধু তথ্য প্রেরণের। নিবন্ধনকৃত কৃষকদের নাম চলে এলেই রাজ্য তা যাচাই করে কেন্দ্রকে জানাবে আর রাজ্যে বাস্তবায়িত হবে কেন্দ্রের পি এম কিষাণ প্রকল্প।